কুড়িগ্রামের ভিজিএফের ৩৮০০ কেজি চাল জব্দ
Published: 22nd, March 2025 GMT
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কুড়িগ্রাম জেলায় ভিজিএফের চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছে। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার (২১ মার্চ) নাগেশ্বরী উপজেলার কালীগঞ্জ ইউনিয়নে পরিষদে ভিজিএফ চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। এই ইউনিয়নের ৪ হাজার ৭২৬টি পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে মোট ৪৭ দশমিক ২৬০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হচ্ছে।
শনিবার (২২ মার্চ) স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে নাগেশ্বরী সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান ইউনিয়ন পরিষদের পার্শ্ববর্তী হাফেজিয়া মাদরাসা থেকে বিতরণের জন্য আনা ৩ হাজার ৮০০ কেজি চাল জব্দ করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ট্যাগ অফিসার দায়িত্বে অবহেলার কারণে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা নিজেদের লোকজন দিয়ে চাল উত্তোলন করে নিচ্ছেন। ফলে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
কালিগঞ্জে ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহজালাল অভিযোগ করেন, “ব্যক্তির নিজ নামে স্লিপ দেওয়ার কথা থাকলেও একজনের স্লিপের চাল উত্তোলন করছেন আরেকজন।”
আরো পড়ুন:
চুয়াডাঙ্গায় ৬টি স্বর্ণের বারসহ যুবক আটক
পাপন পরিবারের ২৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ
একই ইউনিয়নের লুৎফর রহমান বলেন, “প্রদানকৃত স্লিপের ওপর সুবিধাভোগীর নাম না থাকলেও বিক্রয়কৃত স্লিপের চাল উত্তোলন করে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।”
ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন, “চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা নিজস্ব লোকজন দিয়ে চাল উত্তোলন করে নিচ্ছেন। এতে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা চাল পাচ্ছে না।”
অনিয়মের বিষয়ে ট্যাগ অফিসার নুর কুতুবুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তথ্য প্রদান করতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। এই কর্মকর্তা বলেন, “আপনাদের যা করণীয় করেন।”
এ বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলামকে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকতার তথ্য মতে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জেলায় মোট ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৪৯৯টি পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে মোট ৪ হাজার ৬৯৪ দশমিক ৯৯ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হবে।
নাগেশ্বরী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিব্বির আহমেদ বলেন, “চাল জব্দ করা হয়েছে। নিয়মিত মামলার প্রস্তুতি চলছে।”
ঢাকা/বাদশাহ/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ল ব তরণ ক
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদে নৌপথে যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সরকারের কঠোর হুঁশিয়ারি
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে আগামী সপ্তাহ থেকে ঢাকা ছাড়তে শুরু করবে লঞ্চে যাতায়াতে অভ্যস্ত দক্ষিণ বঙ্গের মানুষ। রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনাল থেকে ৪৫টি রুটে প্রতিদিন প্রায় দেড় শতাধিক লঞ্চ চলাচল করে। প্রতিবছর ঈদকে কেন্দ্র করে নামানো হয় ফিটনেস বিহীন লঞ্চ। চলতি পথে নদীর মাঝপথে নৌকা দিয়ে লঞ্চে যাত্রী ওঠানো হয়। এ কারণে ঘটে দুর্ঘটনা। ঈদে ঘরে ফেরার আনন্দ প্রিয়জন হারানোর বেদনায় পরিণত হয়।
এ বছর ঈদে যেন ফিটনেস বিহীন লঞ্চ চলতে না পারে এবং নদীর মাঝপথ থেকে যেন যাত্রী ওঠানো না হয় এ জন্য সরকার থেকে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছে, এ কাজ করলে ওই লঞ্চ মালিক ও চালককে পেতে হবে শাস্তি।
ঈদ উপলক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রস্তুতিমূলক সভায় নিরাপদ নৌচলাচল এবং যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনে সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার প্রধান ও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঈদ উপলক্ষে নদীপথে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো: নৌপথে যে কোনো দুর্ঘটনায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও উদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণের জন্য উদ্ধারকারী জলযান প্রস্তুত রাখা। লঞ্চে অগ্নি দুর্ঘটনা রোধকল্পে ঢাকা নদী বন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ নদী বন্দর এলাকায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরকে প্রস্তুত রাখা এবং প্রয়োজনে সকল স্থানে ভাসমান নৌ ফায়ার স্টেশন স্থাপন করা।
এ ছাড়াও সদরঘাটসহ অন্যান্য নদী বন্দরের টার্মিনাল, ঘাট পয়েন্ট এবং লঞ্চে জুয়া খেলা বন্ধ করা, ফিটনেস বিহীন নৌযান ও ফেরি চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা, লঞ্চের মাস্টার, চালক ও কর্মচারীসহ সকল ঘাটের ইজারদের নেম ট্যাগসহ নির্ধারিত পোষাক পরা, লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন করা যাবে না, লঞ্চের ছাদে যাত্রী ওঠানো যাবে না। ছাদে যাত্রী ওঠানোর কাজে ব্যবহৃত সিঁড়ি অপসারণের ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
যাত্রীর নিরাপত্তার স্বার্থে লঞ্চে ঈদের পরের দুই দিন পর্যন্ত ন্যূনতম চারজন আনসার দায়িত্ব পালন করবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা লঞ্চ মালিকগণ গ্রহণ করবেন। ঈদের আগে ও পরে পাঁচ দিন সদরঘাটে ডিঙ্গী নৌকা চলাচল বন্ধ থাকবে। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা সব নদী বন্দর, টার্মিনাল ও নৌযানে দৃশ্যমানভাবে টাঙ্গিয়ে প্রচারের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ প্রয়োজনে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করার সিদ্ধান্তও সভায় নেওয়া হয়।
ঈদের আগে তিন দিন থেকে পরের তিন দিন নিত্য প্রয়োজনীয় ও দ্রুত পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ব্যতীত সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ফেরিতে পারাপার বন্ধ রাখা হবে। লঞ্চের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিতকল্পে নৌপথে সকল মাছ ধরার জাল পাতা বন্ধ রাখা হবে।
আসন্ন ঈদে ফেরি ঘাটে যানজট মোকাবিলার জন্য ৭টি ফেরি ঘাট যথাক্রমে- পাটুরিয়া, আরিচা, চাঁদপুর, ভোলা, লাহারহাট, চিলমারী ও ধাওয়াপাড়া সেক্টরে সর্বমোট ৪৬টি ফেরি নিয়োজিত থাকবে। চাঁদপুর থেকে দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীদের নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য লঞ্চ মালিক সমিতির ৬টি লঞ্চ ও বিআইডব্লিউটিসির ২টি স্টীমার চাঁদপুর ঘাটে থাকবে বলেও সভায় জানানো হয়।
নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘‘আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন নৌপথের যাত্রীদের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। সদরঘাট বা অন্যান্য ঘাটে যাদের ইজারা দেওয়া হয়েছে, তারা যাত্রীদের কোনোভাবে হয়রানি করতে পারবেন না। কোনো অতিরিক্ত চার্জ আদায় করতে পারবেন না। অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’
জরিমানার পাশাপাশি ক্ষেত্র বিশেষে অভিযুক্ত লঞ্চের রুট পারমিট বাতিল করা হবে বলেও জানান তিনি।
তারা//