ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কুড়িগ্রাম জেলায় ভিজিএফের চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছে। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার (২১ মার্চ) নাগেশ্বরী উপজেলার কালীগঞ্জ ইউনিয়নে পরিষদে ভিজিএফ চাল বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। এই ইউনিয়নের ৪ হাজার ৭২৬টি পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে মোট ৪৭ দশমিক ২৬০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হচ্ছে। 

শনিবার (২২ মার্চ) স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে নাগেশ্বরী সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসান ইউনিয়ন পরিষদের পার্শ্ববর্তী হাফেজিয়া মাদরাসা থেকে বিতরণের জন্য আনা ৩ হাজার ৮০০ কেজি চাল জব্দ করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ট্যাগ অফিসার দায়িত্বে অবহেলার কারণে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা নিজেদের লোকজন দিয়ে চাল উত্তোলন করে নিচ্ছেন। ফলে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। 

কালিগঞ্জে ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহজালাল অভিযোগ করেন, “ব্যক্তির নিজ নামে স্লিপ দেওয়ার কথা থাকলেও একজনের স্লিপের চাল উত্তোলন করছেন আরেকজন।”

আরো পড়ুন:

চুয়াডাঙ্গায় ৬টি স্বর্ণের বারসহ যুবক আটক 

পাপন পরিবারের ২৭ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ

একই ইউনিয়নের লুৎফর রহমান বলেন, “প্রদানকৃত স্লিপের ওপর সুবিধাভোগীর নাম না থাকলেও বিক্রয়কৃত স্লিপের চাল উত্তোলন করে নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।”

ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন, “চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা নিজস্ব লোকজন দিয়ে চাল উত্তোলন করে নিচ্ছেন। এতে প্রকৃত সুবিধাভোগীরা চাল পাচ্ছে না।”

অনিয়মের বিষয়ে ট্যাগ অফিসার নুর কুতুবুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তথ্য প্রদান করতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি। এই কর্মকর্তা বলেন, “আপনাদের যা করণীয় করেন।” 

এ বিষয়ে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলামকে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকতার তথ্য মতে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জেলায় মোট ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৪৯৯টি পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে মোট  ৪ হাজার ৬৯৪ দশমিক ৯৯ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হবে।

নাগেশ্বরী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিব্বির আহমেদ বলেন, “চাল জব্দ করা হয়েছে। নিয়মিত মামলার প্রস্তুতি চলছে।”

ঢাকা/বাদশাহ/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ল ব তরণ ক

এছাড়াও পড়ুন:

আনন্দ শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-মীর মশাররফ-লালন, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রায় দেখা মিলেছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাংলা সাহিত্যের অমর কথা সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন, ফকির লালন সাঁই, মুঘল সম্রাট আকবর, গ্রামীণ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথসহ অন্তত ৩৮ জন বিখ্যাত মনীষীর। তবে তারা আসল নয়, ডামি। ডামি হলেও তাদের মাধ্যমে দারুণভাবে ফুটেছে বিখ্যাত ব্যক্তিদের চেহারা ও অবয়ব। তাদের দেখে মুগ্ধ নতুন প্রজন্মের দর্শনার্থীরা।

এছাড়াও শোভাযাত্রায় বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানের সচিত্র দেখা গেছে।

সোমবার সকালে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে এমন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন।

জানা গেছে, বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষ্যে সোমবার সকাল সাগে ৯টায় কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমি থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে উপজেলা প্রশাসন। আনন্দ শোভাযাত্রাটি হলবাজার, গণমোড়, থানামোড়, গোলচত্বর, উপজেলা সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্থানীয় আবুল হোসেন তরুণ অডিটোরিয়ামে চত্বরে শেষ হয়। পরে সেখানে দই চিড়া খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনু্ষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমীর ১২৫ জন সংগীত ও নৃত্যশিল্পী নেন এবং শোভাযাত্রায় কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে কুমারখালী সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রুহিনা ইসলাম প্রজ্ঞা বলেন, বৈশাখী শোভাযাত্রায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পিয়ারী সুন্দরী, কাজী মিয়াজান, মীর মশাররফ হোসেনসহ অসংখ্য মনীষীদের দেখেছি। খুব ভালো লেগেছে।

কলেজ ছাত্র শুভ মোল্লা বলেন, প্রত্যাশার চেয়েও বেশি জাঁকজমক হয়েছে আয়োজন। বন্ধুরা মিলে খুবই আনন্দ করছি।

সুবর্ণা খাতুন নামের এক শিশু জানায়, পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানে নৃত্য করেছি। দই চিড়া খেয়েছি। খুবই ভালো লাগছে।

প্রায় ১৮ ধরে বৈশাখের শোভাযাত্রায় মীর মশাররফ হোসেনের ডামি চরিত্রে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান মানু। তিনি বলেন, প্রতি বৈশাখে একই চরিত্রে থাকি। নিজের কাছে খুবই ভালো লাগে। যতদিন বাঁচি, এ চরিত্রেই থাকতে চাই।

আধুনিকতার বাইরে এসে যেন বাংলা সংস্কৃতি ধরে রাখতে পারি। সেজন্য সম্রাট আকবরের ডামি সেজেছিলাম। কথাগুলো বলছিলেন চয়ন শেখ।

পরিচয় জানতেই 'বল বীর, বল উন্নত মম শির! শির নেহারি আমারই নত শির ওই শিখর হিমাদ্রীর!' কবিতার কয়েকটি লাইন বলতে থাকেন পান্টি এলাকার মিলন হোসেন। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ডামি ছিলেন।

নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির ইতিহাস ঐহিত্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে এবং বিখ্যাত ব্যক্তিদের পরিচিত করতে রবীন্দ্রনাথ, মশাররফ, কাঙাল, বাঘা যতীনসহ ৩৮টি ডামি চরিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধা, ২৪ এর গণ অভ্যর্থান, প্যালেস্টাইনের চিত্র দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বলে জানান ডামি পরিচালক কবি ও নাট্যকার লিটন আব্বাস।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাস বলেন, আনন্দ শোভাযাত্রায় বিখ্যাত ব্যক্তি ও মনীষীদের চরিত্র দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। তা দেখে মুগ্ধ সব শ্রেণি পেশার মানুষ। ডামি ছাড়াও চিড়া দই খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনু্ষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চড়ক মেলায় মেতে উঠেছিল নাটোরের শংকরভাগ 
  • কুমারখালীতে অন্যরকম আনন্দ শোভাযাত্রা
  • নববর্ষেও বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ: দুলু
  • আনন্দ শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-মীর মশাররফ-লালন
  • আনন্দ শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-মীর মশাররফ-লালন, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা
  • হালখাতা আছে, নেই নিমন্ত্রণ
  • মারমাদের মাহা সাংগ্রাই উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা
  • ‌‘তৌহিদী জনতার’ চিঠিতে বাতিল হলো শেষের কবিতা নাটকের প্রদর্শনী
  • রাষ্ট্র ও সমাজকে পথশিশুদের প্রতি মানবিক হতে হবে
  • চন্দনাইশের ‘হাতপাখা’ গ্রামে ১০ কোটি টাকার ব্যবসা