সিদ্ধিরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা ও হত্যা চেষ্টা মামলায় পলাতক সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের পুত্র অয়ন ওসমানের পালিত সন্ত্রাসী এবং ৭ খুন মামলার ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামী নুর হোসেনের ভাতিজা সাবেক কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের অপকর্মের অন্যতম সহযোগী নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নাসিক ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার আহমেদ জিসান গ্রেপ্তার হওয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।


গত শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা ও হত্যা চেষ্টা মামলায় তাকে আদালতে প্রেরণ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ। তবে, জিসান গ্রেপ্তার হলেও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা রয়েছে ধরাছোয়ার বাইরে।

এরআগে গত বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুম বিল্লাহ সঙ্গীয় ফোর্স গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রূপঞ্জের তিনশ ফুট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত তুষার আহমেদ জিসান সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৩ নং ওয়ার্ডের সানারপাড় লন্ডন মার্কেট এলাকার বরিশাইল্লা মজিবুর রহমানের ছেলে। 

স্থাণীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা তুষার আহমেদ জিসান নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের পুত্র অয়ন ওসমান এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও নাসিক ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহজালাল বাদলের অন্যতম সহযোগী এবং পালিত সন্ত্রাসী বাহিনীর সক্রিয় সদস্য। 

অয়ন ওসমান ও কাউন্সিলর বাদলের শেল্টারে নাসিক ৩ নং ওয়ার্ড এলাকায় গত ১৭ বছরে জিসান, তার বাবা বরিশাইল্লা মজিবর, তার মা বিউটি বেগম, খালাত ভাই ইয়াছিন ও ইসলাম ওরফে হাজীসহ একটি সংঘবদ্ধ গ্রুপ সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজী, দখলবাজী, মাদক ব্যবসাসহ নানান অপরাধ মূলক কর্মকান্ড চালিয়ে বিপুল পরিমান অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে দমনে শামীম ওসমান, অয়ন ওসমান, শাহ নিজাম ও বাদলের নির্দেশে জিসানসহ এলাকার কিছু সন্ত্রাসী অগ্রনি ভুমিকা পালন করে। সে সময় আন্দোলন চলাকালে সানারপাড় এলাকায় ছাত্র-জনতাসহ কয়েকজন নিহত হয় এবং পঙ্গুত্ব বরণ করেন অনেকে।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, ২০১৮ সালের নিশিরাতের ভোট কারচুপিতে সানারপাড় কেন্দ্রে বাদল, অয়ন ওসমান ও শাহনিজামের নির্দেশনায় জিসান, তার বাবা মজিবর, তার মা বিউটি, তার খালাত ভাই ইয়াছিন জড়িত রয়েছে। তারা আওয়ামী আমলে স্থানীয় এবং জাতীয়  নির্বাচনে ভোটারদের ভয়-ভীতির মাধ্যমে জাল ভোটে সহায়তা করে।

এছাড়াও জিসানের খালাত ভাই ইয়াসিন ও ইসলাম ওরফে হাজীর সাথে জিসান মাদক ব্যবসায় জড়িত। তাদের বাড়িতেই ছিল ফেনসিডিলের স্পট। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামদ মামলা রয়েছে। 

এছাড়াও জিসান এবং তার বাবা বরিশাইল্লা মজিবর সিকোট্যাক্স গার্মেন্টসে দুধ ব্যবসা ও শ্রমিক নিয়োগে প্রতি শ্রমিক থেকে ১০০০ করে টাকা নিত। 

সোনামিয়া মার্কেট থেকে মনু মিয়া মার্কেট পর্যন্ত রাস্তায় ভ্যান গাড়ি থেকে প্রতিদিন ২০০ টাকা করে চাঁদা তুলত। ৩নং ওয়ার্ডের লিথি গার্মেন্টস, সিকোটেক্স গার্মেন্টস এবং আল আমিন গার্মেন্টসে জুট ব্যবসা ও প্রতি শ্রমিক থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিয়ে নতুন শ্রমিক নিয়োগ দিত জিসান। 

অয়ন ওসমানের নির্দেশে ডিশ-ইন্টারনেট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ সহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজী করত এই জিসান। বাদলের আরেক সহযোগী ভুমিদস্যু শাহজাহান সাজুর পালিত সন্ত্রাসী হয়েও সাধারণ মানুষের ক্ষতি সাধন করত জিসান।

এলাকাবাসী বহু অপকর্মের হোতা জিসান গ্রেপ্তার হলেও তার দোসরদের গ্রেপ্তার করতে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃংখলা বাহীনির কাছে আহ্বান জানিয়েছেন ।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হত য ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ অয়ন ওসম ন গ র ম ন টস ওসম ন র ব দল র সহয গ ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

সারা দেশে ২ হাজার নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে: আযম খান

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “আপনারা লুটপাট, চাঁদাবাজি ও অপকর্মে জড়াবেন না। জনগণ যেন বলতে না পারে বিএনপি আওয়ামী লীগের মতো একই কাজ করছে।”

তিনি বলেন, “অপকর্মের দায়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত দুই হাজার নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একবার দল থেকে ছিটকে পড়লে আর উঠে দাঁড়াতে পারবেন না।”

শনিবার (১২ এপ্রিল) টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলা বিএনপির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

কিছু উপদেষ্টার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার খায়েশ জন্মেছে: রিপন 

ছাত্রদল নেতা মিলনের পরিবারের খোঁজ নিলেন তারেক রহমান

আযম খান বলেন, “এখন আর দিনের ভোট রাতে হবে না। সবাই নিরপেক্ষভাবে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।”

সখিপুর উপজেলার রফিক কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত সভায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাজাহান সাজু সভাপতিত্ব করেন। এতে আরো বক্তব্য রাখেন- টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম মাস্টার, আমজাদ হোসেন মাস্টার, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি একব্বর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা বাছেত মাস্টার।

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দলের কেউ লুটপাট করলে ছাড় নয়: আযম খান
  • সারা দেশে ২ হাজার নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে: আযম খান