কুমেক হাসপাতালে সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
Published: 22nd, March 2025 GMT
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে চার সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। শনিবার সকালে কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে সাংবাদিক, সুশীল সমাজ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাজী এনামুল হক ফারুক, সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগর শাখার আহ্বায়ক আবু রায়হানসহ সিনিয়র সাংবাদিকরা।
তারা বলেন, কুমেক হাসপাতালে এর আগে কয়েকবার ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে। কিন্তু হাসপাতাল প্রশাসন জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। অবিলম্বে হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনাসহ হাসপাতালের পরিচালককে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।
এ বিষয়ে কুমেক হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা.
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকরা হামলার শিকার হয়ে থাকলে তারা আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেন।
শুক্রবার রাতে ভুল চিকিৎসায় পারুল বেগম (৫২) নামে এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। এ সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন চারজন সাংবাদিক। একদল ইন্টার্ন চিকিৎসক এ হামলা করেছেন বলে অভিযোগ আহত সাংবাদিকদের। আহতরা হলেন- যমুনা টিভির কুমিল্লা প্রতিনিধি রফিক ইসলাম খোকন চৌধুরী, ক্যামেরা পারসন সাকিব, চ্যানেল ২৪ এর কুমিল্লা প্রতিনিধি জাহিদুর রহমান এবং ক্যামেরা পার্সন ইরফান।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মিছিল নিয়ে এসে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান মঞ্চ ভাঙচুর
চট্টগ্রামের ডিসি হিলে পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি দল মিছিল নিয়ে গিয়ে মঞ্চ এবং আশপাশের চেয়ার–টেবিল ভাঙচুর করে। এ সময় তারা শেখ হাসিনার ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত ডিসি হিলে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেয়।
সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের ব্যানারে এখানে বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। এবার অনুষ্ঠানটি ৪৭ বছরে পা রাখতে চলেছে। ভাঙচুরের পর ডিসি হিলে এবার বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিষদ। প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে পরিষদের অভিযোগ।
ভাঙচুরের আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে ২০টি সংগঠনের একটি তালিকা দেওয়া হয় আয়োজকদের। ফ্যাসিস্টের দোসর অভিযোগ এনে ওই সংগঠনগুলোকে মঞ্চে তুলতে নিষেধ করে দেয় প্রশাসন। এর আগে সকালে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে সম্মিলিত বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন মঞ্চ নামে একটি সংগঠন মানববন্ধন করে।
‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার চিহ্নিত দোসরদের নেতৃত্বে বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠান উদ্যাপন আয়োজনের প্রতিবাদে’ এই মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মূলত জাতীয়বাদী সাংস্কৃতিক সংগঠন (জাসাস), বিএনপির সহযোগী সংগঠন মিলে এই কর্মসূচির আয়োজন করে। জেলা প্রশাসক বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে এই সংগঠনগুলোকে নববর্ষের অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
যাঁরা এসব অভিযোগ তুলেছেন, তাঁরাই সন্ধ্যায় ভাঙচুর চালিয়েছেন বলে আয়োজকদের অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শী সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের সদস্যসচিব মোহাম্মদ আলী বলেন, সন্ধ্যার দিকে ৪০ জনের মতো একটি দল মিছিল নিয়ে আসে। তারা হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। এ সময় ‘হাসিনার দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান, হাসিনার ফাঁসি চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়। একপর্যায়ে মঞ্চে উঠে ভাঙচুর শুরু করে। এই দলের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে থাকা কয়েকজনও ছিলেন। চেয়ার–টেবিল সব ভাঙচুর করে ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। শিল্পীদের জন্য তৈরি কক্ষসহ সবকিছু ভাঙচুর করে। ১৫ মিনিট পর তারা চলে যায়।
পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়। ঘটনাস্থলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল করিম বলেন, একটি মিছিল এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভাঙচুর করে চলে গেছে। বিষয়টা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
জানতে চাইলে পরিষদের সমন্বয়ক সুচরিত দাশ বলেন, ‘আমরা সোমবার আর পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান করব না। যারা বিভিন্ন সংগঠনের নামে অভিযোগ দিয়েছে, তারাই এই ভাঙচুর করেছে। এভাবে আর অনুষ্ঠান করা যায় না। প্রশাসন শুরু থেকে আমাদের অনুমতি দিতে গড়িমসি করেছে। অসহযোগিতা করেছে। এ কারণে আজকের ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাসাসের সদস্যসচিব ও নববর্ষ উদ্যাপন মঞ্চের সংগঠক মামুনুর রশিদ (শিপন) বলেন, ‘তারা হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে চায়। যারা ডিসি হিলে অনুষ্ঠান করছে, তারা দোসর। আমরা মানববন্ধন করে ডিসিকে স্মারকলিপি দিয়েছি। ভাঙচুরের বিষয়ে অবগত নই।’
জানতে চাইলে আজ রাত পৌনে ৯টার দিকে নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের থানায় নেওয়া হয়েছে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।