সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে সাবেক ছাত্রদল নেতা কবির হোসেন নিহত হওয়ার ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। এতে আসামি করা হয়েছে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মীকে।

এনায়েতপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাজু কামাল বলেন, নিহত কবিরের বড় ভাই হযরত আলী হাফিজ বাদী হয়ে শনিবার মামলাটি করেন। এতে ২৮ জনের নাম উল্লেখ ও ৮০-৯০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– এনায়েতপুর থানা বিএনপির সদ্য সাবেক সদস্যসচিব মঞ্জু শিকদার, যুগ্ম আহ্বায়ক ও সৌদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের সভাপতি মিঠু মীর, সদস্য সচিব কালাম শিকদার, থানা যুবদলের আহ্বায়ক ফারুক শিকদার, ছাত্রদলের আহ্বায়ক সোহাগ শিকদার, কৃষক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জাবেদ আলীসহ অনেকে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার সাবেক এমপি মেজর (অব.

) মঞ্জুর কাদেরের সমর্থকরা চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) ও জেলার সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সমর্থকরা এতে বাধা দেন। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে সাত নেতাকর্মী আহত হন।

গত বুধবার রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কবির হোসেনের (২৮) মৃত্যু হয়। তিনি চাঁদপুর গ্রামের ফজল হকের ছেলে এবং সৌদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে বুধবার থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির জনি সাইদুল ও একই কমিটির সাবেক সদস্য সচিব মঞ্জু শিকদারের সব পদ স্থগিত করেছেন জেলার নেতারা। ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি এখনও প্রতিবেদন দাখিল করেনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ ছ ত রদল ন ত ব এনপ ন ত কর ম ব এনপ র ছ ত রদল সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

হাবিপ্রবির ২ উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরু 

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) দুই সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম কামরুজ্জামান ও অধ্যাপক মু. আবুল কাসেমের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, ভর্তি বাণিজ্য, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে এ তদন্তটি শুরু হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্তের  বিষয়ে সংশ্লিষ্ট তথ্য চাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মু. আবুল কাসেম ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ উপাচার্য  হিসেবে হাবিপ্রবিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। অপর উপাচার্য অধ্যাপক এম কামরুজ্জামান সপ্তম উপাচার্য হিসেবে  নিয়োগ পান ২০২১ সালের ৩০ জুন। আওয়ামী শাসনামলে নিয়োগ পাওয়া এ দুই উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, ভর্তি বাণিজ্য, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে , ড. আবুল কাসেমসহ অন্যদের বিরুদ্ধে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, ভর্তি বাণিজ্য, বড় বড় নির্মাণ প্রকল্পে কাজ না করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এবং বিভিন্ন ল্যাবের মালামাল, ইলেকট্রনিকসামগ্রী ও আসবাবপত্র ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও বিভিন্ন দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া সদ্য সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম কামরুজ্জামানসহ অন্যদের বিরুদ্ধে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযোগগুলো অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুদক দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আতাউর রহমান সরকারকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দুদক দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আতাউর রহমান সরকার বলেন, “হাবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম. কামরুজ্জামান ও অধ্যাপক মু. আবুল কাসেমের বিরুদ্ধে নিয়োগে অনিয়ম, ১০ তলা ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও ল্যাবের মালামাল ক্রয়সহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে চাওয়া হয়েছে। তথ্যপ্রাপ্তি সাপেক্ষে যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর কবির বলেন, “দুদকের দুটি চিঠি হাতে পেয়েছি। এছাড়া দুদকের তদন্ত কমিটি আমাদের সঙ্গে দেখা করে দুই সাবেক উপাচার্যের বিষয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে নথি চেয়েছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা এপ্রিল মাসটা সময় চেয়েছি।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির অডিট সেলের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ রেজাউল ইসলাম সরকার বলেন, “শুধু অধ্যাপক কামরুজ্জামান ও অধ্যাপক আবুল কাসেম নন, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত স্বৈরাচার সরকারের সুবিধাভোগী ও দুর্নীতিবাজ সবার অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত সাপেক্ষে বিচার করতে হবে। সর্বশেষ রিজেন্ট বোর্ডের সভায় এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি একটি শক্তিশালী কমিটিও গঠন করা হয়েছে।”

ঢাকা/সংগ্রাম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ