যুক্তরাষ্ট্রে ৫ লাখের বেশি অভিবাসীর বৈধতা বাতিল
Published: 22nd, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলা থেকে আসা ৫ লাখ ৩০ হাজার অভিবাসীর অস্থায়ী বৈধতা বাতিল করতে যাচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে, এ অভিবাসীদের থাকার অনুমতি ও বহিষ্কার সুরক্ষা বাতিল হবে আগামী ২৪ এপ্রিল। এর আগেই তারা যেন দেশটি ছেড়ে চলে যায়, সে বিষয়ে তাদের সতর্ক করা হয়েছে। মার্কিন ফেডারেল সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
শনিবার বিবিসির খবরে বলা হয়, এই ৫ লাখ ৩০ হাজার অভিবাসীকে বাইডেন প্রশাসনের সময় চালু হওয়া সিএইচএনভি নামক একটি কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এর মাধ্যমে বৈধভাবে অভিবাসনের সুযোগ দেওয়া হতো। ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর এ কর্মসূচি স্থগিত করেন। এ অভিবাসীদের মধ্যে কতজন এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার জন্য অন্য কোনো ভিসা বা আইনি অবস্থান অর্জন করেছেন, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।
২০২২ সালে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের অধীনে শুরু হওয়া এ কর্মসূচিটি প্রথমে ছিল শুধু ভেনেজুয়েলানদের জন্য। পরে এটি অন্যান্য দেশের জন্যও চালু হয়। এ কর্মসূচির আওতায় এসব অভিবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে তাদের দুই বছরের অস্থায়ী অভিবাসন মর্যাদা বা প্যারোল দেওয়া হয়।
এটি চালুর বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনের যুক্তি ছিল, সিএইচএনভি কর্মসূচিটি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন কমাতে সহায়তা করবে। সেই সঙ্গে যারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছেন, এ প্রোগ্রামের আওতায় তাদের আরও ভালোভাবে যাচাই করা যাবে। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা বিভাগ বাইডেন প্রশাসনের সমালোচনা করেছে এবং জানিয়েছে, এ কর্মসূচি তার লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
সংস্থাটি থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাইডেন প্রশাসন তাদের (অভিবাসীদের) যুক্তরাষ্ট্রে চাকরির জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ করে দিয়েছে এবং মার্কিন শ্রমিকদের ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। প্রতারণার ঘটনা চিহ্নিত করা হলেও কর্মচারীদের জোরপূর্বক এ কর্মসূচির প্রচার করতে বাধ্য করেছে। পরে অপরাধ বৃদ্ধির দায় রিপাবলিকানদের ওপর চাপিয়েছে। তবে ফেডারেল রেজিস্টারের ৩৫ পৃষ্ঠার এক নোটিশে বলা হয়, সিএইচএনভি কর্মসূচির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে থাকা কিছু ব্যক্তিকে বিশেষ বিবেচনায় থাকার অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার ইউক্রেনের নাগরিকদের অস্থায়ী বৈধতা বাতিল করা হবে কিনা, সে বিষয়েও বিবেচনা করতে শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। ওই কর্মসূচির আওতায় হাইতি থেকে ২ লাখ ১৩ হাজার, ভেনেজুয়েলা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার ৭০০, কিউবা থেকে ১ লাখ ১০ হাজার ৯০০ এবং নিকারাগুয়া থেকে ৯৩ হাজার অভিবাসীকে ভিসা দেওয়া হয়েছিল।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কিউবাসহ চার দেশের ৫ লাখের বেশি অভিবাসীর বৈধতা বাতিল করলেন ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বলেছে, তারা কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলার ৫ লাখের বেশি অভিবাসীর বৈধতা প্রত্যাহার করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ২৪ এপ্রিল এসব অভিবাসীর যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অনুমতির মেয়াদ শেষ হবে। এর আগেই তাঁদের দেশ ছাড়তে হবে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনের মেয়াদে মানবিক কর্মসূচির আওতায় সিএইচএনভি নামের একটি কর্মসূচি চালু করা হয়েছিল। এর আওতায় কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া ও ভেনেজুয়েলার ৫ লাখ ৩০ হাজার অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকেন। বৈধ অভিবাসনের পথ খুলে দিতে কর্মসূচিটি নেওয়া হয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর কর্মসূচিটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
২৪ এপ্রিলের মধ্যে এসব অভিবাসীর কতজন যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে থাকার জন্য অন্য কর্মসূচির আওতায় আসতে পারবেন, তা অনিশ্চিত।
২০২২ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অধীনে সিএইচএনভি কর্মসূচিটি চালু করা হয়েছিল। এর আওতায় শুরুতে ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। পরে সে তালিকায় আরও কয়েকটি দেশ যুক্ত হয়।
এর আওতায় অভিবাসনপ্রত্যাশী এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ পান। তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত ছিল—অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পক্ষে মার্কিন পৃষ্ঠপোষক থাকতে হবে এবং তাঁদের প্যারোল নামক অস্থায়ী অভিবাসন মর্যাদার আওতায় দুই বছর থাকতে হবে।
বাইডেন প্রশাসন সিএইচএনভির পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছিল, কর্মসূচিটি বন্ধের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকায় অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারের ঘটনা ঠেকানো যাবে।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ আগের প্রশাসনের নেওয়া উদ্যোগটি বাতিল করেছে। তারা বলছে, কর্মসূচিটি লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালে দেশটি থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসা প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার ইউক্রেনীয় নাগরিককে অস্থায়ীভাবে দেওয়া বৈধতাও বাতিল করার কথা ভাবছেন ট্রাম্প।
সিএইচএনভি কর্মসূচির আওতায় হাইতির ২ লাখ ১৩ হাজার নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছিলেন। ট্রাম্প কর্মসূচিটি বাতিল করার আগপর্যন্ত এ কর্মসূচির আওতায় কিউবার ১ লাখ ১০ হাজার ৯০০ ও নিকারাগুয়ার ৯৩ হাজার নাগরিককেও যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দেওয়া হয়েছিল।
গত মাসে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ ঘোষণা দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ৫ লাখ হাইতির নাগরিককে অস্থায়ীভাবে দেওয়া সুরক্ষার মর্যাদা (টিপিএস) আগামী আগস্টে বাতিল করা হবে। সশস্ত্র সংঘাত বা পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে অনিরাপদ অবস্থায় থাকা দেশের নাগরিকদের টিপিএস সুবিধা দেওয়া হয়ে থাকে।