“ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসনের চেষ্টা হলে আবারো আন্দোলনের দাবানল জ্বলবে”
Published: 22nd, March 2025 GMT
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর সাংগঠনিক ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে "কল্যাণময় রাষ্ট্র বিনির্মাণে মাহে রমজানের ভূমিকা" শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২২ মার্চ) এই আয়োজন দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ফতুল্লা থানার সেক্রেটারি আলহাজ্ব মুহাম্মাদ আমান উল্লাহ। তিনি বলেন, আবার যদি ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র করা হয়, তাহলে জীবনের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে টিকিয়ে রাখতে আবারও আন্দোলনের দাবানল জ্বলে উঠবে ইনশাআল্লাহ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানার ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক হাজী মুহাম্মাদ ওয়াসি উদ্দিন। তিনি বলেন, খুন, গুম, ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ বন্ধ করতে হলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কোনো বিকল্প নেই। এ আন্দোলনই পারে সমাজে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে।
সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুতুবপুর সাংগঠনিক ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মুহাম্মাদ মাসুদুর রহমান। তিনি বলেন, যে মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে, সে মাসে কোরআনের আন্দোলনের শপথ নিতে হবে। যতদিন পর্যন্ত বাংলার জমিনে ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠিত না হবে, ততদিন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে কুতুবপুর সাংগঠনিক ইউনিয়নের দায়িত্বশীল ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, ওয়ার্ড শাখার নেতৃবৃন্দ, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও বিএনপি-সহ স্থানীয় বিভিন্ন ইসলামী ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভার শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনায় বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ঘরোয়া রান্নার স্মৃতিময় বই ‘খাদ্যবিলাস’
নাম বললেই চেনা যাবে, আনোয়ারা তরফদার এমন কোনো বিখ্যাত রন্ধনশিল্পী নন। তাঁর রান্না একান্তই ঘরোয়া, তবে তাঁর সৃজনশীলতা ভিন্নতর। সেসব রান্নার রেসিপি নিয়েই প্রকাশিত তাঁর রান্নার বই ‘খাদ্যবিলাস’–এর মোড়ক উন্মোচন হলো আজ বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে।
একসময়ের জনপ্রিয় সাময়িকী সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’য় প্রায় ৩০ বছর আগে আনোয়ারা তরফদারের রান্নার রেসিপিগুলো প্রকাশিত হয়েছিল। পরে সেই লেখাগুলো নিয়ে বইও প্রকাশিত হয়। অনেক দিন থেকেই বইটি বাজারে ছিল না। আনোয়ারা তরফদারের মেয়ে কবি শামীম আজাদ বইটি নতুন করে সম্পাদনা ও পরিবর্ধন করেছেন। প্রকাশ করেছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। তিনি বলেন, ষাটের দশকে মধ্যবিত্ত পরিবারের রান্নার বিলাস বাহুল্য ছিল না বটে, কিন্তু তার মধ্যেও বিশেষ বিশেষ দিনে প্রিয়জনদের সামনে ভালোমন্দ রান্না তুলে ধরতে চাইতেন সব গৃহিণী। সীমিত বাজেটে কীভাবে হৃদয়, বুদ্ধি, মমতা এবং ভালোবাসায় সাধারণ রান্নাকে অসাধারণ সুস্বাদু করে আপনজনের রসনা তৃপ্ত করা যায়, সে ব্যাপারটি আনোয়ারা তরফদারের ‘খাদ্যবিলাস’ বইটিতে রয়েছে।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘আমরা এখন বাণিজ্যের পৃথিবীতে বসবাস করছি। একটা সময় প্রকৃতি ও সভ্যতা জড়াজড়ি করে থাকত। এখন চলছে প্রকৃতি বিনাশী কর্মকাণ্ড। এই রান্নাগুলো কেবল খাদ্য প্রস্তুত করা নয়, এর সঙ্গে সেই সময়ের যৌথ জীবন, সংস্কৃতি, প্রকৃতি সংলগ্নতা আর মায়া–মমতার বিষয়ও মিলে মিশে আছে। এই রান্না একান্তই বাঙালির ঘরোয়া রান্না। ঘরে ঘরে বাঙালির রান্না যেন টিকে থাকে, সেই কামনা করি।’
অর্থনীতিবিদ সেলিম জাহানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন শাহীন আনাম, আফজাল হোসেন, আব্দুন নূর তুষার, আলপনা হাবিব ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মজুমদার বিপ্লব। মায়ের স্মৃতিচারণা করেন ছেলে ফজলে আকবর তফরদার ও বইটির সম্পাদক কবি শামীম আজাদ। ধন্যবাদ জানান নাতি লাবিব তালুকদার।
‘খাদ্যবিলাস’ বইটি নিয়ে আলোচকেরা বলেছেন, এই রান্নার মধ্যে জড়িয়ে আছে স্মৃতি। একটি সময়কে ধরে রাখা আছে। এগুলো আসলে মায়ের হাতের রান্না। আর মায়ের হাতের রান্না শুধু খাদ্য নয়, অমৃতের মতো।
আনোয়ারা তরফদারের জন্ম গত শতকের ত্রিশের দশকে বৃহত্তর সিলেটে। স্বামী ছিলেন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। স্বামীর চাকরিসূত্রে অবিভক্ত ভারতের আসাম ও পরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে থেকেছেন। স্বামীর সীমিত আয়ে তিনি নিপুণভাবে সংসার পরিচালনা করেছেন। বাঙালির চিরায়ত রান্নায় তাঁর ছিল বিশেষ পারদর্শিতা। এ ছাড়া সূচিকর্ম, মৃৎপাত্রে অঙ্কনসহ বিভিন্ন কারুকর্মেও তাঁর বিশেষ সৃজনশীলতা ছিল। একটা সময় তিনি ঢাকায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেয়েদের পুঁতির গয়না তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।