কিশোরগঞ্জে ইঞ্জিনের বগিতে যাত্রী উঠতে নিষেধ করায় ট্রেনের চালককে মারধর করা হয়েছে। শনিবার (২২ মার্চ) সকাল সোয়া ১০টার দিকে বাজিতপুর উপজেলার সরারচর স্টেশনে ঘটনাটি ঘটে। পরে ট্রেনটি ৫০ মিনিট দেরিতে গন্তব্যের উদ্দেশে স্টেশন ছেড়ে যায়। এ কারণে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। 

সরারচর রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার রথিস বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। মারধরের শিকার ট্রেন চালকের নাম শরিফুল ইসলাম।

স্টেশন মাস্টার রথিস বিশ্বাস বলেন, ‍“চালকের ওপর হামলা চালানোর ঘটনায় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকে ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। কিছু সময় পর হামলাকারীরা চলে যান।”

আরো পড়ুন:

বাউফলে পিটুনিতে ডাকাত নিহতের ঘটনায় ২ মামলা

তরমুজের ট্রলারে ডাকাতির চেষ্টা, গণপিটুনিতে মৃত্যু

ট্রেনটির পরিচালক (গার্ড) শিহাব উদ্দিন বলেন, “ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কিশোরগঞ্জগামী আন্তঃনগর এগারসিন্ধুর এক্সপ্রেস (প্রভাতি) ট্রেনটি সরারচর রেল স্টেশনে পৌঁছায় সকাল ১০টা ১ মিনিটে। ট্রেন থামামাত্র যাত্রীরা এসে চালকের ওপর চড়াও হন। মারধরে আহত হওয়ার পর চালক ট্রেন থেকে নেমে যান। পরে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এই অবস্থায় চালক ট্রেন চালিয়ে নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। খবর পেয়ে স্টেশনে পুলিশ আসে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধে চালক ট্রেনটি চালিয়ে কিশোরগঞ্জ যান।”

তিনি আরো বলেন, “এগারসিন্ধুর প্রভাতি ট্রেনটি আজ সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ভৈরব স্টেশনে প্রবেশ করে। তখন কয়েকজন যাত্রী ইঞ্জিনের বগিতে উঠতে চান। চালক উঠতে দেননি। চালকের কাছ থেকে বাধা পেয়ে ওই যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হন। একপর্যায়ে চালককে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তাঁরা। ইঞ্জিনের বগিতে চড়ে ভ্রমণ করা এক শ্রেণির যাত্রীর অভ্যাস।  মূলত যেতে না পারায় চালকের ওপর হামলা চালানো হয়।”

আহত চালক শরিফুল ইসলাম বলেন, “ভৈরব থেকে কয়েকজন ইঞ্জিনের বগিতে উঠতে চান। আমি তেমন কিছুই বলিনি। কেবল বলেছি, ইঞ্জিনে করে ভ্রমণ যাত্রীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো মূল্যে ইঞ্জিনে করেই যাবেন তারা। শেষে আমাকে হুমকি দেন।”

বাজিতপুর থানার ওসি মুরাদ হোসেন বলেন, “এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। রেলওয়ের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।”

ঢাকা/রুমন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর ক শ রগঞ জ ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে: টিউলিপ

বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিক জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি ও ও সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আপনারা বুঝবেন যে, এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারকে কোনো প্রসঙ্গ বা মন্তব্যের মাধ্যমে আমি বিশেষ গুরুত্ব দিতে পারি না। এটা পুরোপুরি আমাকে হয়রানি করার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। এমন কোনো প্রমাণ নেই যে আমি ভুল কিছু করেছি।’ খবর-বিবিসি

বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে সোমবার লন্ডনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষগুলোর কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। পুরোটা সময় তারা মিডিয়া ট্রায়াল চালিয়েছে। আমার আইনজীবীরা উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছিলেন। তবে তারা কখনও এর জবাব দেয়নি।’

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা তিনটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা পৃথক তিন মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে রোববার এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব। আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল কিনা, সে-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত। ১০ কাঠা প্লট নেওয়ার অন্য অভিযোগে শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের একজন সহকারী পরিচালক। মামলায় শেখ হাসিনা, টিউলিপসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। 

এর আগে জানুয়ারির মাঝামাঝিতে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) ছিলেন। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে।

গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপের খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কের বিষয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠায় টিউলিপ সিদ্দিক মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

সম্প্রতি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠে। এরপর নিজের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগকে তদন্তের আহ্বান জানান টিউলিপ। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস।

টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে সেখানে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস তার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি। কেয়ার স্টারমার অফিসিয়াল চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিককে বলেন, ‘আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার সময় এটা পরিষ্কার করতে চাই যে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস আমাকে আশ্বস্ত করেছেন- তিনি আপনার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি এবং আর্থিক অসঙ্গতির কোনো প্রমাণ খুঁজে পাননি।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ