কিশোরগঞ্জে ট্রেনের ইঞ্জিনে উঠতে নিষেধ করায় চালককে মারধর
Published: 22nd, March 2025 GMT
কিশোরগঞ্জে ইঞ্জিনের বগিতে যাত্রী উঠতে নিষেধ করায় ট্রেনের চালককে মারধর করা হয়েছে। শনিবার (২২ মার্চ) সকাল সোয়া ১০টার দিকে বাজিতপুর উপজেলার সরারচর স্টেশনে ঘটনাটি ঘটে। পরে ট্রেনটি ৫০ মিনিট দেরিতে গন্তব্যের উদ্দেশে স্টেশন ছেড়ে যায়। এ কারণে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের।
সরারচর রেল স্টেশনের স্টেশন মাস্টার রথিস বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। মারধরের শিকার ট্রেন চালকের নাম শরিফুল ইসলাম।
স্টেশন মাস্টার রথিস বিশ্বাস বলেন, “চালকের ওপর হামলা চালানোর ঘটনায় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেকে ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। কিছু সময় পর হামলাকারীরা চলে যান।”
আরো পড়ুন:
বাউফলে পিটুনিতে ডাকাত নিহতের ঘটনায় ২ মামলা
তরমুজের ট্রলারে ডাকাতির চেষ্টা, গণপিটুনিতে মৃত্যু
ট্রেনটির পরিচালক (গার্ড) শিহাব উদ্দিন বলেন, “ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কিশোরগঞ্জগামী আন্তঃনগর এগারসিন্ধুর এক্সপ্রেস (প্রভাতি) ট্রেনটি সরারচর রেল স্টেশনে পৌঁছায় সকাল ১০টা ১ মিনিটে। ট্রেন থামামাত্র যাত্রীরা এসে চালকের ওপর চড়াও হন। মারধরে আহত হওয়ার পর চালক ট্রেন থেকে নেমে যান। পরে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এই অবস্থায় চালক ট্রেন চালিয়ে নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। খবর পেয়ে স্টেশনে পুলিশ আসে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধে চালক ট্রেনটি চালিয়ে কিশোরগঞ্জ যান।”
তিনি আরো বলেন, “এগারসিন্ধুর প্রভাতি ট্রেনটি আজ সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ভৈরব স্টেশনে প্রবেশ করে। তখন কয়েকজন যাত্রী ইঞ্জিনের বগিতে উঠতে চান। চালক উঠতে দেননি। চালকের কাছ থেকে বাধা পেয়ে ওই যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হন। একপর্যায়ে চালককে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তাঁরা। ইঞ্জিনের বগিতে চড়ে ভ্রমণ করা এক শ্রেণির যাত্রীর অভ্যাস। মূলত যেতে না পারায় চালকের ওপর হামলা চালানো হয়।”
আহত চালক শরিফুল ইসলাম বলেন, “ভৈরব থেকে কয়েকজন ইঞ্জিনের বগিতে উঠতে চান। আমি তেমন কিছুই বলিনি। কেবল বলেছি, ইঞ্জিনে করে ভ্রমণ যাত্রীর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো মূল্যে ইঞ্জিনে করেই যাবেন তারা। শেষে আমাকে হুমকি দেন।”
বাজিতপুর থানার ওসি মুরাদ হোসেন বলেন, “এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। রেলওয়ের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।”
ঢাকা/রুমন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর ক শ রগঞ জ ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
মোদি–ইউনূস বৈঠক আয়োজনের অনুরোধ বিবেচনা করা হচ্ছে: জয়শঙ্কর
বঙ্গোপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থা বিমসটেকের আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক আয়োজনে বাংলাদেশের অনুরোধ বিবেচনা করা হচ্ছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নয়াদিল্লিতে সংসদীয় প্যানেলের একটি বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, ভারতের পার্লামেন্টারি কনসালটেটিভ কমিটি ফর এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের এ বছরের প্রথম ওই বৈঠক গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে কয়েকজন সংসদ সদস্য ‘বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায়’ উদ্বেগ জানান। এসব ঘটনায় ভারত কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সে বিষয়ে জানতে চান তাঁরা।
সূত্রগুলো বলেছে, জয়শঙ্কর সংসদীয় প্যানেলকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দাবি করেছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনাগুলোর কারণ রাজনৈতিক, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে নয়।
বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে সম্ভাব্য আলোচনার জন্য বাংলাদেশ গত বুধবার ভারতকে কূটনৈতিক পত্র দিয়েছে। এর আগে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তবে সে সময় তাঁদের বৈঠক হয়নি। ব্যাংককে বৈঠক হলে এটিই হবে অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে ভারতের শীর্ষ পর্যায়ের প্রথম বৈঠক।পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর সংসদ সদস্যদের কাছে বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়েও বক্তব্য তুলে ধরেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, পরবর্তী কোনো এক দিন পাকিস্তান ও চীন বিষয়ে পৃথকভাবে কথা বলবেন তিনি।
পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে সার্ক নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে এবং এ জন্য ভারত বিমসটেককে (দ্য বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন) শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে, বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন বলেও জানা গেছে।
সূত্র বলেছে, জয়শঙ্কর ইঙ্গিত দেন, ব্যাংককে আগামী ২-৪ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদি যোগ দিতে পারেন। তবে তাঁর সফরের বিষয়টি বৈঠকে নিশ্চিত করেননি তিনি।
বৈঠকে জয়শঙ্কর আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী মোদি আগামী মাসে শ্রীলঙ্কা সফরে যাবেন। বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাৎ ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হতে পারে কি না, জানতে চাইলে তিনি আবারও নিশ্চিত না করে বলেন, এটি বিবেচনাধীন।
ভারত সরকার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করে এ বিষয় (হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হত্যার অভিযোগ) তুলে ধরেছে। ভারত সরকার এ নিয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।এস জয়শঙ্কর, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীবৈঠকে কংগ্রেসের সংসদ সদস্য কে সি বেনুগোপাল ও মনীশ তিওয়ারি, শিবসেনা-ইউবিটির সংসদ সদস্য প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদি এবং কংগ্রেসের মুকুল ওয়াসনিকসহ কয়েকজন সংসদ সদস্য ‘বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে নিশানা করে হত্যা’র অভিযোগের বিষয়টি তোলেন। জানতে চান, ভারত সরকার এ বিষয়ে কী করছে।
জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করে এ বিষয় তুলে ধরেছে। ভারত সরকার এ নিয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। এই ইস্যুতে অধিকাংশ সংসদ সদস্যের আলোচনাতেও বাংলাদেশই ছিল মূল আলোচ্যবিষয়।
প্রসঙ্গত, বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে সম্ভাব্য আলোচনার জন্য বাংলাদেশ গত বুধবার ভারতকে কূটনৈতিক পত্র দিয়েছে। এর আগে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তবে সে সময় তাঁদের বৈঠক হয়নি। এবার ব্যাংককে বৈঠক হলে এটিই হবে অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে ভারতের শীর্ষ পর্যায়ের প্রথম বৈঠক।
আরও পড়ুনইউনূস-মোদি বৈঠকের জন্য দিল্লির কাছে ঢাকার চিঠি২০ মার্চ ২০২৫