ছবি: প্রথম আলো

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মোদি–ইউনূস বৈঠক আয়োজনের অনুরোধ বিবেচনা করা হচ্ছে: জয়শঙ্কর

বঙ্গোপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থা বিমসটেকের আসন্ন শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক আয়োজনে বাংলাদেশের অনুরোধ বিবেচনা করা হচ্ছে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নয়াদিল্লিতে সংসদীয় প্যানেলের একটি বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলেছে, ভারতের পার্লামেন্টারি কনসালটেটিভ কমিটি ফর এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের এ বছরের প্রথম ওই বৈঠক গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে কয়েকজন সংসদ সদস্য ‘বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায়’ উদ্বেগ জানান। এসব ঘটনায় ভারত কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সে বিষয়ে জানতে চান তাঁরা।

সূত্রগুলো বলেছে, জয়শঙ্কর সংসদীয় প্যানেলকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দাবি করেছে, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনাগুলোর কারণ রাজনৈতিক, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে নয়।

বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে সম্ভাব্য আলোচনার জন্য বাংলাদেশ গত বুধবার ভারতকে কূটনৈতিক পত্র দিয়েছে। এর আগে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তবে সে সময় তাঁদের বৈঠক হয়নি। ব্যাংককে বৈঠক হলে এটিই হবে অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে ভারতের শীর্ষ পর্যায়ের প্রথম বৈঠক।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর সংসদ সদস্যদের কাছে বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়েও বক্তব্য তুলে ধরেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, পরবর্তী কোনো এক দিন পাকিস্তান ও চীন বিষয়ে পৃথকভাবে কথা বলবেন তিনি।

পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে সার্ক নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে এবং এ জন্য ভারত বিমসটেককে (দ্য বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন) শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে, বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন বলেও জানা গেছে।

সূত্র বলেছে, জয়শঙ্কর ইঙ্গিত দেন, ব্যাংককে আগামী ২-৪ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদি যোগ দিতে পারেন। তবে তাঁর সফরের বিষয়টি বৈঠকে নিশ্চিত করেননি তিনি।

বৈঠকে জয়শঙ্কর আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী মোদি আগামী মাসে শ্রীলঙ্কা সফরে যাবেন। বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাৎ ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হতে পারে কি না, জানতে চাইলে তিনি আবারও নিশ্চিত না করে বলেন, এটি বিবেচনাধীন।

ভারত সরকার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করে এ বিষয় (হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হত্যার অভিযোগ) তুলে ধরেছে। ভারত সরকার এ নিয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।এস জয়শঙ্কর, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বৈঠকে কংগ্রেসের সংসদ সদস্য কে সি বেনুগোপাল ও মনীশ তিওয়ারি, শিবসেনা-ইউবিটির সংসদ সদস্য প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদি এবং কংগ্রেসের মুকুল ওয়াসনিকসহ কয়েকজন সংসদ সদস্য ‘বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে নিশানা করে হত্যা’র অভিযোগের বিষয়টি তোলেন। জানতে চান, ভারত সরকার এ বিষয়ে কী করছে।

জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করে এ বিষয় তুলে ধরেছে। ভারত সরকার এ নিয়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। এই ইস্যুতে অধিকাংশ সংসদ সদস্যের আলোচনাতেও বাংলাদেশই ছিল মূল আলোচ্যবিষয়।

প্রসঙ্গত, বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে সম্ভাব্য আলোচনার জন্য বাংলাদেশ গত বুধবার ভারতকে কূটনৈতিক পত্র দিয়েছে। এর আগে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তবে সে সময় তাঁদের বৈঠক হয়নি। এবার ব্যাংককে বৈঠক হলে এটিই হবে অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সঙ্গে ভারতের শীর্ষ পর্যায়ের প্রথম বৈঠক।

আরও পড়ুনইউনূস-মোদি বৈঠকের জন্য দিল্লির কাছে ঢাকার চিঠি২০ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ