মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর পূর্বসূরি জো বাইডেন এবং কয়েকজন সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা ও হোয়াইট হাউস কর্মকর্তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার নির্বাহী বিভাগ ও বিভিন্ন সংস্থার প্রধানদের এমন নির্দেশ দেন তিনি।

যাঁদের নিরাপত্তা ছাড়পত্র থাকে, তাঁরা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিধিনিষেধ থাকা জায়গাগুলোতেও প্রবেশ করতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্রের রীতি অনুযায়ী, দায়িত্ব ছাড়ার পরও সাবেক প্রেসিডেন্টরা কিছু গোয়েন্দা তথ্য পান। ট্রাম্পের নির্দেশের কারণে বাইডেন সে সুযোগ হারাবেন।

নিরাপত্তা ছাড়পত্র হারানো মানুষের ওই তালিকায় বাইডেন ছাড়াও তাঁর পরিবারের সদস্য এবং সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের নাম রয়েছে। সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পরাজিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন, বাইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের নামও এ তালিকায় আছে।

বিভিন্ন সংস্থার প্রধানকে পাঠানো চিঠিতে ট্রাম্প বলেছেন, সেখানে নাম উল্লেখ করা ব্যক্তিদের যেন আর রাষ্ট্রীয় গোপন নথি দেখতে পাওয়ার সুযোগ না দেওয়া হয়।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এর মাধ্যমে প্রতিটি নির্বাহী বিভাগ এবং সংস্থার প্রধানকে নির্দেশ দিচ্ছি, উল্লিখিত ব্যক্তিদের দেওয়া যেকোনো ধরনের নিরাপত্তা ছাড়পত্র প্রত্যাহার করতে হবে। আমি সব নির্বাহী বিভাগ এবং সংস্থার প্রধানদের আরও নির্দেশ দিচ্ছি, যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি স্থাপনাগুলোকে এসব মানুষের কাছ থেকে নিরাপদ রাখতে তাঁদেরকে যেন বিনা পাহারায় প্রবেশাধিকার না দেওয়া হয়।’

ট্রাম্প তাঁর পূর্বসূরি বাইডেনের ওপর ক্ষুব্ধ এবং তাঁকে নিয়ে প্রায়ই আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়ে থাকেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ট্রাম্পের বিরুদ্ধেও রাষ্ট্রের গোপনীয়তাসংক্রান্ত বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তদন্ত হয়েছিল। হোয়াইট হাউসের গোপন নথি তাঁর নিজস্ব মালিকানাধীন মার–এ–লাগো রিসোর্টে নিয়ে যাওয়ায় এ তদন্ত হয়। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর তদন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ট্রাম্পের তালিকায় যাঁরা আছেন, তাঁদের অনেকেই বাইডেনের হাতে নিয়োগ পাওয়া। তবে সাবেক রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা এবং ট্রাম্পের ঘোর সমালোচক লিজ চেনির নামও তালিকায় আছে।

ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত গোয়েন্দা বিশ্লেষক ফিওনা হিলকেও তালিকায় রাখা হয়েছে। ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান—উভয় প্রশাসনের অধীনেই কাজ করেছেন তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নিগারদের যেন রেকর্ড ভাঙা–গড়ার নেশায় পেয়েছে

ওয়ানডে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে দারুণ ব্যাট করছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। পাকিস্তানের মেয়েদের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে নিগাররা তুলেছিলেন ২৭৬ রান—আনঅফিশিয়াল ম্যাচ হওয়ায় যেটা রেকর্ড হয়নি। কীসের রেকর্ড? বাংলাদেশের মেয়েদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড।

তবে বাছাইপর্বে লাহোরে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে নেমেই রেকর্ডটি গড়েন নিগাররা। গত বছর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২৫২ রানের রেকর্ড ভেঙে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল তুলেছিল ২৭১ রান। আজ সেই লাহোরেই বাছাইপর্বে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে সে রেকর্ডও ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েছে লাল–সবুজের প্রতিনিধিরা।

আরও পড়ুনবিসিবিতে হঠাৎ দুদক, তিন বিষয়ে তদন্ত১ ঘণ্টা আগে

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ২৭৬ রান তুলেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মেয়েদের ওয়ানডে ইতিহাসে এটিই এখন সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার আজও বড় রান পেয়েছেন। ১১ চারে ৫৯ বলে ১৪০.৬৭ স্ট্রাইকরেটে করেন অপরাজিত ৮৩ রান।

আরও দুটি ফিফটি আছে বাংলাদেশের ইনিংসে। ওপেনার ফারজানা হক করেন ৮৪ বলে ৫৭ এবং শারমিনের ব্যাট থেকে এসেছে ৭৯ বলে ৫৭ রানের ইনিংস। থাইল্যান্ডের বিপক্ষেও বাংলাদেশের এ তিন ব্যাটার রান পেয়েছিলেন। সে ম্যাচে নিগারের ১০১ রানের পাশাপাশি শারমিন ৯৪ রানে অপরাজিত ছিলেন এবং ফারজানা করেন ৫৩।

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল মন্থর। ১৪ রান করা ওপেনার ইশমা তানজিম ৮.৩ ওভারে যখন আউট হন, বাংলাদেশের স্কোর ১ উইকেটে ৩৫। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে বাংলাদেশ ইনিংসের ভিত গড়েন শারমিন ও ফারজানা। ১২৭ বলে ১০৩ রানের জুটি গড়েন দুজন, যেখানে ফারজানার অবদান ৪৮ বলে ৪০ ও শারমিনের ৭৯ বলে ৫৭।

আরও পড়ুনর‍্যাঙ্কিংয়েও সুখবর, ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ অবস্থানে নিগার, শারমিন ও রাবেয়া২ ঘণ্টা আগে

ত্রিশতম ওভারে শারমিন আউট হওয়ার পর আট ওভারের মধ্যে ফারজানা ও সোবহানা মোস্তারিও (৯) আউট হন। ৩৭.৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ১৭৬।
এখান থেকে পঞ্চম উইকেটে রিতু মনির সঙ্গে ৩৭ এবং ষষ্ঠ উইকেটে ফাহিমার সঙ্গে ৪৪ বলে ৬১ রানের জুটি গড়েন নিগার। ২২ বলে ২৬ রান করেন ফাহিমা। ১৬টি ওয়াইড দিয়েছেন স্কটল্যান্ডের বোলাররা।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এ পর্যন্ত দুই ম্যাচ খেলে দুটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। থাইল্যান্ডকে ১৭৮ রানে হারানোর পর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২ উইকেটে জেতে নিগারের দল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৭৬/৬ (নিগার ৮৩*, শারমিন ৫৭, ফারজানা ৫৭, ফাহিমা ২৬; ব্রাইস ২/৫৩, র‌্যাচেল ১/৩৩, চোলে ১/৩৭, প্রিয়ানাজ ১/৩৪)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ