পৃথিবীর ঘূর্ণনশক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কৌশল আবিষ্কার
Published: 22nd, March 2025 GMT
জ্বালানি–সংকট মোকাবিলার পাশাপাশি পরিবেশদূষণ কমাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দীর্ঘদিন ধরেই সৌর ও বায়ুশক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। জিওথার্মাল তাপ ব্যবহার করেও বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে অনেক দেশ। তবে প্রাকৃতিক এসব উৎসের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এবার পৃথিবীর ঘূর্ণনশক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নতুন কৌশল আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা।
২০১৬ সালে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে কৌশলটি তেমন গুরুত্ব পায়নি সে সময়। এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ তৈরির জন্য সিলিন্ডারযুক্ত একটি যন্ত্র তৈরি করেছেন। বিজ্ঞানীদের দাবি, যন্ত্রটি পৃথিবীর ঘূর্ণনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে।
আরও পড়ুনএক সেকেন্ডের জন্য পৃথিবীর ঘূর্ণন বন্ধ হলে কী হতে পারে০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ম্যাংগানিজ-জিংক ফেরাইট দিয়ে তৈরি এক ফুট লম্বা যন্ত্রটির কার্যকারিতা এরই মধ্যে পরীক্ষা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, পৃথিবীর ঘূর্ণনশক্তি কাজে লাগিয়ে ১৭ মাইক্রো ভোল্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে যন্ত্রটি। বিদ্যুৎ তৈরির এই কৌশল ফিজিক্যাল রিভিউ রিসার্চ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
পৃথিবীর ঘূর্ণনশক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নতুন কৌশলের বিষয়ে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ক্রিস্টোফার সাইবা বলেন, পৃথিবীর পৃষ্ঠের সাপেক্ষে স্থির থাকা কোনো পরিবাহী তার চৌম্বকক্ষেত্র থেকে শক্তি উৎপন্ন করতে পারে না—এই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করেছে যন্ত্রটি।
সূত্র: পপুলার মেকানিকস ডট কম
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্লভ হীরা চুরি, প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার খেলা
রেহান একজন সাধারণ মানুষ; যার জীবনে কোনো নিয়ম নেই। আছে কেবল লক্ষ্য আর প্রতারণার কৌশল। তাঁর চোখে-মুখে যেমন স্মার্টনেস, তেমনি ভয়ংকর ঠান্ডা হিসেবি হিমশীতলতা। ভারতের অপরাধ জগতের এক নীরব শাসক রাজন আউলাখ তাঁকে একটি অসম্ভব মিশনের জন্য নিয়োগ করেন। তা হলো ‘আফ্রিকান রেড সান’ নামে এক দুর্লভ হীরা চুরি করতে হবে। এটি করলেই রেহান পাবেন প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা। রেহান বিভিন্ন ছদ্মবেশে হীরা চুরির পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী না হওয়ায় শুরু হয় প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার খেলা।
এমনই গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বলিউডের নতুন সিনেমা ‘জুয়েল থিফ: দ্য হাইয়েস্ট বিগিন্স’। নেটফ্লিক্সের এ সিনেমার মাধ্যমে বেশ কয়েক মাসের বিরতি শেষে ফিরছেন বলিউডের ছোট নবাব সাইফ আলি খান। এবার তাঁকে দেখা যাবে একদম ভিন্ন ধরনের এক চোরের ভূমিকায়।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সাইফ আলি খান বলেন, ‘‘রেহান চরিত্রটি আমার কাছে শুধু এক চোর নয়; সে এক দার্শনিক। সে জানে কীভাবে মানুষকে পড়তে হয়, আর নিজের অস্তিত্বকে প্রতারণার চাদরে মুড়িয়ে ফেলতে হয়। ‘জুয়েল থিফ: দ্য হাইয়েস্ট বিগিন্স’ শুধু একটি সিনেমা নয়, এটি এক অভিজ্ঞতা। চোরের চোখ দিয়ে বিশ্ব দেখার এক সুযোগ। যেখানে নৈতিকতা প্রশ্নবিদ্ধ, এবং বিশ্বাস একটি খেলনা মাত্র।’’
সিনেমাটির শুটিং হয়েছিল মুম্বাই ও বুদাপেস্ট শহরে। পরিচালক কুকি গুলাটি ও রব্বি গ্রেওয়াল গল্প বলার ধরনে আধুনিকতা এনেছেন। টানটান থ্রিলার ফর্মুলাটিকে হারাননি। প্রযোজক সিদ্ধার্থ আনন্দ জানিয়েছেন, ‘এই সিনেমা শুধু হীরার চুরির গল্প না, এটি একজন মানুষের নিজেকে খুঁজে পাওয়ারও গল্প।’
এ সিনেমার মাধ্যমে ১৭ বছর পর আবারও একসঙ্গে কাজ করলেন সাইফ আলি খান ও সিদ্ধার্থ আনন্দ।
আবারও তাঁর সঙ্গে কাজ প্রসঙ্গে সাইফ আলি খান বলেন, ‘সিদ্ধার্থ আনন্দের সঙ্গে পুনরায় কাজ করার ক্ষেত্রে সবসময় ঘরে ফিরে আসার মতো অনুভূত হয়। সিদ্ধার্থ যেভাবে অ্যাকশন, স্টাইল ও গল্প বলার ক্ষেত্রে একটা সুন্দর সংযোগ তৈরি করে তা সত্যিই বিশেষ। জুয়েল থিফ-এ আমরা সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছি এবং কাজ করে অনেক আনন্দ পেয়েছি। জয়দীপ আহলাওয়াতের সঙ্গে পর্দা ভাগ করে নেওয়ার অভিজ্ঞতাও দারুণ। তাঁর অভিনয়ে অনেক গভীরতা রয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতাটিকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলেছে।’
অন্যদিকে, জয়দীপ আহলাওয়াত জানান, ‘রাজন এমন এক চরিত্র, যে সব নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। যখন সে রেহানের মতো কাউকে পায়, তখন সংঘর্ষটা হয় ব্যক্তিত্ব আর বুদ্ধির। সেটিই দর্শকের সবচেয়ে বড় উপভোগ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি এমন এক নতুন মহাবিশ্বে প্রবেশের অভিজ্ঞতা, যেখানে অনেক মানুষ আপনার মতোই উত্তম কিছু উপহার দেওয়ার জন্য উৎসাহিত। এটি এমন একটা ছবি যেমনটা আমি সবসময় করতে চেয়েছিলাম। সাইফ ও সিদ্ধার্থের মতো সেরা সহ-অভিনেতা ও নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করার চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারে না।’
গত ১৪ এপ্রিল প্রকাশ হয় সিনেমার ট্রেলার। বুদাপেস্ট থেকে মুম্বাই, হেলিকপ্টার থেকে আন্ডারগ্রাউন্ড ভল্ট–যেখানে যেখানে ট্রেলার ছুটে গিয়েছে, সেখানে ছড়িয়েছে রোমাঞ্চ। পেছনে বাজছে রহস্যময় সাউন্ডট্র্যাক, ক্যামেরার খেলায় ধরা পড়ে দুর্দান্ত অ্যাকশন, রোমাঞ্চ আর ভয়ের গল্পগুলো। এ থ্রিলারে শুধু পাঞ্চ আর প্ল্যানিং নেই, আছে আবেগও। কিছুদিন আগে সিনেমার প্রথম গান ‘জাদু’ প্রকাশ হয়েছে। সেখানে রেহান ও ফারাহর (নিকিতা দত্ত) সম্পর্কের সূক্ষ্ম ছায়া দেখা যায়। এরপর প্রকাশ হয় ‘ইলজাম’ শিরোনামের আরও একটি গান। যেখানে দেখা যায় রেহানের অতীতের আক্ষেপের কাহিনি।
‘জুয়েল থিফ: দ্য হাইয়েস্ট বিগিন্স’ সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন রহস্যময় ফারাহ (নিকিতা দত্ত), প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আবিদ (কুনাল কাপুর) এবং প্রবীণ অপরাধবিশারদ ব্রিজ মোহন সিংহ (কুলভূষণ খারবান্দা)। প্রতিটি চরিত্রই যেমন রহস্যে মোড়া, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ গল্পের বাঁকে। অভিনয়ের পাশাপাশি প্রতিটি শিল্পী নিজেকে ভেঙে আবার গড়েছেন। প্রকাশ হওয়া ট্রেলারে দেখা যায় চোখ ধাঁধানো লোকেশন, একের পর এক ধোঁয়াশা আর অ্যাকশন দৃশ্য মিলিয়ে এটি যেন ভারতীয় হাইয়েস্ট ঘরানার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা; যা দেখে একজন দর্শক লিখেছেন, ‘‘এটি যেন ইন্ডিয়ার ‘মানি হায়েস্ট’ কিন্তু অনেক বেশি স্টাইলিশ আর সাসপেন্স ভরা।”
ফলে বলা যায় ২ ঘণ্টা ২০ মিনিটের এই সিনেমায় শুধু থ্রিল নয় ধরা দেবে একটি অনুভবের গল্প। বলা যায়, যারা থ্রিলার ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি হতে পারে বছরের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত উপহার। আগামীকাল নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। এই সিনেমার হাত ধরে নির্মাতা সিদ্ধার্থ আনন্দ ও তাঁর স্ত্রী মমতা আনন্দের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ম্যাটরিক্স পিকচার্সের ওটিটি অভিষেক হচ্ছে।