আরাকান আর্মির গুলিতে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে দুজন গুলিবিদ্ধ
Published: 22nd, March 2025 GMT
সীমান্তের ওপার থেকে আসা গুলিতে বান্দরবানে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন রোহিঙ্গা ও একজন ঘুমধুমের বাসিন্দা। গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে ভাজাবনিয়া সীমান্তের মিয়ানমার অংশে এ ঘটনা ঘটে। মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা এ গুলি চালিয়েছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।
সীমান্তের ওপার থেকে আসা গুলিতে ঘুমধুমের উলুবনিয়া গ্রামের নুরুল কবিরের ছেলে মো.
নাইক্ষ্যংছড়ির স্থানীয় লোকজন ও ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের একজন সাবেক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মিয়ানমার থেকে পাচারকারীদের বাহকেরা গরু আনার জন্য যাওয়ার সময় আরাকান আর্মি গুলি ছোড়ে। তখন গুলিতে দুজন আহত হন।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল করিম জানিয়েছেন, ভাজাবনিয়া সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের একটি সীমান্ত পোস্ট রয়েছে। পোস্টটি এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির দখলে। গত রাতে ৩৪ ও ৩৫ সীমান্ত পিলারের মাঝামাঝি এলাকায় সাত-আটটি গুলি ছোড়া হয়। ওই ছোড়া গুলিতে শূন্যরেখা থেকে ২০০ মিটার পূর্বে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে একজন বাংলাদেশি ও একজন রোহিঙ্গা আহত হয়েছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, সীমান্তের রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের গতিবিধির ওপর নগর রাখছে আরাকান আর্মি (এএ)। সন্দেহ হওয়ায় তারা গুলি চালিয়েছে। এই ঘটনার পর সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আর ক ন আর ম
এছাড়াও পড়ুন:
চাল না পেয়ে জেলেদের ইউপি পরিষদ ঘেরাও
বাঁশখালীর সরল ইউনিয়নে জেলেদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল না পেয়ে বিক্ষোভ করেছেন কয়েকশ জেলে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার জালিয়াঘাটাস্থ সরল ইউপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন জেলেরা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ওই ইউপি কার্যালয় ঘেরাও করেন তারা। এ সময় বিক্ষুব্ধ জেলেরা সরল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তারের অপসারণ ও বিচার দাবি করেন।
জানা গেছে, ওই ইউনিয়নে ৬৯১ জন জেলের জন্য মাসে ৪০ কেজি করে দুই মাসের জন্য ৮০ কেজি করে ৩৩ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তার ২৬ টন চাল উত্তোলন করে বাকি চাল আত্মসাৎ করেছেন বলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নুরুল ইসলাম নামের এক জেলে। রোববার জেলেদের চাল বিতরণের নির্ধারিত তারিখ ছিল। পূর্ব নির্ধারিত সময়ে কয়েকশ জেলে পরিষদে চাল নিতে গেলে তাদের ফেরত দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা।
জেলে নুরুল ইসলাম জানান, জেলেদের জন্য মাসে ৪০ কেজি করে ৮০ কেজি চাল বরাদ্দ হলেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একবার ৩২ কেজি চাল দিয়ে বাকি চাল আত্মসাৎ করেন। এর মধ্যে অনেক জেলে সেই ৩২ কেজিও পাননি। চাল না পেয়ে তিনি জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সরল ইউনিয়নের জেলে মনির উদ্দিন, মোহাম্মদ তৈয়ব, বাবুল দাশ, আবদুল আজিজ, মোহাম্মদ হাসানের ভাষ্য, মাসে ৪০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও কাউকে কাউকে ২৮ কেজি ও ৩২ কেজি চাল দেন। অধিকাংশ জেলেকে চাল না দিয়ে ফেরত দেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরিবের জন্য বরাদ্দ করা ভিজিএফের চাল অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছিলেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, সরল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তারকে অনিয়ম দুর্নীতিতে সহযোগিতা করছেন সরল থেকে বদলি করা ইউপি সচিব হারুন। কিছু দিন অরুণ জয় ধর নামে শীলকূপ ইউনিয়নের সচিবকে সরল ইউনিয়নের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হলেও বর্তমানে রহিম উল্লাহ নামে একজনকে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এত কিছুর পরও পাসওয়ার্ডসহ পুরো নিয়ন্ত্রণ হারুনের হাতে। সরলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজেকে সরকারের একজন সচিবের চাচি বলেও পরিচয় দিচ্ছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রোকসানা আক্তার জানান, জেলেদের জন্য তিনি ২৮ কেজি করে চাল বরাদ্দ পেয়েছেন। তিনি ৩৮ কেজি করে দিয়েছেন। যেসব জেলে এখনও চাল পাননি, তারাও চাল পাবে। সেলিম নামে একজন ইউপি সদস্য লোকজনকে উস্কে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবি করেন তিনি।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামশেদুল আলম জানান, সরল ইউনিয়নে জেলেদের চাল বিতরণে অনিয়মের বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।