আওয়ামী লীগের বিচার এবং নিষিদ্ধের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন জুলাই অভ্যুত্থানে আহতরা। দাবি আদায় না হলে সারাদেশ থেকে ঢাকামুখী হয়ে আরেকটি গণঅভ্যুত্থানের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে ‘ওয়ারিঅরস অব জুলাই’ প্লাটফর্ম থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এর আগে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হন।

সমাবেশে আন্দোলনে হাত হারানো আতিকুল গাজী বলেন, আওয়ামী লীগকে কোনোভাবে পুনর্বাসন করা যাবে না। যদি করতে হয় আমার হাত ফিরিয়ে দিতে হবে। দুই হাজার শহীদ এবং ত্রিশ হাজার আহতদের সুস্থ করে দিতে হবে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন কোনোভাবেই করতে দেবো না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলবো, যেভাবেই হোক হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসিতে ঝুলান, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেন।

হাসানুর রহমান, এই বাংলার মাটিতে যতদিন পর্যন্ত বেঁচে আছি ততদিন আওয়ামী লীগ ও খুনি হাসিনার বাংলার মাটিতে জায়গা হবে না।

আহত মাকসুদুর রহমান বলেন, দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়- ২৪ অভ্যুত্থানের পরে যোদ্ধাদের আবার নামতে হয়। অথচ সেই শেখ হাসিনার বিচার এখনও হল না। অনতিবিলম্বে আপনারা সাবধান হন, নইলে জুলাই যোদ্ধারা আবার আপনাদের নামে রাজপথে নেমে আসবে।

আহত আরমান হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা রাষ্ট্রপতি চুপ্পুসহ প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি প্রত্যাখ্যান করে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা না হয় তাহলে আমরা ৬৪ জেলা থেকে জুলাই যোদ্ধা শহীদ পরিবার ঢাকামুখী হব। আবার একটি গণঅভ্যুত্থান হবে। এই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ তো নিষিদ্ধ হবেই আওয়ামী লীগকে যারা সমর্থন করছে, তাদেরও বিচারের মুখোমুখী করা হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা তাদের সমর্থন করেছে তাদেরকে অনতিবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে।
 
ওয়ারিঅরস অব জুলাইয়ের আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, একটি অভ্যুত্থান হয়েছে কিন্তু বাংলাদেশের প্রত্যেকটা সেক্টরে খুনি হাসিনার দোসররা নানা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। দুই হাজার লাশ এবং হাজারো আহতের অঙ্গহানির উপর রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে আছে। অবিলম্বে খুনি হাসিনার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে বিচারের মুখোমুখী করতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ জ ল ই অভ য ত থ ন ন ষ দ ধ কর আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

রাবিতে বর্ষবরণের শেষ সময়ের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা, আয়োজন সীমিত

রাত পোহালেই পহেলা বৈশাখ। বাংলা বছরের প্রথম দিনকে স্বাগত জানাতে বাঙালি মেতে উঠবে নানা আয়োজনে। বাঙ্গালি জাতিসত্তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার অন্যতম দিনটিকে কেন্দ্র করে সর্বত্রই বইছে উৎসবের আমেজ। জাতি-গোত্র-বর্ণ সব ভেদাভেদ ভুলে সকলে একযোগে দিনটি পালন করবে। বৈশাখের আগমনীকে নতুন সুরে, গানে, তালে বরণ করে নিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগসহ একাধিক বিভাগ নতুন বছরকে বরণ করে নিতে নানাবিধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এখনও ব্যানার, ফেস্টুন তৈরি করা হচ্ছে। শোভাযাত্রায় ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান, বাঙালির ঐতিহ্য, কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরতে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন মোটিফ। তবে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার আয়োজনের ব্যাপ্তি কিছুটা কমেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা কেউ ব্যস্ত শখের হাড়ির ভাস্কর্য বানাতে, আবার বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে রঙ তুলিতে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টায় কেউ ব্যস্ত ঝাঁপি রাঙাতে, কেউ কেউ বানাচ্ছে ডাকবাক্স। আবার কেউ ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে ২৪ ফুট লম্বা কলম বানাচ্ছেন। চারুকলা অনুষদ চত্বরে নবীন আঁকিয়েরা গভীর মনোযোগে জলরঙের ছবি আঁকছেন। মাঠজুড়ে বিরাজ করছে বাঁশের ফালি দিয়ে শখের হাঁড়ি ও পালকি তৈরির ব্যস্ততা। আবার কেউ কেউ মধ্যপ্রাচ্যের মানবতার বিপর্যয়কে প্রতীকী করে শলাকা দিয়ে মিসাইল বোমা ও ড্রোন প্লেন বানিয়েছেন।

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান ও ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের গণহত্যা দুটি বিষয়কে প্রতীক হিসেবে ধারণ করে এবারের শোভাযাত্রার প্রস্তুতি চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে।

এ বিষয়ে মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, এবারের আয়োজনে রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী চব্বিশের প্রতিফলন থাকছে, যা এবারের বৈশাখে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। যেমন মুগ্ধকে স্মরণ করে পানির বোতল থাকছে, ২৪শের চেতনায় ২৪ ফুট কলম থাকছে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের মানবতার বিপর্যয়ও তুলে ধরা হবে। বিমান থাকছে। আয়োজনে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে ২৪ শের কিছু স্লোগানও। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হবে। প্রথমে উদ্বোধনী গানের মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ আয়োজন শুরু হবে, দুটো গানের পর নাচ। তারপর উপাচার্য র‌্যালি উদ্বোধন করবেন। র‌্যালি শেষে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে, চলবে সন্ধ্যার পর্যন্ত । বিগত বছরে তিন দিনব্যপী অনুষ্ঠান হলেও এ বছর সীমিত করা হয়েছে। একদিনই আয়োজন হবে। 

এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ডীন মোহাম্মদ আলী বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও আয়োজন থাকছে। এবারও শোভাযাত্রা হবে, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। তবে আমাদের সকল শিক্ষার্থীরা এখনো এসে পৌঁছায়নি। এটা তো শিক্ষার্থীদের আয়োজন। তাই আয়োজন কিছুটা সীমিত।
 
নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ আয়োজন আমাদের দেশের সাংস্কৃতিক আয়োজন। এটা সমগ্র বাঙালি জাতির উৎসব। তাই আশা করছি তেমন অপ্রীতিকর কোনো বিষয় হবে না। আয়োজন রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ীই হবে। 

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শোভাযাত্রায় তরমুজের মোটিফ দিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি
  • রাবিতে বর্ষবরণের শেষ সময়ের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা, আয়োজন সীমিত
  • তরুণরা নতুন রাজনীতির কথা বলে পুরোনো পথেই হাঁটছে: নুরুল হক নুর
  • তরুণরা নতুন রাজনীতির কথা বলে পুরোনো পথেই হাঁটছে: নুরুল হক নূর