ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রে নতুন মূল্যে মাংস, ডিম ও দুধ
Published: 22nd, March 2025 GMT
পবিত্র রমজান উপলক্ষে সুলভমূল্যে চালুকৃত মাংস, ডিম, দুধের বিক্রয় মূল্য সমন্বয় ও পরিধি বৃদ্ধি করেছে সরকার। এখন থেকে সারাদেশে ডিম (প্রতি ডজন) ১০৮ টাকার স্থলে ১০০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার মাংস (প্রতি কেজি) ২৫০ টাকা, দুধ পাস্তুরিত (প্রতি লিটার) ৮০ টাকা এবং গরুর মাংস (প্রতি কেজি) ৬৫০ টাকা মূল্যে বিক্রয় করা হবে।
তাছাড়া বিশেষ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ঢাকা শহরে অতিরিক্ত ২৩টি, নারায়ণগঞ্জ শহরে ৩টি এবং ৭টি বিভাগীয় দপ্তরে ১৪টি ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে ড্রেসড ব্রয়লার, ডিম, পাস্তুরিত দুধ ও গরুর মাংস বিক্রয় কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
শনিবার মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পবিত্র রমজান মাসে মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার উদ্দেশ্যে ১ রমজান থেকে ২৮ রমজান পর্যন্ত ঢাকা শহরে ড্রেসড ব্রয়লার, ডিম, পাস্তুরিত দুধ ও গরুর মাংস এবং সারাদেশে ব্রয়লার, ডিম, পাস্তুরিত দুধ, গরুর মাংস ও খাসির মাংস সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
১৯ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে সারাদেশের ৩,৯৬,৫৮৬ জন পুরুষ, ২,১২,৮৪৪ জন মহিলা মোট ৬,০৯,৪৩০ ক্রেতার মাঝে সুলভ মূল্যে ১৯ কোটি ৮৩ লক্ষ ৫৪ হাজার ৭৬৮ টাকা মূল্যের দুধ, ডিম, ড্রেসড ব্রয়লার, গরু ও খাসীর মাংস বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে সারাদেশে মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদির সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে।
যে সকল স্থানে জুলাই বিপ্লবের সময় সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ বেশি ছিল সে সকল স্থানকে অগ্রাধিকার প্রদান করে ১ রমজান থেকে ঢাকা শহরের ২৫টি স্থানে সুলভ মূল্যে ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্র চালু রয়েছে।
চলমান বিক্রয় কেন্দ্র ২৫টিঃ
সচিবালয়ের পাশে, খামারবাড়ী (ফার্মগেট), ষাটফুট রোড (মিরপুর), আজিমপুর মাতৃসদন (আজিমপুর), নয়াবাজার (পুরান ঢাকা), বনশ্রী, হাজারীবাগ (সেকশন), আরামবাগ (মতিঝিল), মোহাম্মদপুর (বাবর রোড), কালশী (মিরপুর), যাত্রাবাড়ী (মানিকনগর), শাহাজাদপুর (বাড্ডা), কড়াইল বস্তি, বনানী, কামরাঙ্গীর চর, খিলগাঁও (রেল ক্রসিং দক্ষিণে), নাখাল পাড়া (লুকাস মোড়), সেগুন বাগিচা (কাঁচা বাজার), বসিলা (মোহাম্মদপুর), উত্তরা (হাউজ বিল্ডিং), রামপুরা (বাজার), মিরপুর ১০, কল্যাণপুর (ঝিলপাড়), তেজগাঁও, পুরান ঢাকা (বঙ্গবাজার) এবং কাকরাইল।
ঢাকা মহানগর এবং নারায়ণগঞ্জে অতিরিক্ত ২৬টি স্থানের তালিকাঃ
ঢাকা মহানগরঃ আসাদ গেট (টাউন হল), লালমাটিয়া মহিলা কলেজ, শংকর প্লাজা, জিগাতলা (কায়সার সুইটমিট), আজিমপুর (তিন নং গেট), নিউ পল্টন, এ্যালিফেন্ট রোড (ইস্টার্ন মল্লিকার সামনে), জুরাইন কাঁচা বাজার, আটিবাজার, গাবতলী মাজার রোড, মিরপুর ৬ নং বাজার, শেওড়াপাড়া, কচুক্ষেত বাজার, উত্তরা আজমপুর কাঁচা বাজার, মেরুল বাড্ডা, মগবাজার মোড়, গ্রীন রোড, বসুন্ধরা এভারকেয়ার হাসপাতালের পিছনে, বাসাবো বৌদ্ধ মন্দির, মধ্যবাড্ডা লিং রোড, জোয়ার সাহারা, উত্তরা খালপাড়, রামপুরা হাজীপাড়া এবং লালবাগ এতিমখানা।
নারায়ণগঞ্জঃ ডিসি অফিস চাঁনমারি, চাষাড়া চত্ত্বর এবং তারকার মাঠ কুতুবপুর।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দিনভর বন্ধ থাকার পর হিথরো বিমানবন্দরে সীমিত পরিসরে ফ্লাইট চলাচল শুরু
যুক্তরাজ্যের হিথরো বিমানবন্দর গতকাল শুক্রবার দিনভর বন্ধ ছিল। বিমানবন্দরের কাছের একটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে (সাবস্টেশন) ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর বিদ্যুৎ-বিভ্রাটের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে বিশ্বজুড়ে উড়োজাহাজ চলাচলের সময়সূচি ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়। পরে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় সীমিত আকারে উড়োজাহাজ চলাচল শুরু করে।
হিথরো বিশ্বের পঞ্চম ব্যস্ততম বিমানবন্দর। প্রায় ৮০টি দেশ থেকে এই বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচল করে। প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার যাত্রী হিথরো দিয়ে যাতায়াত করেন। বছরে শেষে এই সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৮ লাখ ৩০ হাজারে। বিমানবন্দরটি বন্ধের কারণে গতকাল ১ হাজার ৩০০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল হওয়ার কথা ছিল। এতে ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েন যাত্রীরা।
এমনই একজন যাত্রী ২৮ বছর বয়সী মুহাম্মদ খলিল। গতকাল হিথরো থেকে পাকিস্তানের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। রয়টার্সকে তিনি বলেন, দেশে ফেরার জন্য তিন মাস ধরে পরিকল্পনা করছেন তিনি। উড়োজাহাজের টিকিট কিনতে অনেক অর্থ ব্যয় করেছেন। ফ্লাইট বাতিলের পর বাড়ি ফেরা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তিনি।
লন্ডন ফায়ার ব্রিগেড জানিয়েছে, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটিতে আগুন লাগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ৭০ জন কর্মীকে পাঠানো হয়। পরে সকাল ৮টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনের কারণে প্রায় ১ লাখ ঘরবাড়ি বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে বেলা ২টার দিকে বিমানবন্দরে আংশিক বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়।
এরপর গতকাল বিকেলে হিথরো বিমানবন্দরের এক মুখপাত্র জানান, সন্ধ্যা থেকে বিমানবন্দরে সীমিত আকারে উড়োজাহাজ চলাচলের জন্য নিরাপদ ঘোষণা করা হবে। আগামীকাল (শনিবার) থেকে পুরোদমে উড়োজাহাজ ওঠানামা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। হিথরো বিমানবন্দরে বিদ্যুৎ সরবরাহ দ্রুত স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের জ্বালানিবিষয়ক মন্ত্রী এড মিলিব্যান্ড।
এদিকে ওই বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটিতে কীভাবে আগুন লেগেছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। আগুন লাগার পর উপকেন্দ্র এলাকার আকাশে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা যায়। উপকেন্দ্রটির আশপাশের ভবনগুলো থেকে প্রায় ১৫০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। লন্ডন পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, আগুন লাগার ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে আপাতত নাশকতার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
ভ্রমণবিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ব্যাঘাতের প্রভাব শুধু হিথরো বিমানবন্দরেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, অন্যত্রও তা ছড়িয়ে পড়বে। ভ্রমণশিল্প বিশ্লেষক হেনরি হার্টভেল্ট বলেছেন, আগামী কয়েক দিন একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখা যেতে পারে।