ভয়েস অব আমেরিকা বন্ধে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে অবৈধ দাবি করে মামলা
Published: 22nd, March 2025 GMT
ভয়েস অব আমেরিকাসহ কয়েকটি গণমাধ্যম আউটলেট বন্ধ করার ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে অবৈধ দাবি করে ফেডারেল আদালতে একটি মামলা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার নিউইয়র্কের ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে মামলাটি করা হয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ট্রাম্প প্রশাসন বেআইনিভাবে ভয়েস অব আমেরিকা (ভিওএ) বন্ধ করে দিয়েছে। একই সঙ্গে এটি আবার চালু করতে আদালতকে নির্দেশনা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, এসব গণমাধ্যম বিশ্বের যেসব দেশে নিজেদের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই, সেসব দেশসহ অন্যান্য দেশে কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে সংবাদ পরিবেশন করে আসছে।
মামলায় বাদী হয়েছে ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস ও কয়েকটি ইউনিয়ন। বিবাদী করা হয়েছে ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়া, কারি লেক ও সেখানে থাকা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতিনিধি অ্যারিজোনাকে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বিশ্বের অনেক অংশে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হারিয়ে গেছে। সেসব জায়গায় শূন্যতা পূরণের জন্য কেবল রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম রয়েছে।’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে ভয়েস অব আমেরিকা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের উত্স হিসেবে প্রায়ই কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোতে সংবাদ প্রচার করে আসছে। কংগ্রেসের অর্থায়নে এটি একটি চার্টারের মাধ্যমে সুরক্ষিত, যা সাংবাদিকতার নীতির আলোকে তার বিষয়বস্তু প্রকাশের নিশ্চয়তা দেয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন গত সপ্তাহে অবৈধভাবে এ সংবাদমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে। রিপাবলিকানরা অভিযোগ করেছেন, সংবাদের উত্সটিতে বামপন্থী প্রচারের প্রভাব রয়েছে। তবে এর পরিচালনকারীরা বলছেন, এ অভিযোগ মোটেই সঠিক নয়।
মামলায় বলা হয়, দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প প্রশাসন ভিওএ পুরোপুরি বন্ধ করার লক্ষ্যে পুরো সংস্থাটির কাছে একটি বিশেষ কৌশল নিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার এ বিষয়ে ভয়েস অব আমেরিকা ও কয়েকটি সহযোগী নেটওয়ার্কের তত্ত্বাবধানে থাকা ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়ার মন্তব্য জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
এ সপ্তাহের শুরুতে নিউজম্যাক্সের সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে কারি লেক ভয়েস অব আমেরিকাকে ‘বৃহৎ নষ্ট জিনিস থেকে একটি অংশ খুঁজে বের করার চেষ্টার মতো’ বলে বর্ণনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের নির্বাহী পরিচালক ক্লেটন ওয়েইমার্স বলেন, ভয়েস অব আমেরিকা ও বৃহত্তর গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং কমিউনিটিকে রক্ষায় কাজ করতে তাঁর সংস্থা বাধ্য হয়েছে।
মিডিয়া–সম্পর্কিত অন্যান্য পদক্ষেপভয়েস অব আমেরিকার সহযোগী কার্যক্রম রেডিও ফ্রি এশিয়ার মুখপাত্র রোহিত মহাজন জানান, শুক্রবার ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপের পর ওয়াশিংটন অফিসের প্রায় ২৪০ জন বা ৭৫ শতাংশ কর্মীর জন্য অবৈতনিক ছুটি কার্যকর হয়েছে। রেডিও ফ্রি এশিয়াও বিদেশে সংবাদ সংগ্রহে সংস্থাটিকে সহায়তা করা কর্মীদের সঙ্গে ফ্রিল্যান্স চুক্তি বাতিল করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
রেডিও ফ্রি এশিয়াও কংগ্রেসের বরাদ্দকৃত তহবিল প্রবাহ অব্যাহত রাখতে মামলা করার চিন্তা করছে।
রেডিও ফ্রি ইউরোপ ও রেডিও লিবার্টি গত মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়াকে পরবর্তী অর্থ পরিশোধে বাধ্য করতে মামলা করেছে। আরএফই বা আরএল বর্তমানে ইউরোপ ও এশিয়ার ২৩টি দেশে ২৭টি ভাষায় সম্প্রচার করে থাকে।
মামলায় সংস্থাগুলো তহবিল বরাদ্দে অস্বীকৃতিকে নজিরবিহীন বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, এটি ইতিমধ্যে তাদের কার্যক্রমকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে বাধ্য করেছে। তারা যুক্তি দিয়েছে, ‘কংগ্রেসের দেওয়া বরাদ্দ তহবিল বাতিল হলে আরএফই ও আরএল সাংবাদিকতার বেশির ভাগ কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হবে এবং একটি সংস্থা হিসেবে অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভয়েস অব আমেরিকা বন্ধে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে অবৈধ দাবি করে মামলা
ভয়েস অব আমেরিকাসহ কয়েকটি গণমাধ্যম আউটলেট বন্ধ করার ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে অবৈধ দাবি করে ফেডারেল আদালতে একটি মামলা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার নিউইয়র্কের ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে মামলাটি করা হয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ট্রাম্প প্রশাসন বেআইনিভাবে ভয়েস অব আমেরিকা (ভিওএ) বন্ধ করে দিয়েছে। একই সঙ্গে এটি আবার চালু করতে আদালতকে নির্দেশনা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, এসব গণমাধ্যম বিশ্বের যেসব দেশে নিজেদের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই, সেসব দেশসহ অন্যান্য দেশে কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে সংবাদ পরিবেশন করে আসছে।
মামলায় বাদী হয়েছে ভয়েস অব আমেরিকার সাংবাদিক, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস ও কয়েকটি ইউনিয়ন। বিবাদী করা হয়েছে ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়া, কারি লেক ও সেখানে থাকা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতিনিধি অ্যারিজোনাকে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বিশ্বের অনেক অংশে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হারিয়ে গেছে। সেসব জায়গায় শূন্যতা পূরণের জন্য কেবল রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম রয়েছে।’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে ভয়েস অব আমেরিকা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের উত্স হিসেবে প্রায়ই কর্তৃত্ববাদী দেশগুলোতে সংবাদ প্রচার করে আসছে। কংগ্রেসের অর্থায়নে এটি একটি চার্টারের মাধ্যমে সুরক্ষিত, যা সাংবাদিকতার নীতির আলোকে তার বিষয়বস্তু প্রকাশের নিশ্চয়তা দেয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন গত সপ্তাহে অবৈধভাবে এ সংবাদমাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে। রিপাবলিকানরা অভিযোগ করেছেন, সংবাদের উত্সটিতে বামপন্থী প্রচারের প্রভাব রয়েছে। তবে এর পরিচালনকারীরা বলছেন, এ অভিযোগ মোটেই সঠিক নয়।
মামলায় বলা হয়, দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প প্রশাসন ভিওএ পুরোপুরি বন্ধ করার লক্ষ্যে পুরো সংস্থাটির কাছে একটি বিশেষ কৌশল নিয়েছে।
গতকাল শুক্রবার এ বিষয়ে ভয়েস অব আমেরিকা ও কয়েকটি সহযোগী নেটওয়ার্কের তত্ত্বাবধানে থাকা ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়ার মন্তব্য জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
এ সপ্তাহের শুরুতে নিউজম্যাক্সের সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে কারি লেক ভয়েস অব আমেরিকাকে ‘বৃহৎ নষ্ট জিনিস থেকে একটি অংশ খুঁজে বের করার চেষ্টার মতো’ বলে বর্ণনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের নির্বাহী পরিচালক ক্লেটন ওয়েইমার্স বলেন, ভয়েস অব আমেরিকা ও বৃহত্তর গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং কমিউনিটিকে রক্ষায় কাজ করতে তাঁর সংস্থা বাধ্য হয়েছে।
মিডিয়া–সম্পর্কিত অন্যান্য পদক্ষেপভয়েস অব আমেরিকার সহযোগী কার্যক্রম রেডিও ফ্রি এশিয়ার মুখপাত্র রোহিত মহাজন জানান, শুক্রবার ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপের পর ওয়াশিংটন অফিসের প্রায় ২৪০ জন বা ৭৫ শতাংশ কর্মীর জন্য অবৈতনিক ছুটি কার্যকর হয়েছে। রেডিও ফ্রি এশিয়াও বিদেশে সংবাদ সংগ্রহে সংস্থাটিকে সহায়তা করা কর্মীদের সঙ্গে ফ্রিল্যান্স চুক্তি বাতিল করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
রেডিও ফ্রি এশিয়াও কংগ্রেসের বরাদ্দকৃত তহবিল প্রবাহ অব্যাহত রাখতে মামলা করার চিন্তা করছে।
রেডিও ফ্রি ইউরোপ ও রেডিও লিবার্টি গত মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়াকে পরবর্তী অর্থ পরিশোধে বাধ্য করতে মামলা করেছে। আরএফই বা আরএল বর্তমানে ইউরোপ ও এশিয়ার ২৩টি দেশে ২৭টি ভাষায় সম্প্রচার করে থাকে।
মামলায় সংস্থাগুলো তহবিল বরাদ্দে অস্বীকৃতিকে নজিরবিহীন বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, এটি ইতিমধ্যে তাদের কার্যক্রমকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করতে বাধ্য করেছে। তারা যুক্তি দিয়েছে, ‘কংগ্রেসের দেওয়া বরাদ্দ তহবিল বাতিল হলে আরএফই ও আরএল সাংবাদিকতার বেশির ভাগ কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হবে এবং একটি সংস্থা হিসেবে অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।’