গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় একটি চলন্ত বাসে এক নারীকে (১৮) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ওই নারীর কাছে থাকা নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেন বাসের চালক ও সহযোগীরা। গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার রাতে কোনাবাড়ী থানায় ভুক্তভোগী নারী নিজে বাদী হয়ে মামলা করেছেন। পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার দুজন হলেন বাসের কন্ডাক্টর শাহেদ আলী (১৯) ও চালকের সহকারী কামরুল ইসলাম (১৭)।

মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই নারী গত বৃহস্পতিবার আনুমানিক সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রাজধানীর উত্তরা হাউস বিল্ডিং থেকে বাসে উঠে কোনাবাড়ীর উদ্দেশে রওনা হন। তিনি ক্লান্ত থাকায় বাসের সিটে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ৯টার দিকে বাসটি একটি নির্জন স্থানে দাঁড়ায়। পরে বাসের সহযোগী, চালকসহ অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি মিলে ওই নারীকে ডেকে উঠান। তিনি জেগে দেখেন, বাসে আর কোনো যাত্রী নেই। এ সময় ওই নারীকে তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে আপত্তিকর আচরণ ও হয়রানি করে। পরে তিনি চিৎকার করার চেষ্টা করলে তাকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়। পরে তাঁর সঙ্গে থাকা নগদ ১০ হাজার টাকা, একটি মোবাইল সেট, গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন, নাক ফুল ও কানের দুল নিয়ে ওই নারীকে বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান তাঁরা।

ভুক্তভোগী নারীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ওই নারী নিজের বাসায় গিয়ে স্বজনদের বিষয়টি জানালে রাতেই কোনাবাড়ী থানায় একটি অভিযোগ করেন। পরে নারী যাত্রী ও স্বজনেরা কালিয়াকৈর উপজেলায় গিয়ে বাসটি শনাক্ত করেন। বাসের চালকের সহযোগী ও কন্ডাক্টরকে শনাক্ত করলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।

কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগের পরই পরই আমরা অভিযান পরিচালনা করে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছি। ওই নারী বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় ধর্ষণচেষ্টার একটি মামলা করেছেন।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওই ন র

এছাড়াও পড়ুন:

বাড়ির ভেতর থেকে আসছিল কান্নার আওয়াজ, সেদিকে তাক করে পরপর গুলি

বাড়ির ভেতর থেকে ভেসে আসছিল নারীদের কান্নার আওয়াজ। বাড়ির সীমানার বেড়ার বাইরে লাঠি, বন্দুক ও পাথর হাতে দাঁড়িয়ে একদল লোক। এরপর ওই বাড়িটি লক্ষ্য করে একের পর এক গুলি ছোড়া হলো।

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের রুপালি বাজারপাড়া এলাকায় এমন সংঘর্ষের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সোমবার সকালে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ আছেন। লবণের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই সংঘর্ষ ঘটেছে বলে জানা গেছে। সংঘর্ষের সময় একটি বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন রুপালি বাজারপাড়া এলাকার হামিদা বেগম (৩২), মো. আমজাদ (২০), আহমদ হোসেন (৪০), জেসমিন আকতার (২৮), মিনা আকতার (৩৫), রিনা আকতার (৩০), বুলু আকতার (৩২), মো. ছৈয়দ (৩৫), আফরোজা বেগম (১৫), মো. ছরওয়ার (২৮) ও বেলাল উদ্দিন (৩২)। তাঁদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হামিদা, আমজাদ, আহমদ ও জেসমিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর মিনা, রিনা ও বুলু আকতারকে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, রুপালি বাজারপাড়া এলাকার মিজানুর রহমানের সঙ্গে মালেকপাড়ার ফরহাদ ইকবালের সাড়ে ১০ একর লবণের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। আজ সকালে ফরহাদ ইকবালের লোকজন জমিতে কাজ করতে গেলে মিজানুর রহমানের পক্ষের লোকজন বাধা দেয়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে মালেকপাড়া থেকে অন্তত এক কিলোমিটার দূরে রুপালি বাজারপাড়া এলাকায় বসতবাড়িতে হামলা চালানো হয়। হামলা শেষে একটি বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

মিজানুর রহমানের ভাই মিনহাজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাড়ে ১০ একর জমির মালিক আমরা ৬০ পরিবার। এসব পরিবারকে উচ্ছেদ ও জমি দখল করতে হামলা করা হয়েছে।’

হামলার ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, ফরহাদ ইকবালের পক্ষের মো. সাইফুল্লাহ ও গোলাম মোস্তফা অস্ত্র উঁচিয়ে প্রতিপক্ষের দিকে গুলি ছুড়ছেন। তাঁরা অন্তত ১০ রাউন্ড গুলি ছুড়েছেন। এই দুজনের সঙ্গে আরও ১৫-২০ জন দা, কিরিচ ও লাঠি হাতে হামলা করেন। হামলাকারীরা সবাই মাস্ক পরা ছিলেন।

অস্ত্রধারী সাইফুল্লাহ ও গোলাম মোস্তফার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ফরহাদ ইকবালও ঘটনার পর থেকে পলাতক।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, ‘লবণের জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে গুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। ভিডিওতে দুটি অস্ত্র দেখা যাচ্ছে। অস্ত্র হাতে থাকা ব্যক্তিদের শনাক্ত করে তাদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ