আওয়ামী লীগ নামলে পুলিশের বলপ্রয়োগের অধিকার থাকবে: এনসিপি
Published: 22nd, March 2025 GMT
আওয়ামী লীগ পরিষ্কারভাবে একটি দেশবিরোধী শক্তি এবং ভারতের এজেন্ট। তারা যদি আন্দোলনে নামে, সেটাকে আমরা আন্দোলন বলব না। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য নামবে। সে ক্ষেত্রে পুলিশের যে বলপ্রয়োগের অধিকার আছে, সেটা থাকবে।
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ন টাওয়ারে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে দলের সংস্কার সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার এ কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে আগামীকাল রোববার প্রাথমিক সংস্কার প্রস্তাব জমা দেবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। নির্বাচনে ২৩ বছর বয়সে প্রার্থী ও ১৬ বছর বয়সে ভোটার হওয়ার প্রস্তাব দেবে বলে জানায় এনসিপি।
গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের কাছ থেকে কী ধরনের বাংলাদেশ দেখতে চান, এমন প্রশ্ন করে সংস্কারের বিষয়ে মতামত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান এনসিপি নেতা সারোয়ার তুষার। তিনি বলেন, সেখানে একজন শহীদের মা বলেছেন, তিনি এমন বাংলাদেশ চান, যেখানে তাঁর ছেলে আন্দোলনে নামলে পুলিশ গুলি করতে পারবে না।
এ সময় এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আওয়ামী লীগ আন্দোলনে নামলে কী হবে? জবাবে সারোয়ার তুষার বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তো আন্দোলনে আসবে না। আওয়ামী লীগ যেটা করবে, সেটাকে তো আমরা আন্দোলন বলব না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আন্দোলনের তো একটা সংজ্ঞা আছে।’
সারোয়ার তুষার আরও বলেন, ‘আমরা বলতে চাচ্ছি, বিভিন্ন দাবিদাওয়াকেন্দ্রিক যে আন্দোলন—একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আপনি বেতনের জন্য আন্দোলনে নামছেন, কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামছেন কিংবা অন্যান্য যেকোনো ইস্যু, একটা কালাকানুন বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামছেন—এগুলোকে আমরা আন্দোলন বলি।’তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পরিষ্কারভাবে একটি দেশবিরোধী শক্তি এবং ভারতের এজেন্ট। তারা যদি আন্দোলনে নামে, সেটাকে আমরা আন্দোলন বলব না। তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য নামবে। সে ক্ষেত্রে পুলিশের যে বলপ্রয়োগের অধিকার আছে, সেটা থাকবে।’
আগামীকাল রোববার বেলা দুইটার সময় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে গিয়ে তাদের কাছে এনসিপির প্রতিনিধিদল সংস্কার প্রস্তাব জমা দেবে। তারপর ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির আলোচনা হবে। আগামীকাল প্রস্তাব জমা দিলে ঈদের পর এনসিপির সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের অবস্থান নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে দলটি জানিয়েছে।
আরও পড়ুনজেন–জিদের ভোটার করতে চায় এনসিপি, ২৩ বছর বয়সে প্রার্থী, ১৬ বছরে ভোটার হওয়ার প্রস্তাব১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র প রস ত ব এনস প র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় সনদ তৈরির মাধ্যমে জাতির আকাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র সংস্কারের দিকে অগ্রসর হতে পারব: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আলাপ আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্য দূর করে যে সমস্ত জায়গায় সবাই একমত আছে তার ভিত্তিতে জাতীয় সনদ তৈরি করা যাবে। জাতীয় সনদ তৈরির মাধ্যমে জাতির যে রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা সেই দিকে অগ্রসর হতে পারব।’
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রথম ধাপের সংলাপের মাধ্যমে আলোচনার সূচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা পর্যায়ক্রমিকভাবে হয়তো আলোচনা করব। আমরা বিবেচনা করব কীভাবে একজায়গয় আসতে পারি।’
স্প্রেডশিটের কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে ব্যাখ্যা দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু জায়গায় ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন হবে। তখন স্পষ্ট করতে পারব কমিশনগুলোর অবস্থান কী, আপনাদের (রাজনৈতিক দল) অবস্থান বুঝতে চেষ্টা করব। তারই মধ্য দিয়ে প্রক্রিয়াটায় অগ্রসর হবো।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে যত দ্রুততার সঙ্গে একটি জাতীয় সনদের জায়গায় পৌঁছানো। এ কমিশনের মেয়াদ যেহেতু জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। তাই আমরা আশা করি, প্রাথমিক আলোচনা মে মাসের মাঝামাঝি পর্যায়ে শেষ করতে পারব। পরে আমরা পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হবো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সকলেই একপক্ষ। চেষ্টা করছি রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য। আমাদের লক্ষ্য এক। কিন্তু পথের ক্ষেত্রে সামান্য ভিন্নতা আছে। সেটা দূর করে, যে ঐক্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শাসনকে দুর করা গেছে, সে ঐক্যের জায়গায় যেন পৌঁছাতে পারি এবং অগ্রসর হতে পারি। এখনও ঐক্য আছে, মতভিন্নতা আছে। সেই ঐক্যকে সুদৃঢ় করা এবং সংস্কার কার্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া দরকার।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় সংলাপে আরও অংশগ্রহণ করেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন।
এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বে দলটির আট সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের বেশিরভাগ জায়গয় এনডিএম একমত জানিয়ে ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘আমরা সংস্কারগুলো বড়ভাবে দেখতে চাই। সংস্কারগুলোর মাধ্যমে জনবান্ধন সরকার ব্যবস্থা তৈরি করতে সক্ষম হবে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মতো ফ্যাসিজম যাতে বাংলাদেশে দাঁড়াতে না পারে, সেই আওয়ামী লীগকে বাতিল করা এবং তাদের ফ্যাসিজমকে বাতিল করা বড় সংস্কার।’