ঢাকা ওয়াসায় চাকরি, বেতন ছাড়াও আছে সার্বক্ষণিক গাড়ির সুবিধা
Published: 22nd, March 2025 GMT
ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ঢাকা ওয়াসা) জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে চুক্তি ভিত্তিতে একজন কর্মকর্তা নিয়োগে দেবে। আগ্রহী প্রার্থীদের সরাসরি, কুরিয়ার বা ডাকযোগে আবেদনপত্র পাঠাতে হবে।
পদের নাম: ব্যবস্থাপনা পরিচালকপদসংখ্যা: ১
যোগ্যতা: ন্যূনতম স্নাতকোত্তর বা বিএসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং) বা সমমানের ডিগ্রি। সরকারি/ আধা সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে কর্মরত আছেন বা ছিলেন, এমন প্রার্থীদের ক্ষেত্রে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫–এর ন্যূনপক্ষে তৃতীয় গ্রেড স্কেল বা সমপর্যায়ের স্কেলধারী হতে হবে। অবশ্যই পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন সেক্টর অথবা সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় সিনিয়র পর্যায়ে অন্তত ২০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে পারদর্শী হতে হবে।
বয়স: অনূর্ধ্ব ৬০ বছর হতে হবে। তবে পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনায় বিশেষ অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীর ক্ষেত্রে বয়স শিথিলযোগ্য।
চাকরির ধরন: তিন বছরের চুক্তিভিত্তিক
বেতন-ভাতা: আলোচনা সাপেক্ষে
সুযোগ-সুবিধা: প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য চালক–জ্বালানিসহ একটি গাড়ি, আবাসিক টেলিফোন, মুঠোফোন ও তার বিল ঢাকা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ প্রদান করবে।
আরও পড়ুনবিসিআইসিতে বড় নিয়োগ, পদ ৬৮৯২১ মার্চ ২০২৫আবেদন যেভাবেআগ্রহী প্রার্থীদের বিস্তারিত বিবরণসংবলিত নিজের জীবনবৃত্তান্তসহ আহ্বায়ক, কর্মসম্পাদন সহায়তা কমিটি, ঢাকা ওয়াসা বরাবর আবেদনপত্র সরাসরি, কুরিয়ার বা ডাকযোগে পাঠাতে হবে।
আবেদনপত্র পাঠানোর ঠিকানা: সদস্যসচিব, কর্মসম্পাদন সহায়তা কমিটি, ঢাকা ওয়াসা, ওয়াসা ভবন, ৯৮ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
আবেদনপত্র পাঠানোর শেষ সময়: ২০ এপ্রিল ২০২৫, বেলা ৩টা পর্যন্ত।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ধরা পড়ছে না ইলিশ, জেলেদের দিন কাটছে অর্থকষ্টে
সাগরে মাছ ধরা পড়ছে কম। বিশেষ করে দেখা মিলছে না ইলিশের। এমন পরিস্থিতিতে অর্থকষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে কক্সবাজারের প্রায় এক লাখ জেলে পরিবারকে। আয় না থাকায় ট্রলারমালিকেরাও পড়েছেন বিপাকে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের নাজিরারটেক সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বসে মাছ ধরার ট্রলারের ছেঁড়াজাল মেরামতে ব্যস্ত অর্ধ শতাধিক জেলে। তাঁদের সঙ্গে কথা হয়। জেলেরা জানান, ইলিশ ধরা না পড়ায় ঘাটে ফেলে রাখা হয়েছে ট্রলার। ফলে দুঃখে-কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে তাঁদের। এর মধ্যেই ১৫ এপ্রিল থেকে সাগরে মাছ ধরায় ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এ সময় তাঁদের কষ্ট আরও বাড়বে।
জাল মেরামতে ব্যস্ত জেলেদের একজন কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, মাছ ধরা না পড়ায় অলস সময় কাটছে। এর মধ্যে জাল মেরামতের কাজ করছেন। প্রতিদিন ৬০০ টাকা করে পান। এ টাকায় সংসার চালানো কষ্টের। জাল মেরামতের কাজ বন্ধ হয়ে গেলে না খেয়ে থাকতে হবে।
আরেক জেলে আমিন উদ্দিন (৪৫) বলেন, অর্থাভাবে এবারের ঈদও মাটি হয়েছে। সন্তানদের ঈদের নতুন জামা কাপড় কিনে দেওয়া দূরে থাক, খাবার জোগাতেই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সাগরে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা শুরুর পর দুর্দশা আরও বাড়বে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজারের নাজিরারটেক, নুনিয়াছটার পাশাপাশি সদর উপজেলার খুরুশকুল; টেকনাফের জালিয়াপাড়া, শাহপরীর দ্বীপ, সেন্ট মার্টিন এবং কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও পেকুয়া উপজেলার অন্তত ৩২টি গ্রামে জেলে পরিবার রয়েছে প্রায় এক লাখের বেশি। মাছ ধরা কমে যাওয়ায় প্রায় সবারই অর্থসংকটে দিন কাটছে।
কক্সবাজার ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জেলার ছোট–বড় ছয় হাজার ট্রলারের মধ্যে চার হাজার আড়াই মাস ধরে ঘাটে পড়ে আছে। কারণ, সাগরে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। অবশিষ্ট দুই হাজার ট্রলার ঈদের আগপর্যন্ত সাগরে নামলেও তেমন মাছ ধরা পড়েনি। তাতে ট্রলারমালিক, জেলে, শ্রমিক—সবাই ক্ষতিগ্রস্ত। তিনি আরও বলেন, একটি ট্রলার সাগরে নামলে সাত দিন সময়ের একটি ট্রিপে খরচ হয় ছয় থেকে সাত লাখ টাকা। কিন্তু যে পরিমাণ মাছ ধরা পড়ে, তা বিক্রি করলে এক লাখ টাকাও পাওয়া যায় না। লোকসান গুনতে গুনতে বহু মালিক পথে বসেছে। অনেকে দেনা শোধ করতে ট্রলার বিক্রি করে দিচ্ছেন।
নুনিয়াছটার ট্রলারমালিক গিয়াস উদ্দিন জানান, তাঁর ট্রলারে জেলে আছেন ২১ জন। আড়াই মাস ধরে ট্রলারটি ঘাটে পড়ে থাকায় জেলেরা বেকার হয়ে পড়েছেন। গত ঈদে জেলেদের মাথাপিছু ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়। এখন সংসার চালানোর মতো জেলেদের অর্থসহায়তা দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। কারণ তিনিও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।
নুনিয়াছটা ফিশারিঘাটের ট্রলারমালিক ওসমান গণির (৪৭) ট্রলার আছে তিনটি। তিনি জানান, তাঁর দুটি ট্রলার আড়াই মাস ধরে ঘাটে পড়ে আছে। অপর একটি ট্রলার সাগরে নেমে আড়াই মাসে ১০ লাখ টাকার মাছ পেয়েছে। একই সময় ট্রলারটিতে জ্বালানি-খাবারসহ আনুষঙ্গিক খরচ হয়েছে ২১ লাখ টাকা। লোকসান হয়েছে ১১ লাখ টাকার মতো। ওসমান গণি বলেন, ‘লোকসান গুনতে গুনতে পথে বসার উপক্রম। এখন একটি ট্রলার বিক্রির চেষ্টা চালাচ্ছি, কিন্তু লোক পাওয়া যাচ্ছে না।’
উত্তর নুনিয়াছটার আরেকটি ট্রলারের মালিক নুরুল আলম বলেন, তাঁর দুটি ট্রলারও দুই মাস ধরে ঘাটে ফেলে রেখেছেন। ২ ট্রলারের ৪১ জন জেলে ২ মাস ধরে বেকার। দেনা শোধ করতে সম্প্রতি তিনি দেড় কোটি টাকা দামের একটি ট্রলার বিক্রি করে দিয়েছেন ৫৫ লাখ টাকায়। অপর ট্রলারটিও বিক্রির চেষ্টা চালাচ্ছেন।
টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ ও জালিয়াপাড়ার দুই হাজারের বেশি জেলে পরিবার এবার ঠিকমতো ঈদ উদ্যাপন করতে পারেনি বলে জানান শাহপরীর দ্বীপ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুস সালাম। তিনি বলেন, ‘জেলেদের এমন দুর্দশা আগে দেখিনি। বেকার জেলেরা সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের সাহায্য-সহায়তা থেকেও বঞ্চিত।’ টেকনাফ ডিঙি নৌকামালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমদ বলেন, দুই মাস ধরে সাগরে মাছ ধরা পড়ছে না। তাতে ডিঙি নৌকার ১০ হাজার জেলে বেকার হয়ে পড়েছেন।
কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর ফিশারিঘাটের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে গত বছর ঈদের আগ মুহূর্তের কয়েক দিনে দৈনিক ১৫০ থেকে ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ ট্রাকবোঝাই করে ঢাকায় সরবরাহ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গত ২ মাসে ১৫ টন ইলিশও সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। ফিশারিঘাটের ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছ সরবরাহ দেন কক্সবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য সমবায় সমিতির শতাধিক সদস্য। জানতে চাইলে সমিতির প্রধান উপদেষ্টা ও ইলিশ ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন বলেন, কক্সবাজার উপকূলে কয়েক মাস ধরে মাছের খরা চলছে। বঙ্গোপসাগর থেকে ইলিশ যেন কোথাও উধাও হয়ে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এমন পরিস্থিতি হচ্ছে কি না, তার গবেষণা দরকার।
কক্সবাজারের নাজিরারটেক ঘাটে নোঙর করা কয়েকটি নৌযান। সম্প্রতি তোলা