ফেনীর পরশুরাম সীমান্তে ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় আবদিওয়ালি মোহাম্মদ আলী (২৪) নামে এক সোমালিয়ান নাগরিককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে পরশুরাম উপজেলার নিজকালিকাপুর সীমান্ত থেকে তাকে আটক করা হয়। বিজিবি জানায়, মির্জানগর ইউনিয়নের সীমান্ত পিলার ২১৫৯/৩ এস-এর কাছ থেকে ১৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশের সময় টহল দলের সদস্যরা তাকে আটক করেন।

বিজিবি সূত্র জানান, আটক সোমালিয়ান নাগরিকের কাছে থাকা পাসপোর্ট অনুযায়ী, তিনি ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের ২৪ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে বৈধ ভিসায় অবস্থান করেছিলেন। এছাড়া, তার কাছ থেকে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির একটি পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়েছে, যেখানে তিনি বিবিএ ৬০ ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচিত।

ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করায় তার বিরুদ্ধে ফরেইন অ্যাক্ট ১৯৪৬-এর ৩ (২)(খ)/১৩/১৪ ধারায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। বিজিবি তাকে পরশুরাম মডেল থানায় হস্তান্তর করবে।

ফেনী ৪ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা, চোরাচালান প্রতিরোধ এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধে বিজিবির অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই সোমালিয়ান নাগরিককে আটক করা হয়েছে।

এর আগে গত ১৯ মার্চ বিজিবির অভিযানে একজন নাইজেরিয়ান নাগরিক এবং এর কিছুদিন আগে এক সুদানি নারীসহ এক জাম্বিয়ান নাগরিককেও আটক করা হয়েছিল। বিজিবির টহল ও নজরদারি বৃদ্ধির ফলে সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের অনুপ্রবেশ চেষ্টাগুলো দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পরশ র ম প রব শ

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে দুই স্থানে শ্রমিক বিক্ষোভ

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর অংশের দুটি স্থানে গতকাল শনিবার শ্রমিক বিক্ষোভ হয়েছে। এর মধ্যে শ্রীপুর উপজেলার নয়নপুরে দুপুরের দিকে ২ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন এক্সিস নিটওয়্যারস্‌ লিমিটেড নামের কারখানা শ্রমিকরা। তারা এক অপারেটরকে মারধরের প্রতিবাদ জানান ও ১২টি দাবি তুলে ধরেন। এদিন সকালে মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় আরেকটি কারখানায় বন্ধের নোটিশ দেখতে পেয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকরা। এ সময় তারা প্রায় আধা ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন।
নয়নপুরের এক্সিস নিটওয়্যারস্‌ লিমিটেড কারখানা শ্রমিকরা জানান, ওই কারখানার অপারেটর মোশারফ হোসেন কয়েকদিন অসুস্থ ছিলেন। সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দিয়ে শনিবার বেলা ১১টার দিকে প্রাকৃতিক কাজ সারতে শৌচাগারে যান। সেখানে বেশি সময় কাটানোর অভিযোগ তুলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সুপারভাইজার আল আমিন। এক পর্যায়ে মোশারফকে মারধর করা হলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় তানিয়া মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য মোশারফকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে 
রেফার করেন। 
এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে পৌনে ১টার দিকে কারখানার দুই হাজার শ্রমিক মহাসড়কে অবস্থান নেন। তারা সুপারভাইজার আল আমিন, নজরুল ও সোহাগকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়াসহ ১২টি দাবি তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে সম্পূর্ণ ছুটির টাকা, ঈদে ১২ দিনের ছুটি, ১ হাজার টাকা হাজিরা বোনাস। মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে শিল্প পুলিশ, মাওনা হাইওয়ে থানা পুলিশ ও শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি আইয়ুব আলী বলেন, শ্রমিকদের নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। শ্রমিকদের দাবিগুলো বিবেচনার আশ্বাস দিলে তারা মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান। এর পর বেলা পৌনে ৩টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে গাজীপুর মহানগরের জায়ান্ট নিট ফ্যাশন লিমিটেড নামে একটি কারখানার শ্রমিকরাও এদিন সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় আশপাশের অন্তত ১৫টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।
জানা গেছে, মহানগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় অবস্থিত কারখানাটিতে কয়েকদিন আগে বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে শ্রমিকদের তর্কাতর্কি হয়। এর জেরে তিন কর্মকর্তাকে মারধর করেন শ্রমিকরা। এ ঘটনায় একটি মামলা হলে পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেখানে উত্তেজনা চলছিল। শনিবার সকালে শ্রমিকরা কারখানায় গিয়ে দেখেন, অনির্দিষ্টকালের বন্ধের নোটিশ ঝোলানো আছে। এতে তাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এসে অবস্থান নিয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। আশপাশের কয়েকটি কারখানা শ্রমিকও তাদের সঙ্গে যোগ দেন। এ সময় তাদের কয়েকজনকে ওই কারখানায় ইট-পাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। কেউ কেউ মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে দেন। 
গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম জানান, বিক্ষোভের খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। তারা মহাসড়ক থেকে শ্রমিকদের দ্রুত সরিয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেন। বিক্ষোভের জের ধরে আশপাশের ১০-১২টি কারখানায় একদিনের  ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। বিক্ষোভ থেমে গেলে অধিকাংশ কারখানাই চালু হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ