শাকিবের জন্মদিনে ‘তাণ্ডব’ সিনেমার ফার্স্ট লুক
Published: 22nd, March 2025 GMT
ঢালিউড জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানের জন্মদিন আগামী ২৮ মার্চ। শীর্ষ নায়কের জন্মদিন ঘিরে কোনো উন্মাদনা থাকবে না তা হয় না। প্রিয় নায়কের জন্মদিনে কী আয়োজন থাকে তা জানতে মুখিয়ে ভক্তরা। এবার জন্মদিনে নায়কের পক্ষ থেকে ভক্তরা উপহার পেতে যাচ্ছেন ‘তাণ্ডব’ সিনেমার ফার্স্ট লুক। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের একটি সূত্র এমনটিই জানিয়েছে।
শাকিব বর্তমানে ‘বরবাদ’ সিনেমা প্রচার-প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত। ঠিক সে সময়েই তাণ্ডব সিনেমার ফার্স্ট লুকের সুখবর এলো। ২০২৩ সালে তরুণ পরিচালক হিমেল আশরাফের ‘প্রিয়তমা’ ও ‘রাজকুমার’ নিয়ে নতুন করে জনপ্রিয়তার জোয়ারে ভেসেছিলেন শাকিব। তারপর গত বছর রায়হান রাফী নির্মিত ‘তুফান’ দিয়ে সেই জোয়ারে যেন নতুন হাওয়া দিয়েছেন।
নতুন করে দর্শক টেনেছে সিনেমাটি। সিনেমা মুক্তির পরপরই তিনি ঘোষণা দিয়েছিল ‘তুফান ২’ নির্মিত হবে। কিন্তু সেটি আর হয়নি।
শাকিব খান ও রায়হান রাফী জুটি হয়ে আবারও আসছেন পর্দায়। ‘তুফান ২’ না হলেও ‘তাণ্ডব’ সিনেমা নিয়েই হাজির হবেন দু’জন। জানা গেছে, অ্যাকশনধর্মী সিনেমা হবে ‘তাণ্ডব’। এটি প্রযোজনা করছে আলফা আই-এসভিএফ বাংলাদেশ। সিনেমার প্রি প্রোডাকশনের কাজ শুরু হয়েছে অনেক আগেই। গত ফেব্রুয়ারিতে এর দৃশ্যধারণ শুরু হওয়ার কথা ছিল। নানা কারণে সেটি হয়নি।
আগামী ২৪ মার্চ শুরু হবে সিনেমার দৃশ্যধারণ। পরিচালকের সঙ্গে যৌথভাবে সিনেমার চিত্রনাট্য করেছেন আদনান আদিব খান। যিনি ‘তুফান’ সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছিলেন। ‘তাণ্ডব’-এ নায়িকাকে এখনও জানাননি নির্মাতা। তাই সিনেমার নায়িকা নিয়ে বাড়তি উত্তেজনা তৈরি হয়েছে শাকিব ভক্তদের মনে। একটি সূত্রে জানা যায়, ‘তাণ্ডব’ সিনেমায় অভিনয় করবেন নন্দিত অভিনেত্রী জয়া আহসান।
২০১৩ সালে পূর্ণদৈর্ঘ্য ‘প্রেমকাহিনি’ সিনেমায় অভিনয়ের পর প্রায় এক যুগ পর একসঙ্গে অভিনয় করতে পারেন শাকিব ও জয়া। জানা যায়, এ সিনেমায় শুধু জয়াই নয়, সঙ্গে থাকবেন আরও একজন দেশি নায়িকা। তবে তাঁর নাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আইটেম গানেও চমক হিসেবে হাজির হবেন জনপ্রিয় আরও এক চিত্রনায়িকা। চলতি বছরের ঈদুল আজহায় প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির কথা রয়েছে সিনেমাটি। গল্প প্রসঙ্গেও কথা বলা বারণ বলে জানালেন রাফী।
যখন ‘তাণ্ডব’ সিনেমার ঘোষণা দেওয়া হয় ওই সময় তিনি বলেছিলেন, আমাদের ঢালিউড দর্শক এমন সিনেমার গল্প আগে দেখেনি, চিন্তাই করতে পারবে না এবার “তাণ্ডব’-এ কী ঘটবে। এবার তুফান সিনেমার চেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। দর্শক এই সময়ে যে ধরনের সিনেমা দেখতে চান এটি তেমনই। সিনেমার ফাইট ডিরেক্টর ও অনেক কলাকুশলী থাকবেন বিদেশের। সিনেমাটি নিয়ে আমি খুবই এক্সসাইটেড। দর্শকও নতুনরূপে দেখবে শাকিব খানকে। আশা করছি, দর্শক বড় আয়োজনের একটি সিনেমা উপহার পেতে যাচ্ছেন।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে ইসরায়েলের রাস্তায় বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনের গাজায় নতুন করে যুদ্ধবিরতির দাবিতে ইসরায়েলের রাস্তায় নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভকে ঘিরে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো বন্ধ করা হয়। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করেছেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকার রাজনৈতিক কারণে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। গাজায় এখনও হামাসের কাছে জিম্মি থাকা ৫৯ জনের পরিণতি নিয়ে ভাবছে না। জিম্মিদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, এখনো গাজায় অন্তত ৫৯ ইসরায়েলি জন বন্দি আছেন। যাদের ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর বন্দি করেছিলেন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী হামাস। এর মধ্যে ২০ জন এখনো জীবিত আছে বলে খবর পাওয়া গেছে। নেতানিয়াহু সংঘর্ষ-বিরতির চুক্তি ভঙ্গ করে নতুন করে গাজায় অভিযান চালানোয় জীবিত বন্দিদেরও মেরে ফেলা হবে বলে মনে করছেন বিক্ষোভকারীরা। সংঘর্ষ-বিরতি শুরু হওয়ার পর অধিকাংশ বন্দিকেই হস্তান্তর করেছে হামাস। সকলে ফিরে আসার আগেই নেতানিয়াহু নতুন করে আক্রমণ শুরু করায় বিরক্ত দেশের একটি বড় অংশের মানুষ। সম্প্রতি একটি জনমত সমীক্ষাও করা হয়েছিল। সেখানে দেখা গেছে, দেশের অধিকাংশ মানুষ চান, লড়াই বন্ধ করে বন্দি প্রত্যার্পণ নিয়ে আরো বেশি আলোচনা চালাক সরকার।
ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বার’কে বরখাস্ত করার প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে এ বিক্ষোভ শুরু হয় মঙ্গলবার। তবে গাজায় প্রাণঘাতী বিমান হামলা চালিয়ে দুই মাসের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়ে ওঠে। হাজার হাজার মানুষ ইসরায়েলের রাস্তায় নেমেছেন। সরকারের বিরুদ্ধে তারা তীব্র বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। বুধবার হাজার হাজার মানুষ জেরুজালেমের মধ্যাঞ্চলে নেতানিয়াহুর সরকারি বাসভবনের কাছের সড়কগুলোতে অবস্থান নেন। তাঁদের অনেকের হাতে ছিল পতাকা এবং গাজায় এখনও জিম্মি থাকা মানুষদের সমর্থনে লেখা স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড। ‘এখনই জিম্মি মুক্তির চুক্তি করুন’ এমন স্লোগান দিতে থাকেন।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন, হামাসের হাত থেকে সমস্ত বন্দিকে উদ্ধার না করে নতুন করে গাজায় আক্রমণ চালিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভুল করেছেন। দ্রুত এই অভিযান বন্ধের দাবি তুলেছেন বিক্ষোভকারীরা। একইসঙ্গে তারা নেতানিয়াহুর একাধিক সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন। এরই জেরে রনেনকে সরিয়ে দেওয়া হলো বলে মনে করা হচ্ছে। নেতানিয়াহুর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে রনেন একটি তদন্তও শুরু করেছিলেন। অভিযোগ, ইসরায়েলের সঙ্গে কাজ করলেও কাতারে তাদের বেআইনি অর্থের লেনদেন আছে। রোনেন বার’কে বরখাস্তের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওঠে। ওই বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে বরখাস্তের পক্ষে মত দেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, নেতানিয়াহু সরকার দেশের গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে। জেরুজালেম ও তেল আবিব থেকে পুলিশ কমপক্ষে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। আয়োজকেরা বলছেন, বিক্ষোভ কর্মসূচি যেভাবে গতি পাচ্ছে, তাতে আগামী দিনগুলোতে আরও বেশি বিক্ষোভ হতে পারে। যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখতে বিদেশি সরকারগুলোর আহ্বান উপেক্ষা করে সম্প্রতি আকাশ ও স্থলপথে হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। এর মধ্য দিয়ে গত জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ভেস্তে গেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গাজায় গত কয়েক দিনে ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ৬০০ মানুষ নিহত হয়েছেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ওরা নাকাশ পেলেড বলেন, ‘ইসরায়েল তুরস্ক নয়, ইসরায়েল ইরান নয়।’ নেতানিয়াহুর নেওয়া বেশ কিছু সাম্প্রতিক পদক্ষেপকে ইসরায়েলি গণতন্ত্রের জন্য ‘লাল পতাকা’ হিসেবে মন্তব্য করেন তিনি। এর একটি হলো, রোনেন বার’কে বরখাস্ত করার তৎপরতা। আরেকটি হলো, অ্যাটর্নি জেনারেল গ্যালি বাহারাভ মিয়ারাকে বরখাস্ত করার তৎপরতা। মিয়ারা যুক্তি দেখিয়েছেন, বারকে তাঁর পদ থেকে উৎখাত করা হলে তা অবৈধ হতে পারে।