চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ভিটে-বাড়ির সীমানা বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে সুবীর চক্রবর্তী (৩৫) নামে এক দর্জি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তার বড় ভাই প্রবীর চক্রবর্তী (৩৮) আহত হয়েছেন। আহত প্রবীর পেশায় একজন পল্লী চিকিৎসক।

শুক্রবার রাতে সাতকানিয়া উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফকিরখীল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত দুই ভাইকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুবীর চক্রবর্তীকে মৃত ঘোষণা করেন। 

প্রতিপক্ষের হামলায় আহত প্রবীর চক্রবর্তী জানান, ঘটনার রাতে তারা দুই ভাই দোকান বন্ধ করে মোটরসাইকেলে বাড়ির পাশের এক মহোৎসবে যাচ্ছিলেন। ফকিরখীল এলাকায় পৌঁছালে দীপক দাসের নির্দেশে রূপক দাস, দীপ্ত দাস, সুমিত দাস ও অলক দাসসহ ১০-১২ জন তাদের পথরোধ করে।

প্রবীর আরও বলেন, প্রথমে আমাদের সঙ্গে তর্কাতর্কি হয়। এরপর তারা লাঠি, দা ও ছুরি দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। রূপক আমাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করতে গেলে আমি হাত দিয়ে ঠেকিয়ে দিই। পরে ভাইকে পালিয়ে যেতে বলি, কিন্তু রূপক ভাইয়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বুকের ওপর উঠে ছুরিকাঘাত করতে থাকে। চিৎকার করলে এলাকাবাসী এগিয়ে আসে, কিন্তু ততক্ষণে সুবীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। 

স্থানীয়রা জানান, সুবীর ও প্রবীর চক্রবর্তীর পরিবারের সঙ্গে রূপক দাসদের পরিবারের দীর্ঘদিনের ভিটে-বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। ২০২৩ সালে আদালত সুবীরদের পক্ষে রায় দিয়ে লাল নিশান উড়িয়ে তাদের জায়গা বুঝিয়ে দেয়। তবে পুরনো শত্রুতা থেকেই দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের কয়েকজন আহত হন। সেই ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

জাহেদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে সীমানা বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। হামলার ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রব র

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় মসজিদে সংঘর্ষ ও হাতুড়িপেটা, আহত ৬

 ফতুল্লায় একটি মসজিদের খতিবকে অপসারণ করাকে কেন্দ্র করে মসজিদের ভেতরে দুই গ্রæপের সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় দু'পক্ষের লোকজন চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি সহ একে অপরকে হাতুড়িপেটা করেন।

এতে খতিব সহ ছয়জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাতে ফতুল্লার ভুঁইগড় রূপায়ন টাউন জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটে। ইতিমধ্যে মসজিদের ভেতরে সংঘর্ষ ও হাতুড়িপেটার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। 

রূপায়ন টাউনের বাসিন্দারা জানান, মসজিদের খতিব মাওলানা জামাল উদ্দিন বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে তৎকালিন পরিচালনা কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। এরপর থেকে তিনি খতিবের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

স¤প্রতি স্থানীয় বিএনপির দলীয় লোকজন নতুন করে মসজিদ পরিচালনা কমিটি গঠন করেন এবং জামাল উদ্দিনকে অপসারণ করে নতুন খতিব নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন। 

তারা আরও জানান, বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত দশটায় তারাবির নামাজ শেষে নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দ খতিব জামাল উদ্দিনকে অপসারণের চিঠি দিলে পুরাতন কমিটির লোকজন এর প্রতিবাদ করেন। এসময় নতুন কমিটির লোকজন উত্তেজিত হয়ে তাদের উপর হামলা করলে দু'পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। 

এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন মসজিদের ভেতরে চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি সহ একে অপরকে হাতুড়িপেটা করেন। মসজিদের দরজা জানালা ভাংচুরও করা হয়। এসময় নারী সহ বেশ কয়েকজন মুসুল্লি মিলে সংঘর্ষ থামানো চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।

এ ঘটনায় মসজিদের খতিব জামাল উদ্দিন সহ ছয়জন আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শহরের ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। 

শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুরে জুম্মার নামাজের পরে আহতরা এ ঘটনার বিচার দাবি করলে মসজিদে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ফতুল্লা থানা পুলিশ গিয়ে দু'পক্ষের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। 

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরীফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমি থানা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে উভয়পক্ষের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করি।

এ ঘটনায় দু'পক্ষই থানায় পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। অভিভোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে বিষয়টি সমাধানের পর্যায়ে আছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফতুল্লায় মসজিদে সংঘর্ষ ও হাতুড়িপেটা, আহত ৬