বক্সিং কিংবদন্তির জর্জ ফোরম্যান মারা গেছেন। দু’বারের হেভিওয়েট এ বিশ্বচ‍্যাম্পিয়ন শুক্রবার তাঁর বাড়িতেই মারা যান। তাঁর পরিবার এই খবর জানিয়েছে। 

শুক্রবার তাঁর মৃত্যুর সংবাদ পরিবারের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানানো হয়েছে। ফোরম্যানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম পেজে তাঁর পরিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘‌হৃদয়বিদারক খবর। গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমাদের প্রিয় জর্জ এডওয়ার্ড ফোরম্যান আর নেই। ২১ মার্চ তিনি মারা গেছেন।’‌ খবর- বিবিসি

ফোরম্যানের বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। ১৯৬৮ সালের মেক্সিকো অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয়ী ফোরম্যান ছিলেন দুবারের হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন। জায়গা পেয়েছিলেন আন্তর্জাতিক বক্সিংয়ের হল অব ফেমে।

বক্সিংয়ের আরেক কিংবদন্তি মোহম্মদ আলির সঙ্গে ‘রাম্বল ইন দ্য জাঙ্গল’ এ লড়েছিলেন জর্জ ফোরম্যান। ১৯৭৩ সালে ফোরম্যান প্রথম হেভিওয়েট বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হন। হারিয়েছিলেন অপ্রতিরোধ্য জো ফ্রেজিয়ারকে। কিন্তু ১৯৭৪ সালে তিনি হেরে গিয়েছিলেন কিংবদন্তি মহম্মদ আলির কাছে। এরপর আচমকাই তিনি বক্সিং থেকে উধাও হয়ে যান। রিংয়ে আচমকাই ফেরেন ১৯৯৪ সালে। সেবার হেভিওয়েটে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হন মাইকেল মুরেরকে হারিয়ে। 

সবচেয়ে বেশি বয়সে হেভিওয়েটে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড ফোরম্যানের দখলে। খেতাব জিতেছিলেন ৪৬ বছর ১৬৯ দিন বয়সে। তাঁর কেরিয়ার রেকর্ড ৭৬–৫। তার মধ্যে ছিল ৬৮টি নকআউট। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

পাবনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদসহ ১৬৪ জনের নামে মামলা

সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে পাবনার বেড়া মডেল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। সাঁথিয়া উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের সেলিম হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, গত শনিবার মামলাটি রেকর্ড হয়েছে। তবে গতকাল রোববার রাতে মামলাটির কথা জানাজানি হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১ এপ্রিল বিকেল পাঁচটার দিকে বেড়া পৌর এলাকার কাগমাইরপাড়ায় আবু সাইয়িদের নিজ বাড়িতে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আবু সাইয়িদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ আসামি উপস্থিত ছিলেন। ওই সমাবেশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন এলাকার সদস্য ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা–কমীরা রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার ষড়যন্ত্র করেন। সেখানে প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র, পিস্তল, বন্দুকসহ বিভিন্ন ধরনের দেশি অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের জন্য দেশবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। মামলার সাক্ষী ও এলাকার লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে আসামিদের নাম–ঠিকানা জোগাড় করতে সময় লাগায় এজাহার দায়ের করতে দেরি হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৬৪ জন আসামির মধ্যে আবু সাইয়িদকে এক নম্বর ও সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র মিরাজুল ইসলামকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় সংসদের পাবনা-১ (সাঁথিয়া ও বেড়ার একাংশ) আসনের আওতাধীন বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদেরও আসামি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অলিউর রহমান বলেন, ‘এটি মামলা হিসেবে রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আবু সাইয়িদ ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পাবনা-১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য থাকার পাশাপাশি তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। একপর্যায়ে আবু সাইয়িদ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন। ২০১৮ সালে তিনি গণফোরামে যোগ দেন এবং ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পাবনা-১ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। সেই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হকের কাছে পরাজিত হন।

আবু সাইয়িদ ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পাবনা-১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য থাকার পাশাপাশি তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০০৮ সালে তাঁকে বাদ দিয়ে শামসুল হক টুকুকে (সাবেক ডেপুটি স্পিকার) আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়। একপর্যায়ে আবু সাইয়িদ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন। ২০১৮ সালে তিনি গণফোরামে যোগ দেন এবং ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পাবনা-১ আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। সেই নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হকের কাছে পরাজিত হন। এরপর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে গণফোরামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন। সেই নির্বাচনেও তিনি শামসুল হকের কাছে পরাজিত হন।

গত বছর ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি ঢাকা থেকে তাঁর নির্বাচনী এলাকা বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলায় মাঝেমধ্যে আসতেন। এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে তিনি বেড়ায় এসে কাগমাইরপাড়ায় অবস্থিত তাঁর নিজ বাড়িতে ঈদের পরদিন (১ এপ্রিল) শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভার আয়াজন করেন। সেই সভায় তাঁর অনুসারীসহ আওয়ামী লীগের একাংশের অনেক নেতা–কর্মী যোগ দেন। এতে জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতা–কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। আবু সাইয়িদের নেতৃত্বে তাঁর বাড়িতে সমাবেশের প্রতিবাদে বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলায় একাধিক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন জামায়াতের নেতা–কর্মীরা। তাঁরা আবু সাইয়িদকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ