চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় বন্য হাতির আক্রমণে তিন মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত শিশুর লাশ নিয়ে পেকুয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী (পিএবি) সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আজ সকাল ৬টা থেকে উপজেলার কেইপিজেড গেট এলাকায় সড়ক অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। এ কারণে সড়কটিতে দীর্ঘ যানজট দেখা দিয়েছে।

এর আগে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার বড় উঠানের শাহমীরপুর জমাদারপাড়া এলাকায় বন্য হাতির আক্রমণে শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুর নাম মো.

আরমান জাওয়াদ। সে ওই এলাকার মোহাম্মদ ইব্রাহীমের ছেলে। হাতির আক্রমণে শিশুটির মা খজিমা বেগমও (৩০) গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাতে একটি বন্য হাতি মোহাম্মদ ইব্রাহীমের টিনের ঘরে ভাঙচুর শুরু করলে তাঁর স্ত্রী খজিমা বেগম শিশু জাওয়াদকে নিয়ে ঘর থেকে বের হন। এ সময় বন্য হাতিটি তাঁকে শুঁড় দিয়ে তুলে আছাড় দেয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই শিশুটির মৃত্যু হয়। এলাকার শাহাজাহান নামের এক ব্যক্তির ঘরেও হামলা করে বন্য হাতিটি।

সকালে এ ঘটনায় এলাকাবাসী শিশুটির লাশ নিয়ে কেইপিজেড এলাকায় এসে পিএবি সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এলাকা থেকে বন্য হাতিটি সরানোর দাবি জানান তাঁরা। অবরোধের কারণে সড়কের উভয় পাশে প্রায় দীর্ঘ আট কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত রয়েছে।

আন্দোলনকারীদের একজন ওয়াসিম আকরাম বলেন, ‘হাতিটি এলাকা থেকে সরিয়ে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা সড়ক ছাড়ব না। উপজেলা প্রশাসন, বন বিভাগ ও কেইপিজেডের লোকজন এসে এ বিষয়ে নিশ্চয়তা দিলে সড়ক ছাড়ব।’

সড়ক অবরোধের সময় শিশুটির লাশও নিয়ে আসা হয়

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ বন য হ ত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু, স্ত্রী কারাগারে

চট্টগ্রামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত জাফর আলী চৌধুরী (৪৩) ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার উত্তর ইদিলপুর গ্রামের জানে আলম চৌধুরীর ছেলে। তিনি আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের কদমতলী শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ। গ্রেপ্তার আসামি হলেন- রোমানা ইসলাম। তিনি নগরের কোতোয়ালী থানার জেলরোড এলাকার মো. ফয়জুল ইসলামের মেয়ে। স্বামীর সঙ্গে নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ৯ নম্বর সড়কের একটি ভবনের ফ্ল্যাটে থাকতেন। স্ত্রীর অভিযোগ, তার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। তবে জাফর আলীর স্বজনদের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার মাথার পেছনে ফোলা জখম, কানে জমাটবাঁধা রক্ত ও হাতে নখের আঁচড় ছিল। এ ঘটনায় গতকাল রোববার নিহতের ছোট ভাই আবুল হাসনাত বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী জাফর আলী চৌধুরীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন স্ত্রী রোমানা ইসলাম। তার শ্বশুরও তাকে বিভিন্ন সময়ে চাকরিচ্যুত ও নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দেয়। শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে তাকে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয়েছিল বলেও ছোট ভাইকে জানিয়েছিলেন। জাফরের দুই শ্যালক শরীফুল ইসলাম এবং আরিফুল ইসলাম বিভিন্নসময় তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।

এজাহারে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যায় রোমানা ইসলাম তার ননদ রোকেয়াকে ফোন করে জানান, জাফর অসুস্থ এবং তার কান দিয়ে রক্ত পড়ছে। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসতে বলেন। বড় বোন রোকেয়া ও তার ছেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার নিথর মরদেহ দেখতে পান। এরমধ্যে লাশ রেখে শ্বশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে যান। বাদী আবুল হাসনাতের অভিযোগ, ‘পারিবারিক কলহের জেরে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট থেকে ৬টা ৫৫ মিনিট সময়ের মধ্যে জাফরকে তার স্ত্রী রোমানা ইসলাম নিজ হাতে কিংবা অন্য কারও সাহায্যে হত্যা করেছেন।’

চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘নিহতের মাথায় ফোলা রয়েছে ও কানে রক্ত জমাট বাঁধা আছে। খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। স্ত্রীর দাবি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু তিনি সেটি পুলিশকে না জানিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। শরীরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাই নিহতের ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, স্ত্রী মুখ খুলছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে কিভাবে মারা গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ