খুলনায় প্রকাশ্যে অস্ত্র মহড়া, ফাঁকা গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ
Published: 22nd, March 2025 GMT
খুলনা মহানগরের ব্যস্ততম সাতরাস্তা মোড়ে প্রকাশ্যে অস্ত্র মহড়া দিয়েছে একদল সন্ত্রাসী। সেখানে তারা ফাঁকা গুলি ছুড়ে উল্লাস প্রকাশ করে ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। গতকাল শুক্রবার রাত সোয়া ১১টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে।
প্রকাশ্যে এভাবে সশস্ত্র মহড়া ও গুলি ছোড়ার ঘটনায় নগরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। তবে সন্ত্রাসীদের ধরতে রাতেই বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
খুলনা নগরের সাতরাস্তা মোড়টিতে প্রায় সারা রাতই মানুষের সমাগম থাকে। সেখানে বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার পরিবহন কাউন্টার আছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, নগরের শান্তিধাম মোড় থেকে ৮-১০টি মোটরসাইকেলে করে একদল অস্ত্রধারী সাতরাস্তা মোড়ে আসে। সেখানে এসে তারা মোটরসাইকেল থামিয়ে কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এরপর কয়েকজন মোটরসাইকেল থেকে নেমে উল্লাস প্রকাশ করে ও গুলির খোসা কুড়িয়ে নেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা সেখানে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চলে যায়।
ঘটনার পর খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানওয়ার হুসাইন বলেন, ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে। দ্রুত তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। ঘটনার পর নগরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে টহল জোরদার করা হয়েছে। কারা ও কেন ওই ঘটনা ঘটিয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদ সামনে রেখে সেমাইয়ের কারখানায় ব্যস্ততা
সারা বছরই দেশে সেমাই উৎপাদন ও বিক্রি হয়। ঈদুল ফিতরের সময় উৎপাদন আর বিক্রি বছরের বাকি ১১ মাসকে ছাপিয়ে যায়। দেশের অনেক জেলাতেই সেমাই উৎপাদন হয়। কিশোরগঞ্জে বিসিক শিল্পনগরীর কারখানায় সেমাই উৎপাদন করছে ‘এমএম খান ফুড প্রডাক্টস’ নামে একটি ফাস্টফুড প্রতিষ্ঠান। ঈদে স্থানীয় চাহিদা মেটাতে তিন টন সেমাই উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
গতকাল বুধবার সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের বিসিক শিল্পনগরীতে গিয়ে দেখা গেছে, এমএম খান ফুড প্রডাক্টসের কারখানায় সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রায় অর্ধশত শ্রমিক। একদল কর্মী মেশিনে সেমাইয়ের ‘খামির’ তৈরি করছেন। কিছু কর্মী খামির দিয়ে কাঁচা সেমাই তৈরি করছেন। একদল কর্মী তেলে সেমাই ভাজছেন। কয়েকজন সেই ভাজা সেমাই প্যাকেটজাত করছেন। ম্যাকের কারখানায় সেমাই ছাড়াও বিস্কুট, পাউরুটি, স্যান্ডউইচ, কেক, চানাচুরসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী তৈরি করা হয়। কিন্তু ঈদকে সামনে রেখে সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত কারখানার শ্রমিকরা।
কারখানার কর্মীদের কাজের তদারক করেন আব্দুল আউয়াল। তিনি জানালেন, ময়দা, ডালডা আর তেল দিয়েই মূলত সেমাই তৈরি করা হয়। ম্যাকের কারখানায় লাচ্ছা সেমাই আর বাংলা লাচ্ছা সেমাই তৈরি করা হয়। কারখানার শ্রমিকরা যেন পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখেন সেদিকে তিনি কঠোরভাবে নজর রাখেন। প্রত্যেক কর্মী মাথা ঢেকে, মাস্ক আর হ্যান্ড গ্লোভস পরে কাজ করেন। আব্দুল আউয়াল বলেন, তাদের কারখানায় লাচ্ছা সেমাই আর বাংলা লাচ্ছা সেমাই তৈরি করা হয়। ২০০ গ্রাম বাংলা লাচ্ছার খুচরা মূল্য ৪৫ টাকা, আর ২০০ গ্রাম লাচ্ছা সেমাইয়ের খুচরা মূল্য ৪০ টাকা।
শহরের স্টেশন রোডের নিয়ামত ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের মালিক মিজানুর রহমান শাহীন জানান, তারা এতদিন পাকিস্তানের কুলসন সেমাই বিক্রি করতেন। এখন কুলসনের পাশাপাশি স্থানীয় এমএম খান ফুড প্রডাক্টসের সেমাই বিক্রি করছেন। ক্রেতাদের কাছে এর বেশ চাহিদাও রয়েছে।
এমএম খান ফুড প্রডাক্টস কারখানার ব্যবস্থাপক সুদীপ বিশ্বাস জানালেন, তারা সারাবছরই সেমাই উৎপাদন করেন। তবে দুই ঈদে বাজারে চাহিদা থাকায় উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে ঈদুল ফিতরের সময় সর্বোচ্চ পরিমাণ সেমাই উৎপাদন হয়। তাদের কারখানা থেকে কিশোরগঞ্জ জেলার চাহিদা মিটিয়ে ময়মনসিংহেও সেমাই সরবরাহ করা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাজারে সেমাই বিক্রিতে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হয় তাদের। এ কারণে ম্যাকের কারখানায় উৎপাদিত সেমাইয়ে স্বাদ ও গুণগত মানের দিকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।