নিজেদের ম্যাপিং সেবা আরও উন্নত করতে সার্ভেয়ার নামের নতুন অ্যাপ উন্মুক্ত করেছে অ্যাপল। অ্যাপটি চালু করে ব্যবহারকারীরা সহজেই তাদের পার্শ্ববর্তী ভৌগোলিক ও অবকাঠামোগত তথ্য সংগ্রহ করে অ্যাপলের কাছে পাঠাতে পারবেন। এরপর তথ্যগুলো নিজেদের ম্যাপস সেবায় যুক্ত করে বর্তমানের তুলনায় আরও নির্ভুলভাবে পথের দিকনির্দেশনা দেখাবে অ্যাপল।

সার্ভেয়ার অ্যাপটির মাধ্যমে মূলত রাস্তার নামফলক, ট্রাফিক সিগন্যালসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর ছবি ও তথ্য সংগ্রহ করবে অ্যাপল। এর ফলে অ্যাপল ম্যাপস ব্যবহারকারীরা বর্তমানের তুলনায় নির্ভুল নেভিগেশন সুবিধা পাবেন। অ্যাপ স্টোর থেকে বিনা মূল্যে নামানো গেলেও সার্ভেয়ার অ্যাপটি সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য নয়। এটি মূলত অ্যাপলের নির্দিষ্ট অংশীদার প্রতিষ্ঠানের জন্য তৈরি করা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে সার্ভেয়ার অ্যাপটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রে চালু করা হয়েছে। অ্যাপটি চালুর পর নির্দিষ্ট কাজ বাছাই করলেই তথ্য সংগ্রহের প্ল্যাটফর্ম প্রিমাইজ চালু হবে। প্রিমাইজ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ছোট ছোট কাজ করে অর্থ উপার্জন করা যায়। এর ফলে ধারণা করা হচ্ছে, অ্যাপলের কাছে পার্শ্ববর্তী ভৌগোলিক ও অবকাঠামোগত তথ্য জমা দিয়ে অর্থ বা পুরস্কার পাওয়া যাবে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি অ্যাপল।

প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাকরিউমার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যবহারকারী যখন প্রিমাইজ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ম্যাপিং-সংক্রান্ত কোনো কাজ গ্রহণ করবেন, তখন তাঁকে সার্ভেয়ার অ্যাপ ব্যবহার করে নির্দিষ্ট রাস্তায় চলাচলের সময় গাড়িতে মোবাইল যুক্ত করে ল্যান্ডস্কেপ মোডে ছবি তুলতে হবে।

সূত্র: নিউজ ১৮

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘তিনি আন্তর্জাতিক মানের আম্পায়ার হলে, আমিও আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়’

‘অধিনায়ক, সতীর্থ, প্রতিপক্ষ এবং আম্পায়ারদের কর্তৃত্বকে সম্মান কর। স্বচ্ছতার সঙ্গে খেল। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নাও।’ –ক্রিকেটারদের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের কোড অব কন্ডাক্টের অন্যতম অংশ এগুলো। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখান। সাকিব আল হাসানের মতো কিংবদন্তি ক্রিকেটারও বিশ্ব নিন্দনীয় কাজ করতে পেরেছিলেন আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে। ২০২১ সালে লাথি মেরে ভেঙে ছিলেন স্টাম্প। বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠার পরও মাত্র চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল মোহামেডানের সাবেক অধিনায়ককে। 

ক্রিকেট মাঠের অগ্রজ নেতিবাচক যে দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন, অনুজরা তাই অনুসরণ করছেন। আম্পায়ারদের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করে এবারও আলোচনায় মোহামেডানের অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়। আন্তর্জাতিক এ ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেটে আইসিসির এলিট আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদি হয়েছেন। বিশ্বের কাছে নন্দিত এ আম্পায়ারকে নীতিজ্ঞান দিতেও ছাড়েননি। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হচ্ছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার ও মোহামেডানের অধিনায়ক হৃদয়। গতকাল শুনানি শেষে এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা সুপারিশ করেন ম্যাচ রেফারি নিয়ামুর রশীদ রাহুল। 

শাস্তির শুনানিতে গিয়েও হৃদয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ রেফারির রাহুলের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন বলে অভিযোগ। শাস্তির ধারা দেওয়া হলে রাহুলকে পড়ে শোনাতে বলেন তিনি। ম্যাচ রেফারি আপত্তি জানালে, মোহামেডানের ম্যানেজার সাজ্জাদ হোসেন শিপন পড়ে শোনান। আংশিক চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে শাস্তি মেনে নেন হৃদয়। যদিও মোহামেডান চেষ্টা করছে এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার। বিসিবি আম্পায়ার্স বিভাগকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে মোহামেডানের ম্যানেজার সাজ্জাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘যা ঘটেছে তাতে মোহামেডান অধিনায়ককে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা যায় না। অধিনায়ক নিয়মের ভেতরে থেকে প্রতিবাদ করতে পারেন।’ 

আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে আম্পায়াররা এমন কী করেছিলেন যে ক্রিকেটারদের বিতণ্ডায় জড়াতে হলো। আবাহনীর ব্যাটার মোহাম্মদ মিঠুনের এলবিডব্লিউ চাওয়া হলে প্রত্যাখ্যান করেন আন্তর্জাতিক আম্পায়ার তানভির আহমেদ। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে বিতণ্ডায় জড়ান বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। আম্পায়ার সৈকত প্রতিবাদ জানালে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান অধিনায়ক হৃদয়। আবাহনীর আরেক ব্যাটার পারভেজ হোসেন ইমনকে এলবিডব্লিউ না দেওয়ায় দ্বিতীয়বার প্রতিবাদী হয় মোহামেডান। 

এই দুই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ফিল্ড আম্পায়াররা রিপোর্ট ফাইল করেন। ম্যাচ রেফারি রাহুল এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করার সুপারিশ করেছিলেন। মোহামেডান ম্যানেজার সাজ্জাদের অনুরোধে জরিমানা বাদ দেওয়া হলেও এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ বহাল রয়েছে। 

মোহামেডান অধিনায়ক হৃদয় যে আম্পায়ার সৈকতের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন তা প্রকাশ পেল ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে, ‘আমি যদি ভুল করি স্বীকার করব। ভুলটা স্বীকার না করে আপনি যদি মনে করেন এটা ভুল না, তাহলে হয় না। আমরা তাঁকে সম্মান করি, তিনি আন্তর্জাতিক আম্পায়ার, আমরাও আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়। আজকে যারা খেলেছে অধিকাংশ আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়। এরকম বড় ম্যাচে একটা দুইটা ভুল সিদ্ধান্ত অনেক কিছু বড় একটা ব্যবধান তৈরি করে দিতে পারে। এটা যদি অন্যদিকে যায় তাহলে অবশ্যই আমি মুখ খুলব।’ 

আন্তর্জাতিক ম্যাচেও আম্পায়ারদের সঙ্গে অনুরূপ আচরণ করেন কিনা জানতে চাওয়া হলে হৃদয় বলেন, ‘শুধু খেলোয়াড়ের ওপর দোষ দিলে হবে না। আপনারা দেখেন আমাদের আম্পায়ারিং বিভাগের এক-দুইজন ছাড়া যে খুব ভালো করে এ রকম না। যখন জাস্টিফাই করবেন তখন আমার মনে হয় দুই দিক থেকে জাস্টিফাই করা উচিত।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ