আওয়ামী লীগের ঘুড়ি আর বাংলাদেশে উড়তে দেওয়া হবে না: উপদেষ্টা মাহফুজ আলম
Published: 21st, March 2025 GMT
আওয়ামী লীগকে বিদেশ থেকে আসা ‘প্রতিস্থাপিত শক্তি’ উল্লেখ করে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগের ঘুড়ি আর বাংলাদেশে উড়তে দেওয়া হবে না।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের স্মরণে শুক্রবার রাজধানীতে আয়োজিত এক আলোচনা ও ইফতার অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এ কথা বলেন।
মাহফুজ আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগ কোনো দেশীয় শক্তি নয় বরং এটি মূলত বিদেশ থেকে আসা একটি ‘প্রতিস্থাপিত শক্তি’। তিনি বলেন, ‘.
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, যখনই আওয়ামী লীগ সুযোগ পাবে, তখন অবশ্যই তা দেশের সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে যাবে। তিনি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছি। আমাদের মনে রাখতে হবে যে আমরা যে জয় অর্জন করেছি, তা রাজনৈতিক ও ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। যদি আমরা ঐক্য বজায় না রাখি এবং রাজনৈতিকভাবে লড়াই চালিয়ে না যাই, তাহলে আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসবে।’
নির্বাচন সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে মাহফুজ আলম বলেন, নির্বাচন নির্ধারিত সময়েই ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি সবাইকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। এটি এই বছরের শেষের দিকে, ডিসেম্বরে হওয়ার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যেই একটি সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং সেই সময়সীমার মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সবারই এর জন্য প্রস্তুতি শুরু করা উচিত।
তথ্য উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন যে রাজনৈতিক দলগুলো যদি দায়িত্বশীলভাবে কাজ করে, নাশকতা বন্ধ করে এবং রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো যথাযথভাবে সহযোগিতা করে, তাহলে সঠিক সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শুরু হচ্ছে মাছ ধরার উপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা, খুশি জেলেরা
ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের বংশবিস্তার, বেড়ে ওঠা ও টেকসই আহরণের জন্য ২০১৫ সাল হতে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে সরকার। ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকায় এ অবরোধের বিরোধিতা করে আসছিলেন জেলেরা।
প্রতিবেশী জেলেদের আগ্রাসন বন্ধে পালন করেন সময়সীমা কমিয়ে পেছানোর জন্য মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি। তাই জেলেদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবছর ভারতের সঙ্গে মিল রেখে ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার।
অবরোধের সময়সীমা কমিয়ে পুনর্বিন্যাস করায় উচ্ছ্বসিত রয়েছেন জেলেরা। তাই এ অবরোধকে স্বাগত জানিয়ে ইতোমধ্যে অনেক জেলে গভীর সমুদ্রে থেকে তীরে ফিরেছেন। এছাড়া এখনো যে সকল জেলেরা গভীর সমুদ্রে রয়েছেন তারা ১৪ তারিখ সন্ধ্যার মধ্যে তীরে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন জেলেরা। তবে অবরোকালীন সময়ে সরকার কর্তৃক প্রদেয় প্রণোদনার পরিমাণ বাড়ানো, নিষেধাজ্ঞা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে প্রণোদনা প্রদানের এবং সাগরে প্রশাসনের তৎপরতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন জেলেরা।
মহিপুর ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ্ব জেলে আমির হোসেন বলেন, “২০১৫ সাল থেকে ৬৫ দিনের মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আসছে সরকার। এ সময় ভারতের অবরোধ না থাকায় তারা আমাদের দেশের জলসীমায় প্রবেশ করে মাছ শিকার করে নিয়ে যেত। অবরোধের পর সম গভীর সমুদ্রে গিয়ে আমরা ফিরতাম খালি হাতে। আমরা শুরু থেকেই এর প্রতিবাদ করে আসছি। তবে এবছর সরকার সময়সীমা এক সপ্তাহ কমিয়েছে এবং ভারতের সঙ্গে মিল রেখে সময়সীমা পিছিয়ে দিয়েছে। এতে আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। আশা করছি অবরোধের পর আমাদের জালে কাঙ্ক্ষিত মাছ ধরা পড়বে। সরকারের কাছে অনুরোধ আমাদের যেন অবরোধ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে চাল দেওয়া হয়।”
লতাচাপলী ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের চল্লিশোর্ধ্ব জেলে মোসলেম মিয়া বলেন, “আমরা শুনেছি এই ৫৮ দিনে মাত্র ৭৭ কেজি করে চাল পাবো। আমার পরিবার ছয় সদস্যের। এ চাল আসলে অপ্রতুল। তাই সরকারে কাছে অনুরোধ আমাদের যেন চালের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া অনেক সময় প্রকৃত জেলেরা চাল পায় না। আমরা যারা নিবন্ধিত জেলে রয়েছি আমরা যেন চাল পাই, সে ব্যবস্থা যেন করা হয়।”
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, “জেলায় প্রায় ৮১ হাজার জেলে রয়েছে। এর মধ্যে সমুদ্রগামী জেলে রয়েছে ৪৭ হাজার। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে প্রত্যেক জেলেকে ৭৭ কেজি করে চাল প্রদান করা হবে। এছাড়া অবরোধ শতভাগ সফল করতে আমাদের প্রচারণা চলছে। অবরোধকালীন সময়ে সমুদ্রে নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশ টহল পরিচালনা করবেন।”
ঢাকা/ইমরান/টিপু