সিরাজগঞ্জের তাড়াশ-কাটাগাড়ী আঞ্চলিক সড়কের উত্তর ওয়াপদা বাঁধ-সংলগ্ন এলাকায় সেতু নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। কিন্তু অর্ধেকের কম কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লাপাত্তা হয়ে গেছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী চারটি ইউনিয়নের হাজারও বাসিন্দা। যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় নাটোরের সিংড়া ও বগুড়ার শেরপুরের সঙ্গে তাড়াশের একাংশের যোগাযোগে বেগ পেতে হচ্ছে এলাকার মানুষের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেতুর নির্মাণকাজ গত ৩১ জানুয়ারি শেষ করার কথা ছিল। কাজ হয়েছে মাত্র ৪০ থেকে ৪২ শতাংশ। এরপর স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর থেকে কয়েকবার কাজ শেষ করতে তাগাদাপত্র দেওয়া হয়েছে। এতেও ভ্রুক্ষেপ নেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। ফলে প্রায় আড়াই মাস ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে।
সেতুর নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার দাবি তাড়াশ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো.

জাফর ইকবালের। তিনি বলেন, মহিলা ডিগ্রি কলেজ ছাড়াও জে আই টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস মানেজমেন্ট কলেজ, জাফর ইকবাল বালিকা বিদ্যালয়, জাফর ইকবাল উচ্চ বিদ্যালয়, মহিলা মাদ্রাসা, হাফেজিয়া মাদ্রাসা, তা’লিমুল কুরআন নূরানী মডেল মাদ্রাসা রয়েছে সেতু এলাকায়। এসব প্রতিষ্ঠানের হাজারও ছাত্রছাত্রী ঝুঁকি নিয়ে এ সেতু দিয়ে যাতায়াত করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বৃষ্টির মৌসুম আসছে। সেতুর এক পাশে পানিপ্রবাহের পথ বন্ধ রেখে সাময়িক চলাচলের রাস্তা করা হয়েছে। বৃষ্টি শুরু হলে উজান থেকে পানি এলে বিস্তীর্ণ বোরো ফসলের হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে যাবে। তখন নির্মাণকাজ করাও সম্ভব হবে না। এভাবে চললে আরও একটি শুষ্ক মৌসুমের জন্য অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান বেত্রাশিন গ্রামের কলেজশিক্ষক মেহেরুল ইসলাম।
উপজেলা এলজিইডি থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালের জুন মাসে তাড়াশ-কাটাগাড়ি জিসি সড়কের উত্তর ওয়াপদা বাঁধ-সংলগ্ন ৩৩২ মিটার চেইনেজ ও ২০ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৫৫ লাখ ৬১ হাজার টাকা। নওগাঁর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইথেন এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড অ্যান্ড ডন এন্টারপ্রাইজ (জেভি) কাজটি পায়। এ প্রতিষ্ঠান কাজটি না করে নাটোরের বাগাতিপাড়ার ঠিকাদার মো. ওয়াহিদুল ইসলামের কাছে বিক্রি করে দেয়।
গত বছরের জানুয়ারি মাসে সেতু নির্মাণকাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শেষ হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে। এত দিনে পাইলিংয়ের কাজ শেষ করেছেন ঠিকাদার। সর্বশেষ আড়াই মাস ধরে ঠিকাদার ওয়াহিদুল ইসলাম কাজটি বন্ধ রেখে লাপাত্তা হয়ে যান। এতে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে ভারী বা মাঝারি যানবাহন এ সড়ক দিয়ে তাড়াশে ঢুকতে বা বের হতে পারছে না।
ভোগান্তি বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার সেরাজপুর গ্রামের বাসিন্দা আবু সাইদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অস্থায়ী সড়ক দিয়ে চলাচল করা কষ্টকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। এর দু’পাশে বেশ উঁচু, মাঝে নিচু। তুলনামূলক সরু সড়কের ঢালুতে নামার সময় অটোভ্যানের ব্রেক কাজ করে না। উঁচুতে ওঠার সময় ভ্যান থেকে লোকজন নামিয়ে খালি গাড়ি টেনে তুলতে হয়।
এ সড়কে একসঙ্গে দুটি ভ্যান চালানো যায় না। সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় ভ্যান, অটোরিকশাসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি যানবাহনের চালকরা অসুবিধায় আছেন বলে জানান কাটাগাড়ী গ্রামের অটোরিকশাচালক মো. কাওছার হোসেন। তিনি বলেন, এতে আয়েও টান পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল ফকিরের ভাষ্য, সাময়িক চলাচলে সড়কে বহু গাড়ি উল্টে গেছে। আহত হয়েছেন অনেকে। লোকজনের বিপদ দেখে দু’পাশে বাঁশ পুঁতে দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জায়গাটি অরক্ষিত রেখে পালিয়েছে।
নির্মাণকাজের বিল পেতে দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ঠিকাদার মো. ওয়াহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ জন্য সেতুর নির্মাণকাজ ঠিক সময়ে শেষ করা যাচ্ছে না।
কাজ শেষ করতে এক মাসে ঠিকাদারকে দুটি তাগাদাপত্র দেওয়া হয়েছে জানিয়ে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক বলেন, তাড়িতাড়ি নির্মাণকাজ শেষ করতে বললেও তিনি কাজ শুরু করছেন না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক জ শ ষ কর ল ইসল ম ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আর্জেন্টিনার ‘২০০০’তম গোলে হার উরুগুয়ের

বক্সের বাঁ কোনায় দৌড়ের ওপর উরুগুয়ের এক ডিফেন্ডারকে কাটালেন হুলিয়ান আলভারেজ। একটু এগিয়েই ঘুরে গেলেন বলটা নিয়ে। থিয়াগো আলমাদা ততক্ষণে উরুগুয়ে বক্সের সামনে। আলভারেজ হোমওয়ার্ক করে আসার মতো করে পাসটা দেন আলমাদাকে।

শরীরে ২৩ বছরের টগবগে রক্ত আর অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের রোমাঞ্চকর মন থাকলে যা হয়; আলমাদা দূরের পোস্ট তাক করে কিক নেন। সবাইকে স্থির দর্শক বানিয়ে বলটা বাতাসে ভাসতে ভাসতে আশ্রয় নেয় জালে। মাঠের অন্য প্রান্তে আর্জেন্টিনার পোস্টে দাঁড়ানো এমিলিয়ানো মার্তিনেজ গোলটি দেখে এমনভাবে বাঁ হাত নাড়ছিলেন যেন আগুনে ছ্যাকা খেয়েছেন। উরুগুয়ে গোলকিপার সের্হিও রসেটের জন্য তাঁর মায়াও লাগছিল বুঝি। সত্যিই চোখ ধাঁধানো এক গোল!

মন্টেভিডিওর সেন্টেনারিও স্টেডিয়ামে আলমাদার এই গোলই শেষ পর্যন্ত ব্যবধান গড়ে দিয়েছে আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ের মধ্যে। স্বাগতিকদের ১-০ গোলে হারিয়ে দক্ষিণ আমেরিকান বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষস্থান আরও মজবুত হলো আর্জেন্টিনার। শুধু তাই নয়, দেখা পেয়েছে ২০০০তম গোলেরও। আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম ক্লারিন জানিয়েছে, আলমাদার গোলটি আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের ইতিহাসে ২০০০তম গোল।

১৩ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে লিওনেল স্কালোনির দল। সমান ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় ইকুয়েডর। ১৩ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় ব্রাজিলের বিপক্ষে আগামী বুধবার বাংলাদেশ সময় সকালে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। তার আগে প্রস্তুতিটা একদম খারাপ হলো না স্কালোনির দলের। যদিও আলমাদার গোলটি ছাড়া তেমন আকর্ষণীয় ফুটবল খেলতে পারেনি আর্জেন্টিনা। চোটের কারণে লিওনেল মেসি, লাওতারো মার্তিনেজ, পাওলা দিবালাদের অনুপস্থিতি তার একপা কারণ। প্রায় ৫৫ হাজার দর্শকের সামনে উরুগুয়েও তেমন ভালো খেলতে পারেনি। বলার মতো আক্রমণই তৈরি করতে পারেনি মার্সেলো বিয়েলসার দল। তবে আর্জেন্টিনা শেষ বাঁশি বাজার পর ১১ জন নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি। যোগ করা সময়ের ৪ মিনিটের মাথায় ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন আর্জেন্টিনার নিকো গঞ্জালেস।

বিস্তারিত আসছে…।

সম্পর্কিত নিবন্ধ