কূটকৌশলে নির্বাচন বিলম্বিত করার অভিযোগ
Published: 21st, March 2025 GMT
মোংলা বন্দরের কর্মচারীদের সিবিএ সংগঠন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্মচারী সংঘের নির্বাচন ইস্যুতে আবারও শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ-অসন্তোষ-হতাশা বিরাজ করছে। প্রায় ৩ বছর আগে এ সংগঠনের কার্যনির্বাহী পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়া পর অ্যাডহক কমিটির মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে।
অভিযোগ উঠেছে, সাধারণ কর্মচারীরা যখন দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন, তখনই বর্তমান এডহক কমিটি ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বিভিন্ন কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে নানা অজুহাতে নির্বাচন বিলম্বিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। এ অবস্থায় বন্দর কর্তৃপক্ষের সাধারণ কর্মচারী ও শ্রমিকদের মধ্যে সিবিএর নির্বাচন ইস্যুতে ক্ষোভ, অসন্তোষ ও হতাশা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষে কর্মরত ৮ শতাধিক কর্মচারী এই সিবিএর সদস্য। প্রতি দু’বছর অন্তর এখানে ভোটের মাধ্যমে সাধারণ পরিষদ নির্বাচিত হয়। সর্বশেষ বছরখানেক আগে বর্তমান সিবিএর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর নতুন করে নির্বাচনী তপশিল ঘোষণা করা হয়। এর পর বিভিন্ন মামলা-সংক্রান্ত জটিলতায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বশেষ গত বছরের ৮ নভেম্বর খুলনার যুগ্ম শ্রম পরিচালকের নির্দেশনায় ৪৫ দিনের মেয়াদে ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে পারেনি।
প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের শেষ দিকে সিবিএ নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়। তখন আওয়ামী লীগ নেতা খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক প্রভাব বিস্তার ও তাঁর মনোনীতদের সিবিএর কর্তৃত্ব দখলের প্রচেষ্টায় মরিয়া হয়ে ওঠেন। এ নিয়ে পরস্পরবিরোধী কয়েকটি মামলা ও গ্রুপিংয়ে আটকে যায় সিবিএ নির্বাচন। এক পর্যায়ে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে সিবিএ খালেকের প্রভাবমুক্ত হয়। পরে খুলনা যুগ্ম শ্রম অধিদপ্তর দ্রুত নির্বাচনী
কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অ্যাডহক কমিটি গঠন করে। একই সঙ্গে তিন সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। সাধারণ শ্রমিক ও কর্মচারীদের অভিযোগ, চলতি বছর জানুয়ারিতে সিবিএর নির্বাচন প্রস্তুতি শুরু হলেও অ্যাডহক কমিটিতে নানা তদবিরে ঠাঁই নেওয়া আওয়ামী লীগের শ্রমিক সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের স্থানীয় চিহ্নিত কিছু নেতাকর্মী পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন দপ্তরে উড়ো চিঠিসহ মামলার ফাঁদে ফেলে নির্বাচন বানচালে চক্রান্ত চালাচ্ছে।
এ অবস্থায় দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে শ্রমিক-কর্মচারীরা গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিবিএ কার্যালয়ের সামনে কর্মচারীদের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মচারী নেতা রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিবিএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম পল্টু, সরোয়ার হোসেন খোকন, ফকির জাহিদুল ইসলাম, হারুন অর রশিদ, নাসির চৌধুরী, এনামুল হক ও ফজলুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা দ্রুত সময়ে সিবিএ সংগঠনের নির্বাচনের দাবি জানান।
বন্দর শ্রমিক কর্মচারী সংঘের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম পল্টু অভিযোগ করে বলেন, ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর আঞ্চলিক শ্রম অধিদপ্তর ৫ সদস্যবিশিষ্ট অ্যাডহক কমিটি ও তিন সদস্য নির্বাচন পরিচালন কমিটি গঠন করে। অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ সংবিধান অনুযায়ী ৪৫ দিনে শেষ হয়ে গেলেও তারা নির্বাচন নিয়ে কালক্ষেপণ করছে। তিনি আরও বলেন, এসব কারণে অ্যাডহক কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করে দ্রুত নির্বাচন দাবিতে এরই মধ্যে আঞ্চলিক শ্রম অধিদপ্তরে গণস্বাক্ষরিত আবেদন করেছেন বন্দরের সাত শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারী।
এ বিষয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব নুর উদ্দিন টুটুল আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু স্বার্থান্বেষী একটি মহল নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে হীন চক্রান্তে মেতেছে। এতে একদিকে বন্দরের সুনাম নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায় কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়ছে। তবে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তারা তৎপরতা চালাচ্ছেন।
বর্তমান অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক মতিউর রহমান সাকিব দাবি করেন, তারা দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান চাইছেন, কিন্তু আদালতে মামলার কারণে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় নির্বাচন বিলম্বিত হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব এর শ ষ হয় স গঠন সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
মে মাসের মাঝামাঝিতে ডাকসুর নির্বাচন কমিশন গঠন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রোডম্যাপ অনুযায়ী, আগামী মাসের মাঝামাঝি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে।
আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই রোডম্যাপ প্রকাশ করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন মনে করে, ডাকসু প্রশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিক্ষার্থীদেরও ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহ আছে। সে কারণেই বর্তমান প্রশাসন ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ডাকসু নির্বাচন সম্পাদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও সুচারুভাবে আয়োজনের জন্য গৃহীত পদক্ষেপ এবং অগ্রগতিসংবলিত পথনকশা প্রকাশ করা হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা করা হয়, ডাকসু নিয়ে অংশীজনদের আলোচনা শুরু হয় গত বছরের ডিসেম্বরে। একই মাসে ডাকসু সংশোধিত গঠনতন্ত্র চূড়ান্ত করে তা ছাত্রসংগঠনগুলোর কাছে পাঠানো হয়। এর আগে এ বিষয়ে ছয়টি সভা করা হয়। এই গঠনতন্ত্র এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে অনুমোদন হওয়ার অপেক্ষায় আছে।
রোডম্যাপে উল্লেখ করা হয়, গত জানুয়ারি মাসে ‘ডাকসু ইলেকশন কোড অব কনডাক্ট রিভিউ কমিটি’ করা হয়। তারা সাতটি সভা করে। এটিও চূড়ান্ত হওয়ার পর এখন তা সিন্ডিকেটে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
রোডম্যাপ অনুযায়ী, মে মাসের প্রথমার্ধে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। একই সঙ্গে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ অন্যান্য রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে। একই মাসের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোটার তালিকা প্রস্তুত করবে নির্বাচন কমিশন। এরপর নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। তবে কবে এই তফসিল ঘোষণা করা হবে, সে ব্যাপারে রোডম্যাপে কিছু বলা হয়নি।