সমন্বয়কেরা তদবির করে আ.লীগের দোসরদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাচ্ছেন: নুরুল হক
Published: 21st, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা তদবির করে আওয়ামী লীগের দোসরদের রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন, আর সেনাবাহিনী ও সরকারের ওপর দায় চাপাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক (নুর)।
আজ শুক্রবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ কথা বলেন নুরুল হক। তিনি বলেন, ‘সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে যারা দল গঠন করেছে, তারাও শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিস্ট দল হতে চায়।’
চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে সামরিক বাহিনী জনগণের পাশে না দাঁড়ালে দেশে একটি গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হতো উল্লেখ করে নুরুল হক প্রশ্ন তোলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি কেন দাঁড় করানো হচ্ছে?
বুদ্ধিজীবীরা কৌশলে গণ-অভ্যুত্থানে সেনা কর্মকর্তাদের অবদান অস্বীকার করছেন বলেও অভিযোগ তোলেন নুরুল হক।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো.
সমাবেশ শেষে গণ অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে একটি গণমিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিলটি পল্টন থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড় ও জাতীয় প্রেসক্লাব প্রদক্ষিণ করে আবার গণ অধিকারের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।
গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামানের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন উচ্চতর পরিষদের সদস্য ফারুক হাসান, হাসান আল-মামুন, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, ছাত্র অধিকারের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আবদুর রহমানসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতারা।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে আগামীকাল শনিবার ঢাকাসহ সারা দেশে অবস্থান কর্মসূচি ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণ অধিকার পরিষদ।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুই ছাত্রীকে ধর্ষণে জড়িতদের গ্রেপ্তারে আলটিমেটাম
নরসিংদীর চরআড়ালিয়ায় ষষ্ঠ শ্রেণির দুই ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর বাঘাইকান্দি গ্রামের কাজীবাড়ির মোড়ে রায়পুরা উপজেলার চরআড়ালিয়া ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন হয়।
ধর্ষণের অভিযোগে ইমরান, রাজ্জাক, আব্দুর রহমান, সাইফুল মিয়া, রমজান, কাইয়ুম ও তার দুই সহযোগীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে এত ধর্ষণ হচ্ছে কিন্তু অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের কোনো বিচার হচ্ছে না। পুলিশ কী করে? অনতিবিলম্বে ধর্ষণে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছেন তারা। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তা না হলে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে। আলটিমেটাম দিয়ে তারা বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষকদের আইনের আওতায় আনা না হলে রামপুরা থানাসহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করা হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন চরআড়ালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জহিরুল ইসলাম জাজু, স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু মুসা, জেলা ছাত্রনেতা সাব্বির ভূঁইয়া, সাবেক চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান সরকার প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকেল ৩টার দিকে দুই বান্ধবী চরআড়ালিয়া গ্রামের কাইয়ুম ও মুন্নার সঙ্গে ঘুরতে বের হয়। তারা সারা বিকেল ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাযোগে বাঘাইকান্দি এলাকা থেকে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি এবং খাওয়া-দাওয়া করে। পূর্ব থেকেই কাইয়ুম ও মুন্না তাদের বন্ধুদের পূর্ব বাঘাইকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থাকতে বলে। সে অনুযায়ী অন্য বন্ধুরা স্কুলের সামনে অপেক্ষা করতে থাকে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে অটোরিকশাযোগে তাদের নিয়ে পূর্ব বাঘাইকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে যায় কাইয়ুম ও মুন্না। সেখানে যাওয়ার পর এক ছাত্রীকে জোর করে স্কুলের পাশে নিক্সন মেম্বারের বাড়ির ছাদে নিয়ে যায় ইসরাফিল, সাইখুল, রমজান ও কাইয়ুম এবং অপর ছাত্রীকে মুন্না, ইমরান, রাজ্জাক, আব্দুর রহমান নদীর পারে নিয়ে যায়। সেখানে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় অভিযুক্তরা। এ সময় ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী চিৎকার দিতে চাইলে ইট হাতে নিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যার হুমকি দেয়। পরে দুই ছাত্রী বাড়ি ফিরে গেলে অবস্থা দেখে স্বজনরা জানতে চাইলে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ পায়। এ ঘটনায় রায়পুরা থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে দুটি মামলা করা হয়েছে।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।