সেনাবাহিনীর দখলে সুদানের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ
Published: 21st, March 2025 GMT
সুদানের সেনাবাহিনী শুক্রবার খার্তুমের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে এক বিবৃতিতে দাবি করেছে। দুই বছর ধরে চলা সংঘাতের মধ্যে এটি সেনাবাহিনীর জন্য একটি বড় প্রতীকী অর্জন।
সেনাবাহিনী সম্প্রতি সাফল্য অর্জন করতে শুরু করে এবং আধা সামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) কাছ থেকে দেশের কেন্দ্রস্থল পুনরুদ্ধার করেছে। তবে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ দখলের মধ্য দিয়ে দেশটির বিভাজনের আশঙ্কা আরও গভীর হয়েছে।
এদিকে আরএসএফ পশ্চিমাঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ সুসংহত করেছে, যুদ্ধে তাদের অবস্থান শক্ত করেছে এবং দেশকে কার্যত বিভক্তির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আরএসএফ তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে একটি সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে। যদিও তারা বড় আকারে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। বিবিসি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে দারফুরে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় চার শতাধিক নিহত: জাতিসংঘ
সুদানের আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) দারফুর অঞ্চলের দুর্ভিক্ষকবলিত শরণার্থীশিবিরে টানা দুই দিন হামলা চালিয়েছে। এতে চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে ‘বিশ্বাসযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সুদানি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে দারফুরের শেষ বড় শহর আল-ফাশেরের নিয়ন্ত্রণ নিতে গত সপ্তাহে আরএসএফ আশপাশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে স্থল ও আকাশপথে ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, তারা বৃহস্পতিবার থেকে শনিবারের মধ্যে অন্তত ১৪৮ জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি বলেও আশঙ্কা তাদের।
জাতিসংঘের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বিবিসিকে বলেছেন, নিহতের সংখ্যা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া এখনও চলমান, এবং এর মধ্যে রোববারের সহিংসতায় নিহতরা নেই।
“বিশ্বাসযোগ্য সূত্রের খবরে ৪০০-র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে,” বলেছেন শামদাসানি।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, গত শুক্রবার ও শনিবার জমজম ও আবু শোক শরণার্থী শিবিরে তীব্র লড়াইয়ের পর ব্যাপক হতাহতের এবং ব্যাপক আকারে বাস্তুচ্যুতির খবরে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
সেনাবাহিনী গত মাসে জাতীয় রাজধানী খার্তুম পুনর্দখল করার পর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আরএসএফ আল-ফাশের শহরে হামলা জোরদার করেছে। এটি দারফুরে একমাত্র প্রাদেশিক রাজধানী, যা এখনো আরএসএফের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। প্রায় এক বছর ধরে শহরটি ঘিরে রেখেছে আরএসএফ।
আল-ফাশেরকে ঘিরে থাকা দুটি শরণার্থী শিবির, জমজম ও আবু শোক ৭ লাখেরও বেশি মানুষকে সাময়িক আশ্রয় দিয়েছে। এ আশ্রিতদের অধিকাংশকেই দুর্ভিক্ষজনিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
শনিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে আরএসএফ বলেছিল, বেসামরিকদের ওপর হামলার জন্য তারা দায়ী নয় এবং জমজমে হত্যাকাণ্ডের চিত্র মঞ্চস্থই হয়েছে তাদের গায়ে কালি লাগানোর জন্য।
পরেরদিন সশস্ত্র এ গোষ্ঠীটি জানায়, তারা সুদানের সেনাবাহিনীর কাছ থেকে জমজম শিবিরটি ‘সফলভাবে মুক্ত’ করতে পেরেছে।
আরএসএফের অভিযোগ, সেনাবাহিনী এই শিবিরটিকে সামরিক ব্যারাক বানিয়ে রেখেছিল এবং এর ‘নিষ্পাপ বেসামরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হতো’।
ক্ষমতার দখল ঘিরে সুদানের সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী মধ্যে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে লড়াই চলছে। পর্যবেক্ষক সংস্থা আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্টের তথ্যানুসারে, সুদানে এসএএফ এবং আরএসএফের মধ্যে চলমান সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ২৯ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
সুদানে চলমান এই সংঘাত বিশ্বের সর্ববৃহৎ মানবিক সংকটের সূচনা করেছে এবং লাখ লাখ মানুষকে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে।
ঢাকা/ফিরোজ