গাজার পক্ষে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সোচ্চার হতে সরকারের প্রতি বাসদের আহ্বান
Published: 21st, March 2025 GMT
যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের গাজায় নতুন করে হামলা চালিয়ে নির্বিচার মানুষ হত্যা করছে ইসরায়েল। এতে করে এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজার দুর্দশা আরও শোচনীয় হয়ে পড়েছে। তাই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিচারসহ গাজায় ইসরায়েলি হামলা ও গণহত্যা বন্ধের দাবি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।
আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল–পরবর্তী এক সমাবেশে বাসদের নেতারা এই আহ্বান জানান। প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। দলের সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সদস্য জুলফিকার আলী এবং নগর কমিটির সদস্য খালেকুজ্জামান লিপন সমাবেশে বক্তব্য দেন।
সমাবেশে বাসদ নেতারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর গাজায় নতুন করে হামলার নীলনকশা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। শুধু তা–ই নয়, নেতানিয়াহু গাজাবাসীকে সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলছেন ‘গাজায় নৃশংসতা কেবল শুরু’।
এই পরিস্থিতিতে হামলা বন্ধ ও গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার হতে আহ্বান জানান বাসদ নেতারা।
বাসদ মনে করে, মধ্যপ্রাচ্যের তেল ও খনিজসম্পদের দখল এবং ওই অঞ্চলে সামরিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য ইসরায়েলকে ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র। সবাইকে এক হয়ে এই সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলি ‘জায়নবাদী বর্বরতার’ বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার হওয়ার
যুদ্ধ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় ইসরায়েলের নতুন করে হামলা বন্ধ ও গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।
শুক্রবার (২১ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।
বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড রাজেকুজ্জান রতন, সদস্য জুলফিকার আলী ও নগর কমিটি সদস্য খালেকুজ্জামান লিপন।
বিশ্বজনমত উপেক্ষা করে মার্কিন মদদে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বর নৃশংস হামলায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ।
তারা বলেন, ইসরায়েল ৪২ দিনের মাথায় যুদ্ধ বিরতির চুক্তি ভঙ্গ করে ১৭ মার্চ মধ্যরাত থেকে আবারো ফিলিস্তিনের গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে। তিন দিনের হামলায় মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ২০০ এর অধিক শিশু, অধিকাংশ নারী ও বয়স্ক মানুষ।
ইসরায়েলি হামলায় গত ১৭ মাসে গাজায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজারের বেশি ছিল শিশু। শুধু তাই নয়, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা থেকে মানুষজনকে সরে যেতে বলেছে এবং বলছে ‘গাজায় নৃশংসতা কেবল মাত্র শুরু’।
হাজার হাজার টন বোমা ফেলে ফিলিস্তিনকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। এই হামলার বিরুদ্ধে খোদ ইসরায়েল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে কিন্তু ইসরায়েল তাতে তোয়াক্কা করছে না। কারণ তার প্রতি সমর্থন রয়েছে যুদ্ধবাজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের।
তারা বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গাজা থেকে সেখানকার বাসিন্দাদের সরে গিয়ে খালি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে দিতে বলেছে। নেতানিয়াহুর সাথে বৈঠক করে ট্রাম্প নতুন করে হামলার নীল নকশা করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় গাজায় নতুন করে হামলা শুরু হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের তেল ও খনিজসম্পদের দখল ও ঐ অঞ্চলে সামরিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য ইসরায়েলকে ব্যবহার করছে সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা। সেজন্য অস্ত্র-অর্থসহ সব ধরনের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। আর মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতায় ও মদদে জায়নবাদী ইসরাইল গণহত্যায় মেতে উঠেছে। এই ধ্বংসযজ্ঞে গাজার ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ ও গির্জা ধ্বংস হয়েছে। পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সরবরাহ ধ্বংস করেছে এমনকি জাতিসংঘ ভবনও ধ্বংস করা হয়েছে। পুরো গাজার ৮৩ শতাংশ গাছপালা, ৮০ শতাংশের বেশি কৃষিজমি ও ৯৫ শতাংশ গবাদিপশু নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, যুদ্ধবিরতির সময়েও গাজায় ১৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গাজায় যে হামলা চালানো হচ্ছে, তা অতীতের যে কোনো যুদ্ধের ভয়াবহতাকে হার মানিয়েছে। এখন সেখানে কোন ত্রাণ পৌঁছাতে পারছে না যে কারণে সেখানকার মানুষ ক্ষুধা, দুর্ভিক্ষ ও চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করছে। ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ, দেশে দেশে পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ সৃষ্ট সকল যুদ্ধ এবং যুদ্ধ উন্মাদনার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে প্রতিবাদ প্রতিরোধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান। একই সাথে গাজায় মানবিক সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সাম্প্রদায়িকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ারও জোর দাবি জানান বাসদ নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ সরকারকে গাজায় ইসরাইলি বোমা হামলা ও গণহত্যা বন্ধের দাবি আন্তর্জাতিক সকল ফোরামে তুলে ধরা এবং গণহত্যাকারী নেতানিয়াহুর বিচারের দাবি উত্থাপনের দাবি জানান।
ঢাকা/মামুন/এনএইচ