রাউজানে গরুচোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
Published: 21st, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের রাউজানে গরুচোর সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে মো. রবিউল হোসেন (৩৬) নামের এক যুবককে হত্যা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হোয়ারাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
দুপুরে পুলিশ স্থানীয় মোবারক খালের পূর্ব পাশে খোলা জমি থেকে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত রবিউল চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ এলাকার নুরুল আলমের ছেলে। বিকেলে পুলিশ লাশের ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, স্থানীয় টিপু বড়ুয়া নামের এক ব্যক্তির গোয়ালঘর থেকে একটি গরু চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন রবিউল। এ সময় স্থানীয় লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তাঁকে ধরে ফেলেন। পরে পটিয়ে হত্যা করে লাশ বিলের মাঝখানে ফেলে রাখেন তাঁরা।
রাউজান থানা-পুলিশ জানায়, নিহত রবিউলের বিরুদ্ধে আগে ডাকাতি, চুরি, অস্ত্রসহ চারটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
জানতে চাইলে রাউজানের পূর্ব গুজরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক দীপ্তেশ রায় প্রথম আলোকে বলেন, রবিউল ওই এলাকা থেকে একটি গরু চুরি করে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই সময় জনতা তাঁকে ধরে ফেলে গরুটি উদ্ধার করেন। পরে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেন গ্রামবাসী।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৩০০ বছরের পুরোনো মোগল ফৌজদারের মসজিদ
ছয়-গম্বুজের মসজিদ। পদ্মফুলের ওপর কলসের নকশায় সাজানো হয়েছে গম্বুজের চূড়া। কমলা রঙে রঙিন গম্বুজের জৌলুশ যেন কিছুটা ম্লান করে দেয় মসজিদটির বাইরের দেয়াল। বিবর্ণ হয়ে যাওয়া দেয়ালটিতে শেওলা জমেছে। যদিও মসজিদের ভেতরে সবকিছুই বেশ পরিপাটি। মসজিদটির ভেতরে-বাইরের নানা কারুকার্য আর স্থাপত্যশৈলী ছড়ায় মুগ্ধতা।
চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারে অবস্থিত এই মসজিদটি। নাম ‘ওয়ালী বেগ খান জামে মসজিদ’। তবে পরিচিত ‘অলি খাঁ মসজিদ’ নামেও। মসজিদটির বয়স তিন শ বছরের বেশি। চট্টগ্রাম নগরে আঠারো শতকের আগে নির্মিত সাতটি পাকা মসিজদের বিবরণ বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্রে পাওয়া যায়, যার এর একটি এই মসজিদ।
চট্টগ্রামের মুসলিমদের পুরাকীর্তির বিবরণসহ প্রথমবারের মতো বেশ কিছু শিলালিপির পাঠ পাওয়া যায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীর এক সদস্যের লেখা ভ্রমণবৃত্তান্তে। তাঁর নাম—ক্যাপ্টেন পগসন। ১৮৩১ সালে শ্রীরামপুর প্রেস থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর ‘ক্যাপ্টেন পগসন্স ন্যারেটিভ ডিউরিং এ ট্যুর টু চাটিগাঁও’ নামের বই। এতে চট্টগ্রামের চারটি শিলালিপি সংবলিত মুসলিম পুরাকীর্তি এবং তিনটি শিলালিপিবিহীন মসজিদের নাম উল্লেখ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে ওয়ালী বেগ খান মসজিদের নামও।
ঐতিহাসিকদের মতে, এই মসজিদটি নির্মাণ করেন মোগল ফৌজদার (আঞ্চলিক শাসনকর্তা) ওয়ালী বেগ খান। তাঁকে চকবাজারের প্রতিষ্ঠাতাও বলা হয়। চট্টগ্রামবিষয়ক গবেষক আবদুল হক চৌধুরী তাঁর ‘বন্দর শহর চট্টগ্রাম’ বইয়ে উল্লেখ করেন, ১৭১৪ থেকে ১৭১৯ সালের মধ্যে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণের খরচ মেটানোর জন্য জেলার রাউজান থানার কদলপুর, মিরসরাইয়ের নিজামপুর এবং সন্দ্বীপে ১২০ দ্রোণ (এক দ্রোনে ৮ একর) জমি ওয়াক্ফ করেছিলেন ওয়ালী বেগ খান। মসজিদের পাশে ‘কমলদহ’ নামের একটি দিঘি থাকার উল্লেখও বইটিতে রয়েছে।
আবদুল হক ছাড়াও আরও বেশ কিছু গবেষকের ইতিহাসবিষয়ক বইয়ে একই এলাকায় মোগল ফৌজদার ওয়ালী বেগ খানের আবাসসহ-কাছারি নির্মাণ আর দিঘি খননের উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে এসব এখন নেই। কালের সাক্ষী হয়ে আছে কেবল মসজিদটি।
মসজিদের ওপর রয়েছে ছয়টি গম্বুজ