বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের ইফতার মাহফিল
Published: 21st, March 2025 GMT
বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের (জেবস) উদ্যোগে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর তোপখানা রোডের পুরানা পল্টন এশিয়া হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসে আয়োজিত এই মাহফিলে বিশিষ্ট সাংবাদিক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও সমাজের নানা স্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সাংবাদিকতা শুধু তথ্য পরিবেশনের মাধ্যম নয়, এটি একটি দায়িত্বশীল পেশা যা জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সাংবাদিকদের আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।’
বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রের চারটি মূল স্তম্ভের একটি হচ্ছে গণমাধ্যম। তাই সমাজকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে সাংবাদিকদের নির্ভুল ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের বিকল্প নেই। সৎ ও নৈতিক সাংবাদিকতার মাধ্যমে একটি মানবিক ও সমৃদ্ধশালী সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।
ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (জেবস) এর সভাপতি রিয়াজুর রহমান রিয়াজ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইফতার মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও জেবস-এর সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন দরবেশ।
এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইফতার মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অয়ন আহমেদ, ইফতার মাহফিল বাস্তবায়িত কমিটির সদস্য রুমাজ্জল হোসেন রুবেল ও মোঃ কবির নেওয়াজ।
এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এস, এন, মোঃ নজরুল ইসলাম, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোঃ বেলাল খান, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের ট্রেজারার অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রেজা, তথ্য মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মো: ইউসুফ মিয়া ও মোঃ আবদুল্লাহ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি এ কে এম মহসিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধক্ষ্য খন্দকার আলমগীর হুসাইন, নির্বাহী সদস্য এম মোশাররফ হোসাইন, আব্দুল্লাহ মজুমদার, ফকরুল ইসলাম, সাংবাদিক জালাল আহমেদ, সিনিয়র সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম রুহান, বাংলাদেশ সিভিল রাইটস সোসাইটির চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, ঢাকা ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশনের ট্রেজারার ওহাব হোসেন চৌধুরীসহ প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইফত র ল ইসল ম অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
চৈত্রের শেষ দিনে জাবিতে ব্যাঙের পানচিনি ‘বিয়ে’
দিনভর প্রবল উত্তাপের শেষে বাংলা বছরের শেষ সূর্যের মেজাজ তখন কিছুটা হালকা হয়ে এসেছে। গাছের নতুন পাতায় সূর্যের আলোর প্রতিবিম্ব উৎসবের সাজ দিয়েছে৷ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চোখে মুখে ফুটে ওঠেছে উৎসবের আমেজ।
উৎসবের পালে নতুন হাওয়া দিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পুরাতন কলা ভবনের সামনে চলছে তখন পানচিনির আয়োজন। সবার মাঝে বিয়ের আমেজ। মঞ্চের একপাশে সেজেগুজে বসে আছে কনে। বরপক্ষের আগমনের অপেক্ষায় কনেপক্ষ। বিকেল ৫টার দিকে এক র্যালি নিয়ে হাজির বরপক্ষ। বরের মাথায় এক ঢাউস ছাতা।
হলুদ, ধান ও দূর্বা দিয়ে কনেপক্ষ বরপক্ষকে বরণ করে নিল। চলল আশীর্বাদ আদান-প্রদান। মন্ত্র পাঠের আগে অভিভাবকরা কথা দিলেন, আসছে আষাঢ়ে তাদের বিয়ে হবে। বরের বাবা হলেন কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, অন্যদিকে কনের বাবার দায়িত্বে ছিলেন নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক রশীদ হারুন৷
তবে এটি কোনো মানুষের বিয়ে নয়। ব্যাঙের বিয়ে। খরা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টির প্রত্যাশায় কলা ও মানবিকী অনুষদ চৈত্রসংক্রান্তি ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে এই ‘ব্যাঙের পানচিনি’র আয়োজন করেছিল। পানচিনি অনুষ্ঠান মূলত বিয়ের অঙ্গীকার প্রদান, আশীর্বাদ আদান-প্রদান এবং বর-কনের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ানোর আয়োজন।
ব্যাঙের এই পানচিনি সম্পর্কে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী শরণ এহসান জানান, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা অঞ্চলে প্রচণ্ড দাবদাহে যখন মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়, সেসময় বর্ষার আবাহন হিসেবে ব্যাঙের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়৷ প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ তাদের একটা কৃত্য হিসেবে চৈত্র সংক্রান্তির দিনে বৃষ্টির আকাঙ্ক্ষা করে ব্যাঙের বিয়ে সম্পন্ন হয়৷ বর্তমান সময়ে মানুষের সাথে প্রাণ-প্রকৃতির যে বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে তা নিরসনের প্রত্যাশায় প্রতি বছর চৈত্রসংক্রান্তির দিনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ব্যাঙের পান-চিনি’ আয়োজন করা হয়।
ব্যাঙের পানচিনিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সেজেছিলেন বরপক্ষের সাজে। আর পুরাতন কলা ভবন কনেপক্ষ। বাঁশ আর রঙিন কাগজ দিয়ে বানানো হয়েছিল ব্যাঙ-যুগলের বিশাল দুটি প্রতিকৃতি। গতরাতেই কনেপক্ষ বরপক্ষের বাড়িতে মিষ্টি নিয়ে গিয়ে আলাপটা সেরে এসেছিলো।
সকাল থেকেই উভয়পক্ষের বাড়িতে চলছিল সেই প্রস্তুতি। বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে নেচে-গেয়ে বরপক্ষ হাজির হয় পুরাতন কলা ভবনের কনেপক্ষের বাড়িতে। কনেপক্ষ হুই-হুল্লোড় করে ‘গেট ধরলে’ চলে মধুর দর-কষাকষি। এরপর জমে ওঠে প্রীতি কথার লড়াই। কারও হার না মানা অবস্থায় মঞ্চে পাশাপাশি বসার সুযোগ হয় হবু বর-কনের।
বরপক্ষ ও কনপক্ষের এ মধুর লড়াই চলে বেশ সময় ধরে। কেউ কাউকে নাহি ছাড়৷ কারো মতে, বিয়ের দেনমোহর হওয়া উচিত কোটি টাকায়। কারো মতে, আরও কম৷ কেউবা বলছেন, ব্যাঙের বিয়ে হওয়া উচিত যে কোনো ধর্ম মেনে৷ তবে কনেপক্ষের মত, মানুষের ধর্ম নয়, ব্যাঙের ধর্ম মেনেই হবে ব্যাঙের বিয়ে৷ শেষ পর্যন্ত সমঝোতায় পৌঁছে দুই পক্ষ। আংটি বদলের মধ্য দিয়ে শেষ হয় চৈত্র সংক্রান্তির ব্যাঙের বিয়ে৷
ব্যাঙের পানিচিনি নিয়ে কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বৈশাখ থেকে প্রকৃতির পরিবর্তন হতে থাকে৷ ফলে প্রকৃতির এই পরিবর্তন আমাদের মানব মনে নাড়া দেয়৷’