রাজশাহী বিভাগের ৯১৩টি চালকলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) এই সুপারিশ খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। চালকলগুলোর বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করবে মন্ত্রণালয়।

আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর জানিয়েছে, সরকারি গুদামে চাল সরবরাহের চুক্তি না করা এবং চুক্তি করেও চাল না দেওয়ার কারণে এসব মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য তাদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ৯১৩টি চালকলের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, ৭৫১টি মিল চুক্তিযোগ্য হলেও তারা চাল সরবরাহের জন্য সরকারের সঙ্গে কোনো চুক্তি করেনি। এই মিলগুলোর মধ্যে ৪৫টি অটো রাইস মিল, বাকিগুলো হাসকিং মিল। এ ছাড়া ১৬২টি মিল সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেও পর্যাপ্ত চাল সরবরাহ করেনি। এর মধ্যে ৩০টি মিল লক্ষ্যমাত্রার ৮০ শতাংশ চাল দিয়েছে, ৭১টি মিল ৫০ শতাংশ চাল সরবরাহ করেছে।

আরো পড়ুন:

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদ রাবি শিক্ষার্থীদের

রাবির গবেষণা: মাটি ছাড়াই উৎপাদন হবে সবুজ পশুখাদ্য

খাদ্য বিভাগের তথ্যমতে, বিভাগের আট জেলায় শুধু কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৬ হাজার ৩৫৯ টন, কিন্তু সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩৯৫ টন, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৭ শতাংশ। কৃষকরা প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৩২০ টাকা দরে সরকারি গুদামে বিক্রি না করে খোলা বাজারে ১ হাজার ৪৫০ টাকা কিংবা তার কিছু কম-বেশি দরে বাজারে বিক্রি করেছেন।

মিলারদের কাছ থেকে সিদ্ধ চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ২৬৩ মেট্রিক টন, তবে সংগ্রহ হয়েছে ৯৪ হাজার ৭০৭ মেট্রিক টন। আতপ চালের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৮৯১ মেট্রিক টন, যেখানে সংগ্রহ হয়েছে ১৯ হাজার ৫২৯ টন। চলতি মৌসুমে রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোতে সরকারি ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। সময়সীমা কয়েক দফা বাড়ানো হলেও কাঙ্খিত পরিমাণ ধান-চাল সংগ্রহ সম্ভব হয়নি।

খাদ্য বিভাগের বিভিন্ন সূত্র বলছে, সরকারি গুদামে চালের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় মিলাররা পুরোনো চাল সরবরাহ করেছেন। আবার বাজারে দাম বেশি হওয়ায় অনেকে সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করেননি। এ জন্য শাস্তি এড়াতে কিছু মিল মালিক ভারত থেকে আমদানি করা পুরোনো চাল সরবরাহ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তরের সহকারী উপ-পরিচালক ওমর ফারুক বলেন, “যেসব মিল চুক্তি করেনি বা চুক্তি করেও চাল সরবরাহ করেনি, তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আমরা ৯১৩টি মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছি। এখন মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।”

তিনি আরো বলেন, “যেসব মিল ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ চাল সরবরাহ করেছে, তাদের জামানত থেকে টাকা কেটে জরিমানা করার সুপারিশ করা হয়েছে। আর যারা কোনো চাল সরবরাহ করেনি, তাদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় এগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র স প র শ কর ব যবস থ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকা ছাড়াল

সবজির বাজারে ক্রেতার স্বস্তি থাকলেও, দুঃসংবাদ রয়েছে মুরগির বাজারে। গত এক সপ্তাহে কেজিতে সর্বোচ্চ ২০ টাকা দর বেড়েছে মুরগির। ব্যবসায়ীদের দাবি, চাহিদা বাড়ার কারণে দর বাড়ছে। একই সঙ্গে আগের মতোই চড়া দর দেখা গেছে চালের বাজারে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার কারওয়ান বাজার, কলমিলতা বাজার ও তেজকুনিপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। আর সোনালি জাতের মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা দরে। সপ্তাহ খানেক ব্রয়লারের কেজি ছিল ১৯০ টাকার মতো। সে হিসেবে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে কেজিতে। এ ছাড়া গত সপ্তাহে সোনালি জাতের মুরগি কেনা গেছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায়। 

দর বাড়ার কারণ হিসেবে কারওয়ান বাজারের নুরজাহান চিকেন ব্রয়লার হাউসের বিক্রয়কর্মী মো. নবী বলেন, প্রতি বছর রোজার শেষদিকে মুরগির দর বেড়ে যায়। তাছাড়া এখন চাহিদা বেড়েছে। এ জন্য দাম বাড়তি। তিনি বলেন, প্রতিদিনই একটু একটু করে দর বাড়ছে মুরগির। এ ছাড়া গরুর মাংসের কেজি কেনা যাবে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায়। তবে ডিমের দাম কমতির দিকে। প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। মাসখানেক ধরেই এ দরের আশপাশে রয়েছে ডিম।

সবজির বাজারে এখনও স্বস্তি পাচ্ছেন ক্রেতা। উচ্ছে এবং ঢ্যাঁড়শের মতো দু-তিনটি ছাড়া বেশির ভাগ সবজির দর কম। মোটামুটি ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে কেনা যাচ্ছে বেশির ভাগ সবজি। ঢ্যাঁড়শ ও উচ্ছের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর দর এখন তলানিতে। প্রতি কেজি আলু কেনা যাচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকার মধ্যে। 

পেঁয়াজের দরও কমছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। রসুনের দরে পরিবর্তন নেই। আগের মতোই আমদানি করা রসুনের কেজি ২০০ থেকে ২১০ এবং দেশি রসুনের কেজি ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অস্বাভাবিক দর দেখা গেছে এলাচের। খুচরা ব্যবসায়ীরা মানভেদে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি করছেন ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা দরে। 

এদিকে চালের বাজারে কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। গত সপ্তাহের মতোই সরু চাল ৭২ থেকে ৮৫, মাঝারি চাল ৫৮ থেকে ৬৫ এবং মোটা চাল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ভোজ্যতেলের বাজারে বোতলের আকাল এখনও আছে। খোলা সয়াবিন ও পামওয়েলের সরবরাহে ঘাটতি দেখা যায়নি। পাঁচ লিটারের বোতলের সরবরাহ কিছুটা কম রয়েছে। দু্ই-তিন মাস ধরে বোতলজাত তেলের সরবরাহ ঘাটতি নিয়েই চলছে বাজার। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভোজ্যতেলে কাটছে না দুঃসময়
  • মুরগির সঙ্গে বেড়েছে চালের দাম
  • ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকা ছাড়াল
  • কাছের বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রে আগুন, যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দর আজ বন্ধ
  • ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা
  • ধানমন্ডিতে মিস্টার ডাইয়ের বাংলাদেশের চতুর্থ স্টোর উদ্বোধন
  • রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের আভাসে কমছে শস্যের দাম, প্রভাব জ্বালানির বাজারেও
  • মোহাম্মদপুরে ‘জনতার বাজার’ উদ্বোধন, মিলবে ন্যায্যমূল্যে পণ্য 
  • যুদ্ধবিরতি নয়, শুধু জ্বালানি স্থাপনায় হামলা বন্ধে রাজি পুতিন