আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাবিতে বিক্ষোভ
Published: 21st, March 2025 GMT
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে একটি মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক দিয়ে তালাইমারি মোড়ে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
আওয়ামী লীগকে নাৎসি পার্টি হিসেবে নিষিদ্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই বলে মন্তব্য করে সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, যেদিন আবু সাঈদের রক্তে রংপুরের জমিন লাল হয়েছে, সেদিনই আওয়ামী লীগ রাজনীতি করার অধিকার হারিয়েছে। একটি রাজনৈতিক দল যখন রাজনীতি বাদ দিয়ে গণহত্যা, গুম, খুন ও ত্রাসের রাজনীতিতে মেতে ওঠে, তখন সেটাকে নাৎসি পার্টি হিসেবে নিষিদ্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকতে পারে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে এই বাংলার মাটিতে যদি কোনো রাজনৈতিক দল আবির্ভাব হয়, আমরা ছাত্র-জনতা কোনোভাবেই তা বরদাস্ত করব না। জুলাইয়ের দুই হাজার শহীদের রক্তের সঙ্গে আমরা বেঈমানি করতে পারি না। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নই আমরা। অবিলম্বে তাদের বিচার নিশ্চিত করুন।
আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে আরেক সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের প্রশ্ন তো আমরা ৫ আগস্টে নিশ্চিত করে ফেলেছি। আওয়ামী লীগকে আর বাংলার মাটিতে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগ যদি রাজনীতিতে ফিরে আসতে চায়, তাহলে দুই হাজার শহীদের জীবন ফিরিয়ে দিতে হবে। ত্রিশ হাজার আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারী ভাই-বোনদের হাত-পা ফিরিয়ে দিতে হবে, দৃষ্টিশক্তি হারানো ভাই-বোনদের চোখ ফিরিয়ে দিতে হবে। আওয়ামী লীগ রাজনীতি করবে কি না, সেটি জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে।
সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক মাহায়ের ইসলাম। এ সময় বক্তব্য দেন সাবেক সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদসহ অনেকে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব ক সমন বয়ক র জন ত আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
৩০০ বছরের পুরোনো মোগল ফৌজদারের মসজিদ
ছয়-গম্বুজের মসজিদ। পদ্মফুলের ওপর কলসের নকশায় সাজানো হয়েছে গম্বুজের চূড়া। কমলা রঙে রঙিন গম্বুজের জৌলুশ যেন কিছুটা ম্লান করে দেয় মসজিদটির বাইরের দেয়াল। বিবর্ণ হয়ে যাওয়া দেয়ালটিতে শেওলা জমেছে। যদিও মসজিদের ভেতরে সবকিছুই বেশ পরিপাটি। মসজিদটির ভেতরে-বাইরের নানা কারুকার্য আর স্থাপত্যশৈলী ছড়ায় মুগ্ধতা।
চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারে অবস্থিত এই মসজিদটি। নাম ‘ওয়ালী বেগ খান জামে মসজিদ’। তবে পরিচিত ‘অলি খাঁ মসজিদ’ নামেও। মসজিদটির বয়স তিন শ বছরের বেশি। চট্টগ্রাম নগরে আঠারো শতকের আগে নির্মিত সাতটি পাকা মসিজদের বিবরণ বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্রে পাওয়া যায়, যার এর একটি এই মসজিদ।
চট্টগ্রামের মুসলিমদের পুরাকীর্তির বিবরণসহ প্রথমবারের মতো বেশ কিছু শিলালিপির পাঠ পাওয়া যায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীর এক সদস্যের লেখা ভ্রমণবৃত্তান্তে। তাঁর নাম—ক্যাপ্টেন পগসন। ১৮৩১ সালে শ্রীরামপুর প্রেস থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর ‘ক্যাপ্টেন পগসন্স ন্যারেটিভ ডিউরিং এ ট্যুর টু চাটিগাঁও’ নামের বই। এতে চট্টগ্রামের চারটি শিলালিপি সংবলিত মুসলিম পুরাকীর্তি এবং তিনটি শিলালিপিবিহীন মসজিদের নাম উল্লেখ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে ওয়ালী বেগ খান মসজিদের নামও।
ঐতিহাসিকদের মতে, এই মসজিদটি নির্মাণ করেন মোগল ফৌজদার (আঞ্চলিক শাসনকর্তা) ওয়ালী বেগ খান। তাঁকে চকবাজারের প্রতিষ্ঠাতাও বলা হয়। চট্টগ্রামবিষয়ক গবেষক আবদুল হক চৌধুরী তাঁর ‘বন্দর শহর চট্টগ্রাম’ বইয়ে উল্লেখ করেন, ১৭১৪ থেকে ১৭১৯ সালের মধ্যে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণের খরচ মেটানোর জন্য জেলার রাউজান থানার কদলপুর, মিরসরাইয়ের নিজামপুর এবং সন্দ্বীপে ১২০ দ্রোণ (এক দ্রোনে ৮ একর) জমি ওয়াক্ফ করেছিলেন ওয়ালী বেগ খান। মসজিদের পাশে ‘কমলদহ’ নামের একটি দিঘি থাকার উল্লেখও বইটিতে রয়েছে।
আবদুল হক ছাড়াও আরও বেশ কিছু গবেষকের ইতিহাসবিষয়ক বইয়ে একই এলাকায় মোগল ফৌজদার ওয়ালী বেগ খানের আবাসসহ-কাছারি নির্মাণ আর দিঘি খননের উল্লেখ পাওয়া যায়। তবে এসব এখন নেই। কালের সাক্ষী হয়ে আছে কেবল মসজিদটি।
মসজিদের ওপর রয়েছে ছয়টি গম্বুজ