জামালপুরে ‘পাওনা টাকা’ দেওয়ার কথা বলে যুবককে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গরু চুরির অপবাদ দিয়ে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে তাকে মারধর করা হয় বলে জানিয়েছে পরিবার।

এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। পরে জড়িতদের মধ্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলেন- মো. ইলিয়াস (২৫) ও মো.

মিজানুর রহমান।

গত বুধবার জামালপুর সদর উপজেলার শাহবাজপুরের পূর্বপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী যুবকের নাম মামুন। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। তিনি শাহবাজপুর ইউনিয়নের গণেশপুর গ্রামের বাসিন্দা।

আরো পড়ুন:

কলেজছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেপ্তার

নাটোরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১

নির্যাতনের ঘটনায় জামালপুর থানায় ২১ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীর বাবা আব্দুল হাকিম।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, রাজমিস্ত্রি মামুন তার কাজের টাকা পেতেন পূর্বপাড়া গ্রামের তালুকদার বাড়ির হাসমত তালুকদারের কাছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে মামুনকে ডেকে নেওয়া হয় হাসমত তালুকদারের বাড়িতে। টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটির পর গরু চুরির অপবাদ দিয়ে সেখানে মামুনকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে মামুনকে উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। মামুনকে নির্যাতন করার ওই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। 
 
মামুনের মা মাজেদা বেগম বলেন, “বুধবার সন্ধ্যার আগে আমার ছেলে বাজার নিয়ে বাড়িতে আসে। এর আগে হাসমত তালুকদার তাকে ফোন করে বলে পাওনা টাকা দিবে। টাকা নেওয়ার জন্য গেলে তার সঙ্গে আমার ছেলেন কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বাড়িতে ডাকাত, গরু চোর বলে চিৎকার করে লোকজনকে ডাকেন হাসমত তালুকদার। পরে আমার ছেলেকে ৫-৭ জন মিলে বাঁশের লাঠি ও রড় দিয়ে মারধর করে। এরপর শরীরে রড ঢুকিয়েছে।” 

তিনি আরো বলেন, “আমার একটাই ছেলে সংসারে উপার্জনক্ষম। বাবা পাগল, ওর ঘরে দুই সন্তান রয়েছে। আমি আমার ছেলেকে যারা মেরেছে তাদের শাস্তি দাবি করছি।”

 নারায়ণপুর পুলিশ তদন্তের উপ-পুলিশ পরিদর্শক মঞ্জুরুল হক বলেন, “৯৯৯-এ চোর আটকের খবর পেয়ে  ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে ঘটনা জানতে পারি। আহতকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। আমরা দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”

ঢাকা/শোভন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ আম র ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কয়েকশত লোক বাড়ি হামলা করে বাবা ও ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার নাওগাঁও ইউনিয়নের নাওগাঁও দক্ষিণপাড়া গ্রামে বাবা ও ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে স্থানীয় সালিশ থেকে গিয়ে কয়েকশত মানুষ বাড়িঘর ভাঙচুর করে নিজ ঘরে বাবা আব্দুল গফুর (৪০) ও ছেলে মেহেদী হাসানকে (১৫) কুপিয়ে হত্যা করেছে। হত্যা করার পর রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে গিয়ে হারুন নামে এক ব্যক্তির বাড়ি, দোকান ও একটি মাজার ভাঙচুর করেছে লোকজন।

বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার কাজী আখতারুল আলম। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রাম প্রায় পুরুষশুন্য হয়ে পড়েছে। যারা গ্রামে আছে, তারাও ভয়ে কিছু বলতে রাজি হয়নি।

আরো পড়ুন:

নরসিংদীতে নারীর মরদেহ উদ্ধার, স্বামী পলাতক

নড়াইলে ছুরিকাঘাতে মাইক্রোবাস চালক নিহত

নাওগাঁও গ্রামের হযরত আলীর ছেলে আব্দুল গফুর ও আব্দুল গফুরের ছেলে মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে এলাকায় মাদকদ্রব্য বিক্রি ও চুরির অভিযোগ ছিল। এ সব কারণে তাদের নিজের গোষ্ঠীর লোকজনও অতিষ্ঠ ছিল বলে গ্রামের লোকজন জানিয়েছেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য বিক্রি ও চুরি ঘটনায় গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে গ্রামে সালিশে বসার কথা ছিল। দুপুরে গফুরের বাড়ি সংলগ্ন নাওগাঁও হোসেনীয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার সামনে গ্রামের শত শত মানুষের সালিশ বসে। সালিশে আব্দুল গফুর ও মেহেদী হাসান উপস্থিত না হয়ে নিজ ঘরে রাম দা নিয়ে বসে থাকে। তাদের খোঁজে সালিশের লোকজন বাড়িতে গেলে দা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে আসে আব্দুল গফুর। এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন দা দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আব্দুল গফুর ও তার ছেলে মেহেদী হাসানকে হত্যা করে। বাবা ও ছেলেকে হত্যা করার পর শত শত মানুষ রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে গিয়ে হারুন অর রশিদ নামে একজনের বাসা, দোকান ও একটি মাজার ভাঙচুর করে।

আব্দুল গফুরের স্ত্রী শিল্পী আক্তার বলেন, ‘‘স্থানীয় হাবিবুর রহমানসহ শত শত মানুষ সালিশের নামে আমার স্বামী ও ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। যত অপরাধই করে থাকুক দেশে আইন আছে, আইনের মাধ্যমে বিচার হতো। বাবা ও ছেলেকে কেন নির্মমভাবে হত্যা করলো?’’

বাবা ও ছেলে নিহত হওয়ার পরপরই সালিশকারীরা ঘা ঢাকা দিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রেখেছেন।

ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকনুজ্জামান জানান, শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে গ্রাম্য সালিশ বসেছিল। সালিশ থেকে গিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।

ঢাকা/মিলন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ময়মনসিংহে সালিসে না যাওয়ায় বাবা-ছেলেকে হত্যার ঘটনায় ৮৭ জনের নামে মামলা
  • মহেশখালীতে ছাত্রলীগ নেতার হাতে বিএনপি নেতা নিহত
  • সালিশে না আসায় বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা
  • সালিসে না আসায় বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা
  • কয়েকশত লোক বাড়ি হামলা করে বাবা ও ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা
  • দুই হাত কেটে ফেলেও বাঁচানো গেল না সাদাফকে
  • পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাচ্ছে না ময়মনসিংহ মিনি চিড়িয়াখানার অসুস্থ ভালুকটি
  • অধস্তন আদালত তদারকি কমিটি পুনর্গঠন
  • লক্ষ্মীপুরে যুবককে গুলি, আটক ২
  • ‘গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি’ নামে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ