অগ্নিকাণ্ড ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়ায় মাঝ আকাশ থেকে ঢাকায় ফিরে এসেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট।

শুক্রবার সকাল ৮টা ৪২ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে সিলেট হয়ে লন্ডনের উদ্দেশে ছেড়ে যায় বিজি ২০১ ফ্লাইটটি। পরে দুপুর পৌনে ২টার দিকে সেটি আবার ঢাকায় ফিরে আসে। 

বিমান কর্মকর্তারা জানান, বিজি ২০১ ফ্লাইটটি সকাল ৮টা ৪২ মিনিটে ঢাকা থেকে উড্ডয়ন করে সিলেট যায়। বোয়িং ৭৮৭-৯ উড়োজাহাজটি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সংক্ষিপ্ত বিরতি নিয়ে সকাল ১০টা ৪৬ মিনিটে হিথ্রোর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, পাইলট, ক্রু ও যাত্রীসহ মোট ২৬৭ জনকে নিয়ে ফ্লাইটটি দুপুর পৌনে ২টায় ঢাকায় ফিরে আসে।

বিমানের মহাব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা বোসরা ইসলাম সমকালকে বলেন, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় মাঝ আকাশ থেকে ক্রুসহ ২৬৭ জন যাত্রীসহ ঢাকায় ফেরত আসে বিমানের ফ্লাইট। ফ্লাইটটি বিমানবন্দরে অবতরণের পর যাত্রীদের সরাসরি বিমানের তালিকাভুক্ত হোটেল রাখা হয়েছে। 

বিমানের আইন কর্মকর্তা মো.

মাসুদ আল খান বলেন, হোটেল থাকা যাত্রীরা যাত্রার সিডিউল পরিবর্তন করতে পারবেন।

এ ব্যপারে শাহাজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম জানান, বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে সারাদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় হিথ্রো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। মাঝ আকাশ থেকে ফেরত আসা বিমানের লন্ডগামী ফ্লাইটটি ঢাকায় নিরাপদে অবতরণ করে। 

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. মো. সাফিকুল ইসলাম সমকালকে বলেন, লন্ডন বিমানবন্দরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঢাকা থেকে যাত্রীদের নিয়ে ফের লন্ডনের উদ্দেশে আকাশে উড়াল দিবে বিমানের ফ্লাইট। এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, মাঝ আকাশ থেকে ঢাকায় ফেরত লন্ডনগামী ফ্লাইটের সব যাত্রীকে হোটেল রাখা হয়েছে। নিরাপদে আছেন যাত্রীরা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ ল ইট ফ ল ইটট ফ ল ইট

এছাড়াও পড়ুন:

নয় মাস পর মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফিরলেন নাসার দুই নভোচারী

প্রায় নয় মাস মহাকাশে থাকার পর, অবশেষে পৃথিবীতে ফিরেছেন নাসার দুই নভোচারী বুচ উইলমোর ও সুনি উইলিয়ামস। তাদের স্পেসএক্স ক্যাপসুলটি দ্রুত ও উত্তপ্ত পুনঃপ্রবেশের পর চারটি প্যারাশুটের সাহায্যে ফ্লোরিডার উপকূলে নিরাপদে সমুদ্রে অবতরণ করে।

অবতরণের সময় ক্যাপসুলের চারপাশে একটি ডলফিনের ঝাঁক ঘুরছিল। উদ্ধারের পর, নভোচারীরা হাসিমুখে হাত নেড়ে অভিবাদন জানান। তাদের সঙ্গে ছিলেন আরও দুই ক্রু সদস্য, নাসার নভোচারী নিক হেগ ও রুশ মহাকাশচারী আলেকজান্ডার গরবুনভ।

প্রথমে উইলমোর ও উইলিয়ামসকে মাত্র আট দিনের জন্য বোয়িং-এর স্টারলাইনার মহাকাশযানে পাঠানো হয়েছিল। তবে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে এটি আইএসএস-এ (আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন) রাখা হয় এবং নিরাপত্তার কারণে তাদের ফেরত আনা সম্ভব হয়নি।

ফলে, তারা পরবর্তী উপলভ্য মহাকাশযানের জন্য অপেক্ষা করতে বাধ্য হন। সেপ্টেম্বরে স্পেসএক্সের একটি ক্যাপসুল আইএসএস-এ পৌঁছানোর পর, তাদের জন্য আসন খালি রাখা হয়, যা অবশেষে তাদের পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনে।

নাসার ডেপুটি অ্যাসোসিয়েট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জোয়েল মন্টালবানো বলেন, "তাদের ধৈর্য এবং অভিযোজন ক্ষমতার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। এটি একটি অবিশ্বাস্য যাত্রা ছিল।"

১৭ ঘণ্টার দীর্ঘ যাত্রার পর, পৃথিবীতে ফিরে আসার পর নভোচারীদের স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়া হয়, যা দীর্ঘ মহাকাশ যাত্রার পর স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে তাদের শারীরিক অবস্থার নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হবে।

ব্রিটিশ নভোচারী হেলেন শারম্যান বলেন, সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, তারা অবশেষে পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। যেসব উৎসব ও মুহূর্ত তারা মিস করেছেন, এখন হয়তো সেগুলো পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবেন।

পৃথিবীতে ফেরার আগে এক সাক্ষাৎকারে সুনি উইলিয়ামস বলেন, আমি আমার পরিবার, আমার কুকুর এবং সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।

দীর্ঘ মহাকাশ ভ্রমণ মানুষের শরীরে নানা প্রভাব ফেলে। হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়, পেশি দুর্বল হয় এবং রক্ত সঞ্চালনে পরিবর্তন আসে।

ব্রিটিশ নভোচারী টিম পিক বলেন, পৃথিবীতে ফিরে আসার পরের দুই-তিন দিন শরীরের জন্য কঠিন হয়। মহাকাশে ব্যায়াম করা জরুরি, কারণ এটি মহাকাশের জন্য নয়, বরং পৃথিবীতে ফেরার জন্য প্রয়োজন।

তবে, উইলমোর ও উইলিয়ামস তাদের মিশনের অতিরিক্ত সময়কে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগিয়েছেন। তারা বিভিন্ন গবেষণা পরিচালনা করেছেন, মহাকাশে হাঁটাহাঁটি করেছেন এবং এমনকি সান্তা ক্যাপ ও রেনডিয়ার হ্যাট পরে ক্রিসমাস উদযাপন করেছেন।

অবশেষে, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর তারা পৃথিবীতে ফিরেছেন। এখন তাদের সামনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো—পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো এবং শারীরিক পুনর্বাসনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বন্ধ হিথ্রো বিমানবন্দর, বাতিল হচ্ছে ১৩০০ ফ্লাইট
  • সুনিতা উইলিয়ামস কে, কীভাবে নভোচারী হয়ে উঠলেন তিনি
  • ২৮৬ দিন পর পৃথিবীতে ফিরলেন সুনীত উইলিয়ামস
  • নয় মাস পর মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফিরলেন নাসার দুই নভোচারী