কুমিল্লায় বহুতল ভবনে আগুন, তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে আহত ৫
Published: 21st, March 2025 GMT
কুমিল্লা নগরের একটি বহুতল ভবনের বেজমেন্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে ভবনের তৃতীয় তলায় থাকা একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থীসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নগরের অশোকতলা এলাকায় অবস্থিত ৯ তলাবিশিষ্ট ভবনটিতে এ আগুনের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় লোকজন জানায়, ভবনের প্রথম তলায় একটি সুপারশপ, দ্বিতীয় তলায় ব্যাংক ও তৃতীয় তলায় কোচিং সেন্টার রয়েছে। ওপরের বাকি ছয়তলা আবাসিক। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ভবনের বেজমেন্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এ সময় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভবনের ওপরের দিকের আবাসিক বাসিন্দারা ছাদে গিয়ে আশ্রয় নেন। নিচের দিকের কিছু আবাসিক বাসিন্দা ও ওই কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থীরা আগুন দেখে দ্রুত তাড়াহুড়া করে নামার চেষ্টা করেন। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হন। আগুনে অগ্রণী ব্যাংকের কয়েকটি এসি গলে যায়। এ ছাড়া আগুনের তাপে ব্যাংকের সামনের দিকে থাকা কাচগুলো ভেঙে যায়। নিচে নামতে গিয়ে আহত ব্যক্তিদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
অগ্রণী ব্যাংকের ওই শাখার ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, প্রচণ্ড ধোঁয়া ও আগুনের তাপে ব্যাংকের এসিগুলো গলে গিয়েছে। তবে কাগজপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসায় বড় ধরনের সমস্যা হয়নি। তাড়াহুড়া করে নামার সময় কয়েকজন সামান্য ব্যথা পেয়েছেন। সেনাবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কুমিল্লার সহকারী পরিচালক ইকবাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের তিনটি টিমের চেষ্টায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিকভাবে বলা যাচ্ছে, ভবনের বেজমেন্টে থাকা জেনারেটর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসায় বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভবন র
এছাড়াও পড়ুন:
শতবর্ষী ঐতিহ্যে চুনারুঘাটের বৈশাখী মেলা, কৃষিপণ্যের বাহারে মুখর পীরের বাজার
শত বছরের ঐতিহ্য নিয়ে চুনারুঘাট উপজেলার পীরের বাজারে শুরু হয়েছে বৃহৎ বৈশাখী মেলা, স্থানীয়ভাবে যা 'বান্নি' নামে পরিচিত। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত এই মেলাটি চুনারুঘাটসহ সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলা হিসেবে পরিচিত।
মঙ্গলবার সকাল থেকে মেলা শুরু হয় এবং মূল আকর্ষণ হিসেবে থাকছে কৃষিপণ্যের বিশাল সমাহার। মেলায় পাওয়া যাচ্ছে লাঙল, জোয়াল, দা, কাঁচি, মই, মাছ ধরার সরঞ্জামসহ অসংখ্য কৃষি উপকরণ। মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, খেলনা, হস্তশিল্প ও মনিহারি পণ্যেরও ছিলো চোখধাঁধানো উপস্থিতি।
স্থানীয় দোকানিরা জানান, প্রতিবছর বিভিন্ন জেলা ও অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা পণ্য নিয়ে এই মেলায় অংশগ্রহণ করেন। শুধু হবিগঞ্জ নয়, ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী এমনকি উত্তরবঙ্গ থেকেও বিক্রেতারা অংশ নিয়েছেন এ ঐতিহ্যবাহী আয়োজনে।
চুনারুঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র নাজিম উদ্দিন সামছু বলেন, এই মেলা মূলত কৃষকদের জন্য। এখান থেকে প্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য সংগ্রহ করতেন তারা।
তবে আধুনিক প্রযুক্তির প্রসারের ফলে কৃষিকাজে ব্যবহৃত অনেক সরঞ্জামের প্রয়োজন কমে যাওয়ায় মেলার জৌলুস কিছুটা কমেছে বলে মনে করেন অনেকে। সেইসঙ্গে আশপাশে ঘরবাড়ি গড়ে ওঠায় মেলার পরিসরও সীমিত হয়েছে।
স্থানীয় ইউএনও মোহাম্মদ রবিন মিয়া জানান, মেলায় অংশ নিতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ আসছেন। মেলা চলাকালীন নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে পুলিশ বাহিনী, নিশ্চিত করেন চুনারুঘাট থানার ওসি নুর আলম।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে, শত বছর আগে এই মেলা শুরু হয়েছিল ছোট পরিসরে পূজা আয়োজনের মাধ্যমে। পরে তা বৃহৎ মেলায় রূপ নেয়।
এখনও অনেকেই শৈশবের স্মৃতি রোমন্থন করতে এই মেলায় আসেন, স্মৃতিচারণ করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। মেলায় পরিবেশিত হচ্ছে গ্রামবাংলার আবহমান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।
চুনারুঘাটের এই বৈশাখী মেলা শুধু একটি উৎসব নয়, বরং এটি এ অঞ্চলের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও কৃষিভিত্তিক জীবনের প্রতিচ্ছবি।