জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগ এবং ফ্যাসিবাদের সকল সহযোগী ব্যক্তি ও সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।

আজ শুক্রবার দেশের চলমান রাজনীতি ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের প্রতিবেদনে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, জুলাই মাসে বাংলাদেশে সংঘটিত অপরাধ আন্তর্জাতিক অপরাধের শামিল। আওয়ামী লীগের মানবতাবিরোধী অপরাধের ব্যাপারে এত সুস্পষ্ট আন্তর্জাতিক বক্তব্য থাকার পরেও বিচারিক প্রক্রিয়ায় ধীরগতি অত্যন্ত নিন্দনীয়। জাতীয় নাগরিক পার্টি অবিলম্বে জুলাই গণহত্যাসহ বিগত ফ্যাসিবাদী রেজিমের সংঘটিত গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায়।

তিনি বলেন, সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মন্তব্য করেছেন- আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। আমরা তার এ বক্তব্যের নিন্দা জানাই। আওয়ামী লীগ কর্তৃক সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা হত্যাকাণ্ড, আগ্রাসন, বিগত আন্দোলনের হত্যাকাণ্ড, গুম, ক্রসফায়ার, ভোট ডাকাতিসহ জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রশ্নে কার্যকর অগ্রগতি দৃশ্যমান হওয়ার আগে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পথ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত। 

তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে মনে রাখতে হবে আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক দল নয় বরং এটি একটি ফ্যাসিবাদী দল। নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পরাজয় ঘটেনি। দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ থেকে উৎখাত হয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগ এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক ফ্রেমওয়ার্কের বাইরে অবস্থান করছে। বিচার অনিষ্পন্ন রেখে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়ার যে কোনো ধরনের আলোচনা ও প্রস্তাব এনসিপি দৃঢ়তার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করে।

এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, আওয়ামী মতাদর্শ দল এবং মার্কার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণ ৩৬ জুলাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। ফলে দল ও মতাদর্শ হিসেবে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করার সকল অধিকার হারিয়েছে। 

তিনি বলেন, এনসিপি মনে করে- বিচারিক কার্যক্রম দৃশ্যমান হতে হবে। আত্মপ্রকাশের পর থেকে আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছি, কৃত অপরাধের বিচার, দায় স্বীকার, অনুশোচনা, পাপমোচন ব্যতীত আওয়ামী লীগের দল হিসেবে ক্রিয়াশীল থাকার পক্ষে যেকোনো ধরনের তৎপরতা ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের পথকে সুগম করবে।

এনসিপি জুলাই গণহত্যাসহ বিগত ফ্যাসিবাদী রেজিমে সংঘটিত অপরাপর গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের নিশ্চয়তা চায়। বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে এবং এই মাফিয়া গোষ্ঠীর রাজনীতিতে ফিরানোর যেকোনো প্রচেষ্টাকে এনসিপি প্রতিহত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করছে, যোগ করেন নাহিদ ইসলাম।

তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজনৈতিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে জুলাই সনদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ব্যাপারে ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল রাজনৈতিক দল ও পক্ষকে ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানায়।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ন হ দ ইসল ম এনস প জ ত য় ন গর ক প র ট ন হ দ ইসল ম র জন ত ক অপর ধ র গণহত য আওয় ম এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

‘ইসরায়েলের পণ্য বর্জনের জিহাদ শুরু করতে হবে’

স্বাধীন ফিলিস্তিনের স্বীকৃ‌তি দা‌বি ক‌রে গাজায় গণহত‌্যা ব‌ন্ধে ইসরায়েলের পণ্য বর্জনের মাধ‌্যমে জিহাদ শুরু করার আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের নেতারা।

গাজায় গণহত‌্যার প্রতিবা‌দে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আ‌য়ো‌জিত বি‌ক্ষোভ সমা‌বে‌শে তারা এ আহ্বান জানান।

ইসলামী ফ্রন্ট ঢাকা মহানগর আ‌য়ো‌জিত, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুল হাকিমের সঞ্চালনায় সমা‌বে‌শে প্রধান অতিথি ছি‌লেন কেন্দ্রীয় আইন সচিব অ্যাডভোকেট ইকবাল হাছান।

আরো পড়ুন:

গাজায় আবাসিক ভবনে ইসরায়েলের বিমান হামলা, নিহত ৩৫

গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদ করায় ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর ৯৭০ কর্মীকে বহিষ্কারের হুমকি

তি‌নি বলেন, “এই বর্বরতা পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ট উদহারণ। ফিলিস্তিনের গাজার মুসলমানদের ওপর ইহুদিদের পরিকল্পিত বর্বরোচিত হামলায় নারী-শিশুসহ মুসলিম নিধন করছে। ইহুদিরা ফিলিস্তিনকে একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। এখনও মুস‌লিম বিশ্ব নীরব। নীরব জা‌তিসংঘসহ সব আন্তর্জা‌তিক সংস্থা।”

তি‌নি ব‌লেন, “ইসরায়েলিদের বিরু‌দ্ধে আমা‌দের সর্বাত্মক প্রতি‌রোধ গ‌ড়ে তুল‌তে হ‌বে। অন্তত পণ‌্য বর্জনের মাধ‌্যমে জিহাদ শুরু কর‌তে হ‌বে।”

এতে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনার সিনিয়র সহসভাপতি ক্যানসার গবেষক অধ্যক্ষ ডাক্তার এম সরওয়ার।

এ সময় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর ইসলামী ফ্রন্ট নেতা কাজী শাহেদ আলম চৌধুরী, কাজী মোহাম্মদ তৈয়ব আলী, অ্যাডভোকেট লিংকন, বুলবুল আহমদ মোমেনশাহীসহ যুবসেনা ও ছাত্রসেনা নেতারা।

সমা‌বেশ শে‌ষে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের ক‌রেন। মিছিলে ‘লাখো শহীদের রক্তের ঋণ’, ‘ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’, ‘ফিলিস্তিনে হামলা কেন? জবাব চাই দিতে হবে,’ ‘বিশ্ব মুসলিম এক হও, ফিলিস্তিন রক্ষা করো’ স্লোগানে স্লোগানে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রকম্পিত হয়ে উঠে।

এ সময় নেতারা ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা, ফিলিস্তিনের নাগরিকদের ওপর চালানো গণহত্যার প্রতিবাদ ও স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবি তুলেন। বিক্ষোভকারীরা গাজাবাসীর নিরাপত্তা, আল আকসা পুনরুদ্ধার, মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জিহাদের আহ্বান জানান।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘মার্চ ফর গাজা’ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঐক্য: সারজিস
  • চট্টগ্রামে ২০ সংগঠনকে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানমঞ্চে তুলতে প্রশাসনের নিষেধ
  • গণহত্যার প্রতিবাদ জানাতে রাজধানীতে জনতার ঢল
  • গণহত্যার প্রতিবাদে সরব বাংলাদেশ
  • গণহত্যা বন্ধ ও স্বাধীন ফিলিস্তিন দাবি
  • ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে বরিশালে বিক্ষোভ 
  • গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ জাসদের বিক্ষোভ
  • ইসলামী আন্দোলনকে বাইপাস করে সংসদে যাওয়ার সুযোগ নেই: চরমোনাই পীর
  • গাজায় গণহত‌্যা: জিএম কা‌দে‌রের নেতৃ‌ত্বে রাজধানী‌তে বি‌ক্ষোভ
  • ‘ইসরায়েলের পণ্য বর্জনের জিহাদ শুরু করতে হবে’