সুষ্ঠু নির্বাচন বানচালে একটি চক্র সক্রিয়: বকুল
Published: 21st, March 2025 GMT
সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন বানচাল করতে একটি চক্র সক্রিয় হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল। এ সময় তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ ছাত্রদলের সব নেতাকর্মীদের আবারও আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন।
শুক্রবার (২১ মার্চ) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তাদের অবদান ভুলে যাওয়া অসম্ভব। তবে আন্দোলন শেষ নয়, যে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিএনপির দীর্ঘদিনের আন্দোলন সেই আন্দোলনের জন্য আবারও প্রস্তুত হতে হবে।”
আরো পড়ুন:
ইফতারে মাহফিলে বাধা, জামায়াতের সঙ্গে ছাত্রদলের হাতাহাতি
যুবলীগ-ছাত্রলীগের হামলায় আহত ১০, থানায় অভিযোগ
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “জুলাই আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিচারের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিচারের দাবি জানাই।”
বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “১৫ বছরের আন্দোলন সংগ্রামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অপরিসীম। ভবিষ্যতে সকল ইউনিটে তাদের মূল্যায়ন করা হবে।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জুলাই আন্দোলনে নিহত ও আহতের মাঝে ঈদ উপহার তুলে দেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদের পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার সামগ্রী তুলে দেন তারা। এছাড়াও গুম হওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সন্ধান চেয়ে বিভিন্ন বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির। এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদলের একাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত হন। এতে সভাপতিত্ব করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল ও সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন।
ঢাকা/মেজবা/হাসান/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ন ত কর ম দ র ছ ত রদল র স
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিমা মাত্র
বাবেলের অধিবাসীরা যখন হজরত ইবরাহিমের (আ.) কথা কর্ণপাত করল না, শক্ত যুক্তিও মেনে নিতে রাজি হলো না, তখন তিনি দাওয়াত দেওয়ার ভিন্ন একটি কৌশল অবলম্বন করলেন। তাদের মন্দিরে অনেকগুলো কাঠের দেবদেবী ছিল, এর মধ্যে একটি ছিল প্রধান দেবতা। তিনি পরিকল্পনা করলেন তার জাতিকে দেখাবেন এই প্রতিমাগুলো কত দুর্বল—নিজের শরীর থেকে একটি মাছি তাড়াবারও শক্তি এদের নেই।
একদিন বাবেলে ধর্মীয় মেলা হবে, লোকজন ইবরাহিমকে (আ.) সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতে লাগল। ইবরাহিম (আ.) আকাশের তারকার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমি অসুস্থ।’ তিনি ঠিক মিথ্যা বলেননি, তার জাতির কুফরি কাজকর্মে তিনি আত্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তারা তার কথা বিশ্বাস করে। (সুরা সফফাত, আয়াত: ৮৮-৯০) ইবরাহিম (আ.) আস্তে আস্তে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, তোমরা চলে যাওয়ার পর আমি অবশ্যই তোমাদের প্রতিমাগুলোর কায়দা করব।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৫৭)
আরও পড়ুন‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া’ কখন পড়ব০৪ মার্চ ২০২৫এরপর তারা যখন চলে যায়, তিনি চুপি চুপি প্রতিমাগুলোর কাছে গেলেন। যাদের সামনে ছিল থরেথরে সাজানো ফলমূল আর সুস্বাদু খাবার। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি খাবে না? তোমাদের কী হয়েছে, কথা বলছো না কেন?’ (সুরা সফফাত, আয়াত: ৯১-৯৩) তিনি সজোরে মূর্তিগুলোর ওপর আঘাত হানলেন। কিন্তু বড় মূর্তিটাকে কিছু করলেন না, যেন ওটার ওপর সব দোষ চাপানো যায়।
লোকজন ধর্মমেলা থেকে ফিরে যখন মন্দিরের এই হাল দেখল, রেগেমেগে একদম বেহাল হয়ে হয়ে গেল। তারা বলল, ‘কে আমাদের দেবদেবীর এই অবস্থা করল? সে নিশ্চয় সীমালংঘনকারী। কেউ কেউ বলল, এক যুবককে দেখেছি এদের সমালোচনা করতে, তার নাম ইবরাহিম। তারা বলল, তাকে জনতার সামনে উপস্থিত করো, যেন তারা তাকে দেখতে পারে।’
ইবরাহিমকে (আ.) উপস্থিত করার পর তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘তুমিই কি আমাদের দেবদেবীদের এই হাল করেছ? ইবরাহিম (আ.) বললেন, ওই বড় দেবতাটাই এসব করেছে, ওটাকে জিজ্ঞেস করো, যদি কথা বলতে পারে!’
এ কথা শুনে তারা চিন্তায় পড়ে গেল। তারা একে অপরকে বলল, তোমরা দেবদেবীদের অরক্ষিত রেখে গেছ, তোমরাই বরং সীমালঙ্ঘনকারী। তারপর লজ্জায় তাদের মাথানত হয়ে গেল। তারা ইবরাহিমকে (আ.) বলল, ‘তুমি তো ভালো করেই জানো এরা কথা বলতে পারে না।’
আরও পড়ুনসুরা ইয়াসিনের সার কথা১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইবরাহিম (আ.) এই মন্তব্য শোনারই অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি বললেন, ‘তবে কি তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদত করো, যা তোমাদের কোনো উপকার করতে পারে না এবং কোনো ক্ষতিও করতে পারে না? ধিক তোমাদের এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদত কর তাদের। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না?’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত ৫৯-৬৭)
মূর্তিপূজার অসারতার এমন স্পষ্ট প্রমাণের পর বাবেলের অধিবাসীদের উচিত ছিল এক আল্লাহয় বিশ্বাস করা, হজরত ইবরাহিমকে (আ.) নবী বলে মেনে নেওয়া। কিন্তু তারা তা না করে ফন্দি আঁটতে থাকে কীভাবে মূর্তি ভাঙার প্রতিশোধ নেওয়া যায়, কীভাবে তাকে কঠিন শাস্তি দেওয়া যায়।
আল্লাহর শরিয়ত কোনো প্রাণীকেই জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার অনুমতি দেয় না, আর মানুষ তো সবচেয়ে সম্মানিত প্রাণী, তার বেলায় তো আরও আগে না। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস: ৩,৫৪২) কিন্তু কাফেরদের নীতিতে ইনসাফ নাই, মানবতা নাই, আছে কেবল পাশবিকতার জয়গান। আর তাই বাবেলের মূর্তিপূজারীরা সিদ্ধান্ত নেয়—এই যুবককে নিরস্ত করার একটাই উপায় আছে, আর তা হলো জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা।
আরও পড়ুনআল্লাহর কাছে যে দোয়া করেছিলেন নবী সোলায়মান (আ.) ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫