গাজা উপত্যকায় নির্মম হত্যা ও রক্তপাত বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরিভাবে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের সম্প্রসারণবাদী আগ্রাসন বন্ধ করে সেখানে জনগণের জানমালের নিরাপত্তাসহ শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে আরও বেশি সোচ্চার হতে হবে।

আজ শুক্রবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল এ আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব কয়েক দিন ধরে চলা অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় শিশুসহ অসংখ্য ফিলিস্তিনি হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ এবং তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে শোক জ্ঞাপন করেছেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, পবিত্র রমজান মাসেও ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর ওপর চলছে মানবতাহীন নিষ্ঠুর বর্বরতা। গাজা উপত্যকাকে বধ্যভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি উপেক্ষা করে নির্বিচার বিমান হামলায় নারী ও কোলের শিশুসহ হাজারের অধিক ফিলিস্তিনিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলের অবিরাম হামলায় ফিলিস্তিনের উপত্যকাটি যেন প্রাণহীন ঊষর মরুভূমিতে পরিণত হতে যাচ্ছে, উপত্যকাটি যেন এখন এক ভয়াল মৃত্যুপুরী।

যুদ্ধবিরতির পরও নতুন করে এই হামলা বেআইনি ও মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্যতম অপরাধ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গাজা উপত্যকায় রক্তপাত বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জরুরিভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ইসরায়েলের এই ভয়াবহ রক্তাক্ত আগ্রাসন ফিলিস্তিন জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার একটি সুপরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যান। বিশ্ব জনমতের কোনো তোয়াক্কা না করে দখলদার শক্তি ইসরায়েলিরা আধিপত্য বজায়ের খেলায় মেতে রয়েছে।

মির্জা ফখরুল ইসরায়েলি সামরিক হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করনে। তিনি নিহত ফিলিস্তিনিদের নিকটজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র ব এনপ ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগকে ‘পুনর্বাসনচেষ্টার’ প্রতিবাদে ক্ষোভ–বিক্ষোভ

আওয়ামী লীগকে ‘পুনর্বাসনের চেষ্টার’ প্রতিবাদে শুক্রবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। এসব কর্মসূচি থেকে বিচারের আগে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হলে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যার দায়ে দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিও উঠেছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নেতাদের ফেসবুক স্ট্যাটাসের পর গত বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ‘আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনচেষ্টার’ বিষয়টি আলোচনায় আসে। আলোচনার জেরে বৃহস্পতিবার রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। সেই রাত থেকেই ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় একটি বৈঠক করেন। ওই প্রতিনিধিদলকে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা অন্তর্বর্তী সরকারের নেই।

প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা হচ্ছে—এমন আলোচনা সামনে আনা হয়। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তাতে তিনি লেখেন, ‘আওয়ামী লীগ ৫ আগস্টেই নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। উত্তরপাড়া ও ভারতের প্রেসক্রিপশনে আওয়ামী লীগের চ্যাপটার ওপেন করার চেষ্টা করে লাভ নেই।’

এরপর ফেসবুকে আরেকটি স্ট্যাটাস দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তাতে তিনি লেখেন, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের। সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরীন শারমিন ও তাপসকে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।

১১ মার্চ সেনানিবাসে হাসনাত আবদুল্লাহসহ দুজনের কাছে এমন একটি পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের প্রস্তাব দেওয়া হয়, আসন সমঝোতার বিনিময়ে আমরা যেন এই প্রস্তাব মেনে নিই। আমাদের বলা হয়, ইতিমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দলকেও এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তারা শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে। একটি বিরোধী দল থাকার চেয়ে একটি দুর্বল আওয়ামী লীগসহ একাধিক বিরোধী দল থাকা নাকি ভালো। ফলে আপনি দেখবেন, গত দুই দিন মিডিয়াতে আওয়ামী লীগের পক্ষে একাধিক রাজনীতিবিদ বয়ান দেওয়া শুরু করেছেন।’

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ সমাবেশ থেকে ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ মঞ্চ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্মের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ