‘কচুক্ষেত’ থেকে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে বাস্তবায়িত হবে না: গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ
Published: 21st, March 2025 GMT
‘কচুক্ষেত’ থেকে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে বাস্তবায়িত হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। আজ শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের নেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেন। ওই কর্মসূচি থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে দিয়ে শাহবাগ হয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের নেতা–কর্মীরা। সেখানে সমাবেশে বক্তারা ঘোষণা দেন, ‘কচুক্ষেত’ থেকে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে বাস্তবায়িত হবে না।
সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব জাহিদ আহসান বলেন, আওয়ামী লীগ নামে ও তাদের প্রতীক নিয়ে কাউকে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। কচুক্ষেত থেকে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাংলাদেশে বাস্তবায়িত হবে না।
গত ৫ আগস্টের পর দেশের শাসনক্ষমতার কাঠামো বদলে যাবে এবং রাষ্ট্রকাঠামোও বদলে যাবে বলে মন্তব্য করেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র আশরেফা খাতুন। তিনি বলেন, ‘সেনানিবাস, ভারত ও কিছু রাজনৈতিক দলের প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। যতক্ষণ আমাদের শিরায় এক ফোঁটা রক্ত থাকবে, ততক্ষণ আমরা আওয়ামী লীগকে ফিরে আসতে দেব না।’
সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখপাত্র রাফিয়া রেহনুমা হৃদি বলেন, দেশের জনগণ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে নতুন বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত জনগণ নেবে। কচুক্ষেত থেকে আর কোনো সিদ্ধান্ত আসবে না। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য পর্দার আড়ালে অনেক রাজনৈতিক দল কাজ করছে। তারা সংস্কার ছাড়াই ক্ষমতা দখল করতে এবং একটি নতুন ফ্যাসিবাদী কাঠামো প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব সাকিব আহমেদসহ অন্য নেতা–কর্মীরা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুই ছাত্রীকে ধর্ষণে জড়িতদের গ্রেপ্তারে আলটিমেটাম
নরসিংদীর চরআড়ালিয়ায় ষষ্ঠ শ্রেণির দুই ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর বাঘাইকান্দি গ্রামের কাজীবাড়ির মোড়ে রায়পুরা উপজেলার চরআড়ালিয়া ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন হয়।
ধর্ষণের অভিযোগে ইমরান, রাজ্জাক, আব্দুর রহমান, সাইফুল মিয়া, রমজান, কাইয়ুম ও তার দুই সহযোগীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বক্তারা। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে এত ধর্ষণ হচ্ছে কিন্তু অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের কোনো বিচার হচ্ছে না। পুলিশ কী করে? অনতিবিলম্বে ধর্ষণে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছেন তারা। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তা না হলে জনগণ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে। আলটিমেটাম দিয়ে তারা বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষকদের আইনের আওতায় আনা না হলে রামপুরা থানাসহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করা হবে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন চরআড়ালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জহিরুল ইসলাম জাজু, স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু মুসা, জেলা ছাত্রনেতা সাব্বির ভূঁইয়া, সাবেক চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান সরকার প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকেল ৩টার দিকে দুই বান্ধবী চরআড়ালিয়া গ্রামের কাইয়ুম ও মুন্নার সঙ্গে ঘুরতে বের হয়। তারা সারা বিকেল ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাযোগে বাঘাইকান্দি এলাকা থেকে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি এবং খাওয়া-দাওয়া করে। পূর্ব থেকেই কাইয়ুম ও মুন্না তাদের বন্ধুদের পূর্ব বাঘাইকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থাকতে বলে। সে অনুযায়ী অন্য বন্ধুরা স্কুলের সামনে অপেক্ষা করতে থাকে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে অটোরিকশাযোগে তাদের নিয়ে পূর্ব বাঘাইকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে যায় কাইয়ুম ও মুন্না। সেখানে যাওয়ার পর এক ছাত্রীকে জোর করে স্কুলের পাশে নিক্সন মেম্বারের বাড়ির ছাদে নিয়ে যায় ইসরাফিল, সাইখুল, রমজান ও কাইয়ুম এবং অপর ছাত্রীকে মুন্না, ইমরান, রাজ্জাক, আব্দুর রহমান নদীর পারে নিয়ে যায়। সেখানে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় অভিযুক্তরা। এ সময় ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী চিৎকার দিতে চাইলে ইট হাতে নিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যার হুমকি দেয়। পরে দুই ছাত্রী বাড়ি ফিরে গেলে অবস্থা দেখে স্বজনরা জানতে চাইলে ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ পায়। এ ঘটনায় রায়পুরা থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে দুটি মামলা করা হয়েছে।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।