রংপুরের বদরগঞ্জে সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে বদরগঞ্জ থানার ওসি এ কে এম আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগসহ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

শুক্রবার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম।

প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন বদরগঞ্জ থানার এএসআই রবিউল আলম, কনস্টেবল আল-আমিন হোসেন ও মজিবুর রহমান। 

ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম এম এ সালাম বিশ্বাস। তিনি দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার বদরগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বাঁ হাতে ও পায়ে আঘাত পেয়েছেন।

এর আগে গত বুধবার (১৯ মার্চ) বিকেলে বদরগঞ্জ থানার মূল ফটক থেকে ১০০ গজ দূরে থানার ভেতর থেকে পুলিশের একটি পিকআপ এসে থামে। পিকআপ ভ্যানের ভেতরে থাকা কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিজেরা বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এ দৃশ্য মুঠোফোনে ভিডিও করেন এম এ সালাম বিশ্বাস। এ সময় কনস্টেবল আল-আমিন তাকে ভিডিও করতে নিষেধ করেন। একপর্যায়ে কথা কাটাকাটি থেকে তাকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এরপর তাকে তারা থানায় নিয়ে যান এবং ওসির সামনে আবারও মারধর করেন। পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের সহযোগিতায় থানা থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে রংপুরের স্থানীয় সাংবাদিকরা অভিযুক্ত ওসিসহ পুলিশ সদস্যের বিচারের দাবি জানিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এরপরই রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম এ ঘটনায় ৩ পুলিশকে প্রত্যাহার করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম রধর প ল শ সদস য বদরগঞ জ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

পুলিশ সদস্যদের বাগ্‌বিতণ্ডা মুঠোফোনে ভিডিও করায় সাংবাদিককে মারধর

রংপুরের বদরগঞ্জে পুলিশ সদস্যদের বাগ্‌বিতণ্ডার ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করার সময় এক সাংবাদিককে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। পরে পুলিশ সদস্যরা ওই সাংবাদিককে চেংদোলা করে তুলে থানায় নিয়ে যান। গতকাল বুধবার বেলা তিনটার দিকে বদরগঞ্জ থানার মূল ফটক থেকে ১০০ গজ দূরে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী আবদুস সালাম বিশ্বাস দৈনিক আমার দেশের বদরগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি। তাঁকে বদরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক আহসান হাবীব জানান, আবদুস সালামের বাঁ হাতে ও পায়ে আঘাতের কারণে কিছুটা ফুলে গেছে।

আবদুস সালাম বিশ্বাস বলেন, গতকাল বেলা তিনটার দিকে তিনি বদরগঞ্জ থানার মূল ফটক থেকে ১০০ গজ দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় থানার ভেতর থেকে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান তাঁর সামনে এসে থামে। পিকআপ ভ্যানের ভেতরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য বাগ্‌বিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এ দৃশ্য তিনি মুঠোফোনে ভিডিও করছিলেন। তখন কনস্টেবল আল আমিন (২৩) তাঁকে ভিডিও করতে নিষেধ করেন।

সালাম বিশ্বাসের ধারণ করা ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ‘ওই পুলিশ সদস্য (আল আমিন) ক্ষিপ্ত হয়ে বলতে থাকেন, ‘ভিডিও বন্ধ না করলে পিটাব।’ একপর্যায়ে তিনি থাবা দিয়ে মুঠোফোনটি কেড়ে নেন।

আবদুস সালাম অভিযোগ করেন, ‘মুঠোফোন কেড়ে নেওয়ার পর পুলিশের ওই সদস্যসহ পিকআপ ভ্যান থেকে নেমে এসে আরও তিনজন পুলিশ সদস্য তাঁকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে কিলঘুষি মারেন। এরপর ওই পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে তাঁকে চেংদোলা করে ধরে থানার ভেতরে নিয়ে যান।

ওই ঘটনার খবর পেয়ে উপজেলায় কর্মরত অন্তত ১০ সংবাদকর্মী থানায় ছুটে যান। পরে পুলিশ সদস্যদের ওই কর্মকাণ্ডে দুঃখ প্রকাশ করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরাও ক্ষমা চান।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে কনস্টেবল আল আমিন বলেন, ‘আমরা নিজেদের সমস্যা নিয়ে উচ্চ স্বরে কথা বলছিলাম। এ সময় মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করছিলেন আবদুস সালাম। তাঁর পরিচয় জানতে চেয়ে ভিডিও করতে বারণ করি। কিন্তু তিনি তা শোনেননি। এ কারণে মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে তাঁকে থানার ভেতরে নিয়ে যাই। তাঁকে কোনো মারপিট করিনি। তবু ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে মাফ চেয়েছি।’

ওসি এ কে এম আতিকুর রহমান বলেন, ওই পুলিশ সদস্যরা রংপুর পুলিশ লাইনস থেকে বদরগঞ্জ থানায় এসেছিলেন। দায়িত্ব পালন শেষে তাঁরা ওই সময়ে থানা থেকে রংপুরে যাচ্ছিলেন। থানা ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা ওই সংবাদকর্মীর সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে অপেশাদারি আচরণ করেছেন। পরে তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত সাংবাদিকদের মধ্যস্থতায় ঘটনাটি আপস–মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বদরগঞ্জে সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগে পুলিশের ৩ সদস্য প্রত্যাহার
  • পুলিশ সদস্যদের বাগ্‌বিতণ্ডা মুঠোফোনে ভিডিও করায় সাংবাদিককে মারধর