গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের বাইরে সীমান্তের কাছে মঙ্গলবার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ভেঙে পড়া ভবনের ধ্বংসাবশেষ তন্ন তন্ন করে খুঁজছিলেন উদ্ধারকারীরা। কেউ আটকে পড়েছে কিনা, তা দেখছিলেন তারা। তখনই ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে একটি নবজাতকের কান্নার শব্দ ভেসে আসে। একজন দৌড়ে এসে জীবিত শিশুটিকে কোলে তুলে নেয়। তার শরীরে কম্বল মোড়ানো। এ সময় সবার মুখ থেকে ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনি বেরিয়ে আসে।

এরপর তাকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেওয়া হয়। প্যারামেডিকরা যখন শিশুটিকে পরীক্ষা করছিল, তখন সে থেমে থেমে নড়ে উঠছিল। গত মঙ্গলবার সাহ্রির সময় আকস্মিক ইসরায়েলি বিমান হামলায় শিশুটির দাদা ছাড়া বাবা-মা ও ভাই নিহত হন।

হাজেন আত্তার নামের এক বেসামরিক প্রতিরক্ষাকর্মী বলেন, স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞেস করে আমরা জানতে পারি, শিশুটির বয়স ২৫ দিন। বিমান হামলার পর থেকেই ইটপাথরের ভেতরে আটকা পড়ে সে। তখন থেকে শিশুটি কান্না করে যাচ্ছিল। ধীরে ধীরে তার গলার স্বর কমে নীরব হয়ে যায়। আর কাঁদতে পারছিল না। এর পর তাকে আমরা উদ্ধার করেছি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে, সে এখন নিরাপদ। মেয়ে শিশুটির নাম ইল্লা ওসামা আবু দাগ্গা। ২৫ দিন আগে গাজায় নড়বড়ে যুদ্ধবিরতির মধ্যে শিশুটি জন্ম নিয়েছে। এপি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উদ ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ যানবাহন যানজটে নগরবাসীর ভোগান্তি

ঈদুল ফিতর সামনে রেখে কুমিল্লা নগরীর রাস্তা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা। যত্রতত্র গাড়ির পার্কিং এবং সড়কের পাশে অ্যাম্বুলেন্স ও মোড়ে মোড়ে অঘোষিত স্ট্যান্ডের কারণে যানজট লেগে থাকছে।
যানজট নিরসনে দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক), জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও বিষয়টি ঝুলে আছে। সিটি করপোরেশনের তথ্য অনুসারে নগরীতে চলাচলকারী এসব অবৈধ যানবাহনের লাইসেন্স দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরে তা আর আলোর মুখ দেখেনি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, যানজট নিরসন ও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ২০২২ সালের ৩০ জানুয়ারি কুমিল্লা সার্কিট হাউসে সভা করা হয়। এই সভায় নগর কর্তৃপক্ষ, জেলা ও পুলিশ প্রশাসন সমন্বয়ে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করে ৮টি কর্মকৌশল নির্ধারণ করা হলেও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। যানজটে জনভোগান্তির বিষয়ে সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক পুলিশের নির্লিপ্ততাকে দুষছেন নগরবাসী। 
নগরীর সড়কগুলো ঘুরে দেখা গেছে, কুমিল্লা নগরীর কেন্দ্রস্থল কান্দিরপাড় থেকে দক্ষিণে টমছমব্রিজ হয়ে পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড যেতে হয়। এক লেনের এই সড়কে বিভিন্ন পরিবহনের বাস ছাড়াও স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-স্টাফ ও শিক্ষার্থীদের বহনকারী বাস, মিনিবাস, সারি সারি অ্যাম্বুলেন্স, অটোরিকশা, ইজিবাইক, লেগুনা ও ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করে। রমজানেও কমেনি অবৈধ যানবাহনের দাপট।
অপরদিকে নগরীর নজরুল অ্যাভিনিউ, বাদুরতলা, ঝাউতলা, রানীর বাজার, শাসনগাছা, কান্দিরপাড়, রামঘাট, মনোহরপুর, টমছমব্রিজ চৌরাস্তার মোড়, রাজগঞ্জ ও চকবাজার এলাকায় যানজটের ভোগান্তির চিত্র দেখা গেছে। ঈদ ঘিরে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কান্দিরপাড় মনোহরপুর এলাকার সড়কগুলোর দুই পাশের ফুটপাত দখল করায় যানজটের ভোগান্তি বেড়েছে। এসব এলাকায় সড়কের যত্রতত্র অটোরিকশা, ইজিবাইক, রিকশা থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করার কারণে যানজটের 
সৃষ্টি হয়।
নগরীর সাত্তার খান কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিন বলেন, ‘অবৈধ অটোরিকশা, ইজিবাইকগুলো বেআইনিভাবে শহরে চলাচল করলেও এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। শহরে অবৈধ যানবাহনের দাপট বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ব্যাপারে নগর কর্তৃপক্ষেরও কোনো তদারকি চোখে পড়ে না। টমছমব্রিজ থেকে কান্দিরপাড় সড়কে ১০ মিনিটের পরিবর্তে কখনও ৩০ মিনিট লাগে।’ 
কুমিল্লা নাগরিক ফোরামের সভাপতি কামরুল আহসান বাবুল জানান, বৈধ-অবৈধ যানবাহনের চাপে শহরে যানজট অনেকটা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। এতে জনগণকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
তবে কুমিল্লা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক সারোয়ার মো. পারভেজের ভাষ্য, সামনে ঈদুল ফিতর। শহরে ক্রেতা সমাগম ক্রমেই বাড়ছে। অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশার চলাচলও বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৮০ জন জনবল দিয়ে যানজট নিরসনে সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের অবৈধ এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণ 
করার কথা।’
কুসিকের লাইসেন্স পরিদর্শক কাজী আতিকুর রহমান সমকালকে জানান, ২০২৩ সালে প্রয়াত মেয়র আরফানুল হক রিফাত পায়ে চালিত রিকশা ও মিশুক নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই উদ্যোগ আর বাস্তবায়ন হয়নি। যানবাহনের সব ধরনের লাইসেন্সই এখন বন্ধ। কখন চালু হবে তাও জানা নেই।
কুসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছামছুল আলমের ভাষ্য, নগরীর সড়ক যানজটমুক্ত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। কিন্তু হঠাৎ করেই এক দিনে অবৈধ রিকশা-ইজিবাইক চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। জেলা ও পুলিশ প্রশাসনসহ 
সম্মিলিত উপায়ে এ বিষয়ে শিগগিরই একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ