বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন করতে যতটুকু সংস্কার করা দরকার, ততটুকু করেই নির্বাচনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। শুক্রবার রাজধানীর লেডিস ক্লাবে পেশাজীবীদের সম্মানে বিএনপি আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ একটা অত্যন্ত কঠিন সময় অতিক্রম করছি। একটা ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পরাজিত করে, বিতাড়িত করা হয়েছে। একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে এবং একটা নতুন গণতান্ত্রিক পার্লামেন্ট এবং সরকার গঠিত হবে সে প্রত্যাশায় এ দেশের জনগণ অপেক্ষায়। আমরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আমাদের ভূমিকা আমরা পালন করব।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যারা রাজনীতি করছি, বিভিন্ন পেশাতে আছি, সবাই আমরা এমনভাবে কথা বলব, কাজ করব যাতে গণতন্ত্রের উত্তরণের পথকে সুগম করে।

তিনি বলেন, রাষ্ট্র ব্যবস্থা যে ভেঙে পড়ছে, সেই কারণেই প্রায় দুই বছর আগে আমাদের নেতা তারেক রহমান সংস্কারের জন্য ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছেন। সেই কর্মসূচির মধ্যে আমাদের সংস্কারের যে কথাগুলো বলা আছে, আমরা মনে করি যথেষ্ট, দেশের পরিবর্তনের জন্য।

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। আমরা তাদের সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ রাখছি এবং তাদের যে প্রস্তাব সে প্রস্তাবগুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করছি এবং আমাদের মতামতগুলো সেভাবে প্রদান করছি।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আবেগের মধ্য দিয়েও সমস্যার সমাধান করা যাবে না। আমাদেরকে বাস্তববাদী চিন্তা করে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতে হবে। পরিবর্তনকে সামনে নিয়ে একটা নতুন বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। আমি সবাইকে আবার অনুরোধ করব, অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গে সতর্কতার সঙ্গে আপনারা ভূমিকা পালন করবেন। বিশেষ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সঙ্গে যারা আমরা জড়িত আছি, তারা যেন এমন কোনো পদক্ষেপ না নিই, যে পদক্ষেপ আমাদেরকে কোনো ভুল পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

ইফতার মাহফিলে যোগ দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.

খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারপারসন শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার প্রমুখ।

পেশাজীবীদের মধ্যে অংশ নেন যায়যায়দিনের সম্পাদক শফিক রেহমান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, অর্থনীতিবিদ মাহবুব উল্লাহ, যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার, সিনিয়র সাংবাদিক এম আজিজ, আবদাল আহমেদ, চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ম র জ ফখর ল আম দ র ফখর ল সরক র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে পুলিশ পাহাড়ায় যুবলীগ নেতার অনুমোদন বিহীন হাসপাতাল উদ্বোধন 

নানা বিতর্কের মধ্য দিয়ে  বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর প্রকাশ্যে  গুলিবর্ষণকারি বন্দরে  যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদের মালিকানাধীন নবনির্মিত বহুতল ভবনে অনুমোদন বিহীন হাসপাতালটি অবশেষে পুলিশ পাহাড়ায় উদ্বোধন করা হয়েছে।  

সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)র একাধিক  নেতৃবৃন্দ পরিচালনায় মদনপুর  স্পেশালাইজড হসপিটাল নামে এ  হাসপাতালটি শুভ উদ্বোধন করা হয়।  

বন্দর উত্তরাঞ্চলের শীর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা অহিদের অবৈধ অর্থে গড়ে তোলা এ বহুতল ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে  নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে উপস্থিতি বিষয়ে তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে  বিতর্কের সৃষ্টি হওয়ায়  শীর্ষ নেতারা এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে  উপস্থিত হননি।  

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন অঙ্গ সংগঠন স্বাচিপ নেতৃবৃন্দের পরিচালিত অনুমোদন বিহীন হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন, ধামগড় পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মফিজুর রহমান।  পুলিশ পাহাড়ায়  যুবলীগ নেতার ভবন উদ্বোধনী এ অনুষ্ঠান ঘিরে স্থানীয় লোকজন ও  তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীদের  মধ্যে বইছে সমালোচনার ঝড়। 


জানাগেছে,  নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের সহচর  ও ছাত্র-জনতা  হত্যা সহ  একাধিক মামলার আসামি  অহিদুজ্জামান অহিদের অবৈধ অর্থে নবনির্মিত মদনপুর স্পেশালাইজ্ হসপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক  মো. আজমল খাঁনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে  অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম আহম্মেদের সহধর্মিণী জোসনা বেগম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতা , শিশু কিশোর ও নবজাতক রোগ বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক (শিশু বিভাগ) ডাঃ এম. করিম,  মেডিসিন, ডায়াবেটিস, লিভার এবং পরিপাকতন্ত্র রোগ বিশেষজ্ঞ স্বাচিপ নেতা  ডাঃ রাজ দত্ত, গাইনী বিশেষজ্ঞ ও সার্জন বন্ধ্যাত্ব, গাইনী ক্যান্সার রোগে বিশেষ অভিজ্ঞ,  স্বাচিপ নেতা  ডাঃ তাহমিনা খাঁন ও সমাজ সেবক বারেক মেম্বার  প্রমুখ।


স্থানীয় ও বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী  জানান, বিগত আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় ক্ষমতাবলে  অহিদুজ্জামান অহিদ  মদনপুর এলাকায় গড়ে তোলে এক অস্ত্রধারি সন্ত্রাসী বাহিনী। অহিদের নেতৃত্বে  এ বাহিনীর  নিয়ন্ত্রণে  মদনপুর এলাকা সহ উত্তরাঞ্চলের  মদক, চাঁদাবাজি,  দখল, ছিনতাই সহ নানা অপকর্ম।

৫ আগস্টের পর বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণের সেল্টারে  যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদ পুণবহালে। ইয়াবা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানো পূর্বের ঘটনা পূনরায় ঘটনার আশঙ্কায়  আতঙ্কিত স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার উপর হামলা ও ছাত্র হত্যা সহ একাধিক মামলার আসামি যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদ অদৃশ্য ইশারায় বহাল তবিয়তে।  এ অদৃশ্য শক্তিতে পূর্বের ন্যায় ধামগড় পুলিশ ফাঁড়ি তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রিত বলে অভিযোগ উঠেছে।

বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতির হিরণ বলেন,  বিএনপি শীর্ষ নেতাদের নাম পদবি লিখে অহিদ নিজেই  দাওয়াত কার্ড ছাপিয়ে  ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়।  তারপর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের  মধ্যে ক্ষোভ  তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।  এ  অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত  অতিথি বিষয়ে বিএনপির নেতারা কেউ অবগত ছিলেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।

হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মাহাবুব জানান, মদনপুর স্পেশালাইজড হসপিটাল নামে হাসপাতালটির অনুমোদনের জন্য অনলাইনে আবেদন করা হয়েছে। পর্যায়ে ক্রমে অনুমোদনের আশাবাদী।

বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, উদ্বোধন অনুষ্ঠানকে ঘিরে হাসপাতাল ভাংচুর হামলা হতে পারে এমন একটি তথ্যের ভিত্তিতে আপত্তিকর ঘটনা এড়াতে পাহাড়ায় ছিলেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন, ডাঃ এ এফ এম মশিউর রহমান বলেন, বন্দরের মদনপুর এলাকায় স্পেশালাইজ্ হসপিটাল লিমিটেড হাসপাতালের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তবে অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে কি না খোঁজ নিয়ে বলা যাবে। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ