রাজশাহীর আলোচিত মিম (২৮) হত্যা মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তার নাম সেলি বেগম (৩৫)। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র‌্যাব-৫ রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের একটি দল নগরের এয়ারপোর্ট থানার থালতা এলাকা থেকে সেলিকে গ্রেপ্তার করে।

শুক্রবার (২১ মার্চ) সকালে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব এ তথ্য জানিয়েছে। সেলিকে বোয়ালিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে র‌্যাব।

সেলি বেগম রাজশাহী নগরের শেখেরচক বিহারী বাগান এলাকার মৃত আশরাফুল ইসলামের স্ত্রী। তিনি এ মামলার ২ নম্বর আসামি। মামলার প্রধান আসামি মো.

রুবেল তার বোনের ছেলে।

আরো পড়ুন:

খুলনায় ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা

নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ১

রাজশাহী নগরের রামচন্দ্রপুর মহল্লার দিনমজুর মিম ২৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত হারান শেখের নাতি। তার পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত। তার রাজনৈতিক পদ পদবি না থাকলেও নগর যুবলীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক রাজিব মতিনের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে থাকতেন, তার কাজ করে দিতেন তিনি। আওয়ামী সরকারের পতনের পর মিম আত্মগোপনে ছিলেন। তারপর ২৬ অক্টোবর এলাকায় ফেরেন। সেদিনই হত্যার শিকার হন তিনি।

ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ৮-১০ জন যুবক তাকে ধাওয়া করছে। ধরার পর হাত ধরে তাকে ছেঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছেন কয়েকজন। পরে তাকে চ্যাং-দোলা করে নেওয়া হয়। মীমকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় পঞ্চবটি এলাকায়। খবরে ছুটে যান তার মা কেয়া বেগম। গিয়ে দেখেন, একটি কক্ষে আটকে রেখে হাতুড়িপেটা করা হচ্ছে মিমকে।

তার অনুরোধেও না ছাড়া হলে কেয়া ছুটে যান বোয়ালিয়া থানায়, কিন্তু পুলিশ আসেনি। এরইমধ্যে মিমের পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রেখে আসা হয়। এরপর ট্রলিম্যানেরা ওয়ার্ডে নিলে ওই রাতেই মারা যান মিম।

এ ঘটনায় মিমের মা মা কেয়া বেগম স্থানীয় যুবদলকর্মী রুবেলসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং নাম না জানা আরো ৮-১০ জনকে আসামি করে বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেন। তারপর রুবেল, রুহুল, জাহিদ ও রজব নামের চারজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। গতকাল বৃহস্পতিবার মামলার ২ নম্বর আসামিকে গ্রেপ্তার করল র‌্যাব।

কেয়া বেগম শুক্রবার দুপুরে জানান, তার ছেলেকে নির্যাতনের সময় এই সেলি বেগমও ছিলেন। সেলি বেগম নিজেই তার ছেলেকে মারধর করছিলেন, এমন দৃশ্য তিনি নিজের চোখেই দেখেছেন।

মামলার অন্য আসামিদেরও দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে কেয়া বেগম বলেন, “আগে গ্রেপ্তার হওয়া মামলার চার আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়ে জেল থেকে বেরিয়েছেন। আর সেলি র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হলেন। অন্য আসামিদের কাউকেই পুলিশ এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেনি।”

কেয়া বলেন, “আসামিরা জামিনে বের হয়ে আমার আত্মীয়-স্বজনকে বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন দিচ্ছে। ঈদের পরে তারা এলাকায় ঢুকবে বলছে। এখন মীমাংসা করে নিতে বলছে। তা না হলে, ভাল হবে না বলে হুমকি দিচ্ছে। আমার ছেলেকে এনে দিক, মীমাংসা করব। তা না হলে কীসের মীমাংসা?”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য গ র প ত র কর

এছাড়াও পড়ুন:

উত্ত্যক্তের বিচার চাওয়ায় শ্লীলতাহানি, অপমানে আত্মহত্যার চেষ্টা স্কুলছাত্রীর

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় উত্ত্যক্তের বিচার চাওয়ায় এক স্কুলছাত্রীকে (১৫) শ্লীলতাহানি ও অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর অপমানে স্কুলছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে তিনজনের নাম উল্লেখ করে হাতিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্কুলছাত্রীকে বিদ্যালয়ে আসা–যাওয়ার সময় প্রায় উত্ত্যক্ত করতেন স্থানীয় তিন বখাটে তরুণ। এ বিষয়ে সামাজিকভাবে বিচার চাওয়া হলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। পরে গতকাল রাতে ঘর থেকে বের হয়ে শৌচাগারে যাওয়ার সময় ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি ও অপহরণের চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই ছাত্রী। পরিবারের সদস্যরা মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।

ছাত্রীর বাবা বলেন, তাঁর মেয়ে খুবই অসুস্থ। সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। অভিযুক্ত তিনজন এলাকায় অনেক অপকর্মে জড়িত বলে জানান তিনি।

ছাত্রীর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ছাত্রীটি মানসিক ট্রমার মধ্যে আছে। অভিযুক্ত ছেলেগুলো এলাকায় বখাটেপনা করে বেড়ায়। মেয়ের বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

হাতিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম আজ শুক্রবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, উত্ত্যক্ত ও নির্যাতনের শিকার হয়ে এক ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তাঁরা হাসপাতালে গিয়ে ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এ বিষয়ে মেয়েটির বাবা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ