বরগুনায় ধর্ষণের হুমকির অভিযোগে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা, প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন
Published: 21st, March 2025 GMT
বরগুনার আমতলী উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা করেছেন আমতলীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন করা এক ছাত্রী। জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদনের পরদিন গত মঙ্গলবার এটি থানায় নথিভুক্ত হয়।
এদিকে মামলাটি ‘মিথ্যা ও হয়রানিমূলক’ দাবি করে প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার আমতলীতে মানববন্ধন করেছে উপজেলা ও পৌর ছাত্রদল। অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা ইমরান খানের দাবি, ওই ছাত্রী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী। আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী সেজে নানা অপকর্ম করছেন। অপকর্মের প্রতিবাদ করায় ধর্ষণের হুমকির মিথ্যা মামলা দিয়েছেন।
এ বিষয় ওই ছাত্রী প্রথম আলোকে জানান, তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের একটি পদে ছিলেন। ১৫ জুলাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে সেই পদ থেকে পদত্যাগ করে আন্দোলনে যোগ দেন। তিনি ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে নয়, ব্যক্তি ইমরান খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযোগকারী আমতলীর একটি কলেজের শিক্ষার্থী। কলেজে যাওয়া-আসার পথে বিভিন্ন সময় তাঁকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করতেন ইমরান খান। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আসামি তাঁর (ছাত্রী) ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এরপরও রাজি না হওয়ায় ইমরান তাঁর ফেসবুক থেকে তাঁর নামে ধর্ষণের হুমকি দেন। এ ঘটনায় ১৫ মার্চ জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ছাত্রী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। আসামি ক্ষিপ্ত হয়ে মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়ে তাঁকে আবার ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, গত রোববার ইফতার শেষে মাগরিবের নামাজের পর আমতলী চৌরাস্তার মাছবাজার থেকে মাছ কিনে রিকশায় ফেরার পথে পৌরসভার পল্লবী রোডের এ কে স্কুলের সামনে পাকা সড়কে আসামি একটি মোটরসাইকেল নিয়ে গতিরোধ করেন এবং তাঁকে শ্লীলতাহানি করে মোটরসাইকেলে ওঠানোর চেষ্টা করেন। রিকশাচালক ও তাঁর ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন বাধা দিলে আসামি তাঁকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মেরে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেন। এ সময় ধর্ষণ করে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যান।
জানতে চাইলে মামলার বাদী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি। বিষয়টি আমি নাহিদ ভাইকে (জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক) জানিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাকে ছাত্রলীগের নেতা বলে পরিচয় দিচ্ছেন। আমি আগে ছাত্রলীগ করতাম। ১৫ জুলাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রলীগের পদ থেকে পদত্যাগ করেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান বলেন, ‘নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ওই নেত্রী আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রী সেজে নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। তাঁর অপকর্মের প্রতিবাদ করায় তিনি আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণের হুমকির মিথ্যা বানোয়াট মামলা করেছেন। মামলায় অপহরণ ও ধর্ষণের হুমকির যে সময় উল্লেখ করা হয়েছে, তখন আমি ঢাকায় ছিলাম। এ ঘটনায় তাঁর দলের বহিষ্কৃত নেতাদের ইন্ধন আছে।’ তিনি বলেন, ‘ওই নেত্রীর সঙ্গে আমার একটা সুসম্পর্ক ছিল। আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে ওই নেত্রীর নামে নানা পোস্ট করা হয়েছে। বিষয়টি আমি তখন আমতলী থানার ওসিকে জানিয়েছি।’
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার নথি হাতে পেয়েছি। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মামলাটি এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইমর ন খ ন ছ ত রদল অপকর ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিস্তিনে হামলার প্রতিবাদে আইন সমিতির মানববন্ধন ও পথযাত্রা কর্মসূচি
ফিলিস্তিনের গাজায় নিরীহ মানুষের ওপর বোমা ও গুলিবর্ষণ, হত্যাকাণ্ড, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও পথযাত্রা কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ আইন সমিতি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে প্রথমে মানববন্ধন ও পরে পথযাত্রা হয়।
‘ইসরায়েল কর্তৃক গাজায় নিরীহ মানুষের ওপর বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী অপরাধ ও ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও পথযাত্রা’; আয়োজনে বাংলাদেশ আইন সমিতি—এমন ব্যানারে বেলা একটার দিকে মানববন্ধন শুরু হয়। মানববন্ধন শেষে সেখান থেকে পথযাত্রা শুরু করে মাজার গেট দিয়ে বের হয়ে শিক্ষা ভবন হয়ে আবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে এসে তা শেষ হয়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আইন সমিতির আহ্বায়ক আইনজীবী মনির হোসেন। মানববন্ধনে তিনি বলেন, প্রায় ১০ বছর ধরে ক্রমাগত বোমা ও গুলিবর্ষণের মাধ্যমে প্রায় ৬২ হাজার নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। গাজায় বেশির ভাগ ভবন, বাড়িঘর ভেঙে নিশ্চিহ্ন করেছে। এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। নেতানিয়াহুর আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার দাবি করছি এবং মানুষ ও জানমালের ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। পাশাপাশি ফিলিস্তিনি মুসলমানদের গাজাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি মো. জসীম উদ্দিন সরকার, আইন সমিতির সাবেক সভাপতি এ বি এম ওয়ালিউর রহমান, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সদস্যসচিব গাজী তৌহিদুল ইসলাম, আইনজীবী সিদ্দিকুর রহমান, মাকসুদ উল্লাহ ও মো. আজিজুল হক বক্তব্য দেন। এরপর অনুষ্ঠিত পথযাত্রায় নেতৃত্ব দেন আইনজীবী মনির হোসেন।