কথিত ৭৩০ কোটি টাকা রেমিট্যান্সে কী কী ‘অনিয়ম’ থাকতে পারে
Published: 21st, March 2025 GMT
অর্থনীতির বিষয়গুলো আমি খুব ভালো বুঝি না। বুঝতে চাইলেও অনেক সময় ঠিকমতো বোঝা হয়ে ওঠে না। তাই বলে আমি যে অর্থনীতি বুঝতে চেষ্টা করি না তা নয়। এইতো ১৬ মার্চ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে এক মতবিনিময় সভায় জানালেন, রেমিট্যান্সের নামে এক ব্যক্তি ৭৩০ কোটি দেশে এনেছেন। শিরোনামটা পড়ে আমার খুব ভালো লাগল, আমি বুঝতে চেষ্টা করলাম।
আমাদের দেশ এখন দারুণ অর্থনৈতিক দুর্দশায়। বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে ব্যাংকগুলোকে সচল রাখছে। প্রবাসীদের রেমিট্যান্স ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে বিদেশি মুদ্রার আয় দিন দিন কমছে। বিদেশিরা ডলার নিয়ে আসছে না আমাদের দেশে লগ্নি করতে। এইসময় বিদেশ থেকে ৭৩০ কোটি সমান বৈদেশিক মুদ্রা আসা দেশের জন্য দারুণ সুখবর, যেন হঠাৎ লটারি পাওয়ার মতো।
খবরটা পুরা পড়লাম। মনে হলো এনবিআর চেয়ারম্যান টাকাটা পেয়ে খুশি নন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আইন করলাম যে, আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা যারা কঠোর পরিশ্রম করে বিদেশ থেকে টাকা উপার্জন করে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশে নিয়ে আসে, তাদের ক্ষেত্রে আমরা বললাম, তাদের এই আয়টা ট্যাক্স ফ্রি হবে বাংলাদেশে।.
রেমিট্যান্সের নামে এক ব্যক্তির এত বিপুল অর্থ আনার ক্ষেত্রে নিয়মের ব্যত্যয় হয়েছে বলে মনে করছেন এনবিআর চেয়ারম্যান। কিন্তু কোথায় নিয়মের ব্যত্যয় হয়েছে, তা তিনি খুলে বলেননি। এখানে উল্লেখ্য যে রেমিট্যান্স হিসেবে এই পরিমান অর্থ এসেছে গত ৯/১০ বছরে।
আমার থেকে পুরো ব্যাপারটা খুব ঘোলাটে মনে হলো। আর এনবিআর চেয়ারম্যান এই ঘটনাটা এত ঘটা করে বলার প্রয়োজনই বা কী ছিল? তিনি কি প্রবাসীদের সাবধান করে দিচ্ছেন-খবরদার, এত টাকা পাঠাবেন না। নিশ্চয় ঘাপলা আছে। আপনি বাঙালি মানুষ, বিদেশে এত টাকা পেলেন কোথায়?
জানি না এটাতে কী ঘাপলা আছে? চেয়ারম্যান সাহেবও খোলাসা করে বলেননি কিছু। কিন্তু যাদের কোনো ঘাপলা নেই, চেয়ারম্যানের কথা শুনে তারা কি গুটিয়ে যাবেন না? কী দরকার নিজের টাকা নিয়ে এত কথা শোনার বা এত ঝামেলা সাইবার। এখন অনেক বাংলাদেশি বিদেশে অনেক বড় বড় ব্যবসা করেন। যেদিন এনবিআর চেয়ারম্যান এই সব নিয়ে কথা বলছিলেন, তার দুই দিন আগেই প্রথম আলোর একটা শিরোনাম ছিল, ‘বাংলাদেশের রবিন যেভাবে অস্ট্রেলিয়ার ধনকুবের’। জনাব রবিন যদি বাংলাদেশে বড় অঙ্কের একটা টাকা পাঠাতে চান, এই খবর পড়ার পর তার কী প্রতিক্রিয়া হবে?
এনবিআর চেয়ারম্যান বিজ্ঞ মানুষ। আশা করি তিনি কোন বিবেচনা থেকে এই প্রসঙ্গটি তুলেছেন এবং ওই ব্যবসায়ীর নাম প্রকাশ করেছেন তা পরিষ্কার করবেন। ওই তো বাংলাদেশের কোনো একটা ব্যাংকের গ্রাহক। তার প্রাইভেসি রাখার দায়িত্ব এনবিআর-এর। চেয়ারম্যান তা করেননি বলেই জনাব সৈয়দ মোহাম্মদ ফারুকী হাসানকে আজ নিজের পরিচয় দিয়ে বলতে হলো, আমি অনিয়ম করিনি, আমি চুরি করে টাকা আনিনি।পশ্চিমা দেশগুলোতে যারা ব্যাংকিং করেন তারা জানেন, সেখানে ব্যাংকিং খাতে লেনদেনে বড় ছোট অনেক জোচ্চুরি হয়। হারিয়ে যাওয়া ক্রেডিট কার্ডের অপব্যবহার, অবৈধভাবে অন্যের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা, অবৈধ ওয়্যার ট্রান্সফার এই সব লেগেই আছে।
সারা বিশ্বে ২০২৪ সালে ব্যাংকিং জালিয়াতিতে ৪৫ বিলিয়ন ডলার ব্যাংকগুলোকে গচ্চা দিতে হয়েছে। বিদেশে ব্যাংকগুলো গচ্চা যাওয়া টাকাকড়ি নিয়ে খুব উচ্চবাচ্য করে না কখনো, যাতে করে ব্যাংকিংয়ের ওপর গ্রাহকদের বিশ্বাস উঠে যেতে পারে। এই সব নিয়ম অনিয়ম নিয়ে সরকার বা ব্যাংকগুলি চুপি চুপি সামাল দেয়, মুখে রা শব্দও বের করে না। গ্রাহকেরা নিশ্চিন্তে ব্যাংকগুলোতে টাকা পয়সা জমা রাখেন। গ্রাহকেরা বিশ্বাস রাখে ব্যাংকগুলোতে টাকা রাখতে বা লেনদেন করতে তাদেরকে সমস্যা বা ক্ষতি পোহাতে হবে না। এই বিশ্বাসটা জরুরি যে নিজের টাকা নিয়ে কোনো অর্থনৈতিক সংস্থা তাদেরকে হেনস্তা করবে না। অবৈধ যেকোনো ব্যাপার হলে, তা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দেখবে।
আমরা আর একটু খতিয়ে দেখতে পারি, কথিত এই ৭৩০ কোটি টাকা রেমিট্যান্সে কী কী অনিয়ম থাকতে পারে। যে দেশে থেকে তিনি টাকাটা আয় করেছেন বা পাঠিয়েছেন, সে দেশে কি তিনি আয়কর দিয়েছেন। সেটা দেখার দায়িত্ব কি বাংলাদেশের? সুইস ব্যাংকে কত কত দেশের লোক টাকা জমা রাখে নিঃশব্দ ভাবে। সুইজারল্যান্ড কি এই সব খবর রাখে? আরেকটা ব্যাপার হতে পারে তিনি কীভাবে আয় করেছেন টাকাটা? সেটাও কি বাংলাদেশের জানার দরকার?
আরও বড় ব্যাপার হলো টাকাটা কি বাংলাদেশ থেকে বাইরে নেওয়া হয়েছিল আগে, এখন আবার ফিরে আনা হচ্ছে আয়কর ছাড়ের আশ্রয়ে? এ ক্ষেত্রেও টাকা পাচার করে নেওয়াটা বেআইনি, কিন্তু নিয়ে আসাটা বা রেমিট্যান্স করা বেআইনি নয়। দুইটাকে পৃথকভাবে দেখতে হবে।
আরও প্রশ্ন আসবে, যখন বিগত সরকারের আমলে এত এত লোক ব্যাংক লুট করে টাকা বিদেশে নিল, সেই সব টাকা এখন কি বিদেশে থেকে গেলে ভালো হবে নাকি ট্যাক্স ছাড় দিয়ে দেশে আনা দেশের জন্য লাভজনক? আগেই আমি বলেছি এই সব বিষয়ে আমার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা। তাই এই সবের উত্তর খোঁজা আমার জন্য অযথা সময় নষ্ট। অন্য যারা বিশেষজ্ঞ তারা ব্যাপারগুলো খতিয়ে দেখতে পারেন। আমি শুধু বুঝি এই সব ব্যাপারগুলো ব্যাংকের গ্রাহকদের আতঙ্কিত না করেও চুপ চাপ সুরাহা করা যেতে পারে।
আমি এই লেখাটা শেষ করার আগেই প্রথম আলোতে একটা খবর বের হলো-‘৭৩০ কোটি টাকার প্রবাসী আয় নিয়ে যা বললেন প্রতীক গ্রুপের চেয়ারম্যান ফারুকী হাসান।’ প্রতীক গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ফারুকী হাসান বলেছেন, ‘বৈধ আয়ের অর্থই তিনি দেশে এনেছেন। নিয়ম মেনে সেই অর্থ আয়কর নথিতেও দেখিয়েছেন। এ জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর থেকে তিনি প্রত্যয়ন সনদও পেয়েছেন।’
জনাব হাসানের এই অবস্থানকে স্বাগত জানাই। কারণ তিনি নিজেই পত্রিকায় ফোন করে তার অবস্থান জানিয়েছেন এবং স্পষ্ট করে বলেছেন, এই টাকা আমার বৈধ আয়ের টাকা। এতে কোনো ঘাপলা নেই। জনাব হাসানকে আমরা বহবাও দিতে পারি এই কারণে যে, টাকাটা যে তিনি দেশে নিয়ে এসেছেন। তিনি বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারতেন, ম্যানহাটন-প্যারিসে বাড়ি কিনতে পারতেন। তিনি দেশে নিয়ে আসছেন এই বৈদেশিক মুদ্রা, এই দুর্দিনে দেশের বড় উপকার হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বিজ্ঞ মানুষ। আশা করি তিনি কোন বিবেচনা থেকে এই প্রসঙ্গটি তুলেছেন এবং ওই ব্যবসায়ীর নাম প্রকাশ করেছেন তা পরিষ্কার করবেন। ওই তো বাংলাদেশের কোনো একটা ব্যাংকের গ্রাহক। তার প্রাইভেসি রাখার দায়িত্ব এনবিআর-এর। চেয়ারম্যান তা করেননি বলেই জনাব সৈয়দ মোহাম্মদ ফারুকী হাসানকে আজ নিজের পরিচয় দিয়ে বলতে হলো, আমি অনিয়ম করিনি, আমি চুরি করে টাকা আনিনি।
উন্নত বিশ্বে এমন কিছু ঘটলে ব্যবসায়ীর নাম প্রকাশ করার কারণে বড় অঙ্কের দাবি করে কোর্টে চরিত্রহানির মামলা হয়ে যেত। আমরা এখানে শুধু চাইব, এই ঘটনাগুলো যেন আর না ঘটে। ব্যাংকিং এবং রেমিট্যান্সের যেতো নিয়ম অনিয়ম যেন গ্রাহকদের লোক সম্মুখে হেনস্তা না করে আড়ালেই মীমাংসা করা হয়। বড় পরিমাণ হোক বা ছোট হোক, কেউই চায় না তার আর্থিক লেনদেন নিয়ে জনসম্মুখে আলোচনা হোক।
সালেহ উদ্দিন আহমদ কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
[email protected]
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র গ র হক ৭৩০ ক ট কর ছ ন প রব স ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
বাজেটে ব্রোকারেজ হাউসের উৎসে কর কমানোর দাবি ডিবিএর
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ব্রোকারেজ হাউসগুলোর উৎসে করহার কমানোর দাবি জানিয়েছে ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে এ উৎসে কর কর্তনের হার বিদ্যমান ০.০৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০২০ শতাংশ করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে ডিবিএর পক্ষ থেকে এই সুপারিশ তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমরা উৎসে করকে আরো সহজীকরণ করার জন্য বলছি। আমরা উৎসে করের পরিবর্তন চাচ্ছি। করের হার আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যহারে বেশি। পার্শ্ববর্তী দেশগুলো যেমন, ভারত, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, হংকং-এর তুলনায় আমাদের দেশে সিকিউরিটিজ লেনদেনের উপর উৎসে করের হার অনেক বেশি। বর্তমানে বাজারে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় ব্রোকারেজ হাউজগুলোর আয়ও আশংকাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে এবং আয় না হলেও আয়কর দিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় এই কর হার কমানো সুপারিশ করছি আমরা।
তিনি আরো বলেন, ১ লাখ টাকায় আমাদের উৎসে কর দিতে হয় ৫০ টাকা। যেখানে ভারতে প্রতি এক লাখে উৎসে কর দিতে হয় ১০ রুপি। এ ছাড়া পাকিস্তানে ০.৬৫ রুপি, সিঙ্গাপুরে ০.৭৫ ডলার এবং হংক এ ৫.৬৫ ডলার দিচ্ছে।
ডিবিএ সভাপতি বলেন, সিকিউরিটিজ লেনদেনের উপর কমিশন ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান আয়ের উৎস। অত্যাধিক হারে কর আরোপ করার ফলে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর পক্ষে টিকে থাকা এবং পুঁজিবাজারে অবদান রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। কাজেই ব্রোকারেজ হাউজের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং পুঁজিবাজারকে সক্রিয় করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সিকিউরিটিজ লেনদেনের উপর বিদ্যমান কর হার যৌক্তিক কারণে হ্রাস করা একান্ত প্রয়োজন।
তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী করদাতাদের মূলধনী ক্ষতির সমন্বয় বা জের পরবর্তী বছরগুলোতে টানার অনুমতি নেই। লোকসানের সমন্বয় ও জের টানার অনুমতি না থাকার ফলে উভয় শ্রেণির বিনিয়োগকারী ক্ষতির মুখে পড়ে এবং বিনিয়োগে নিরুৎসায়ী হয়ে বাজার ত্যাগ করে। গত কয়েকবছর ধরে বাজারে মন্দা বিরাজ করায় অধিকাংশ বিনিয়োগকারী লোকসানের কবলে পড়ে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে রয়েছে। এরূপ পরিস্থিতিতে লোকসানে থাকা বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ধরে রাখতে এবং বাজারের স্থিতিশীলতা ও ধারাবাহিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে বিদ্যমান আয়কর আইন ২০২৩ এর নবম অধ্যায়, ধারা ৭০ এর (৩) এর সাথে বর্ধিত বিধান সংযোজনের সুপারিশ করছি।
সাইফুল ইসলাম বলেন, কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত, হ্রাসকৃত করহার বা ন্যূনতম কর প্রযোজ্য হয় এইরূপ কোন উৎসের বা খাতের ক্ষতির সমন্বয় বা জের টানা যাবে না। তবে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোন সিকিউরিটিজ অথবা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত মিউচুয়াল ফান্ড বা তহবিলের ইউনিট লেনদেনের মাধ্যমে মূলধনী ক্ষতির সমন্বয় বা জের টানা যাইবে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, সরকার আমাদের সুপারিশ সুবিবেচনায় নিয়ে আসন্ন বাজেটে এর বাস্তবায়ন করে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথ সুগম করবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) জরিমানা ছাড়া আর কোন উন্নতি নাই। সত্যিকার অর্থে বিএসইসিতে কোন কাজ হচ্ছে না। বাজারে বিনিযোগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকারকে দৃষ্টি দিতে হবে। বড় পুঁজির বিনিয়োগ না হলে কখনই পুঁজিবাজার রান করবে না। বিএসইসিতে গত ৮ মাসে কোনো আইপিও পেন্ডিং নাই। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা নাই। এই বাজারে পণ্য সরবরাহ খুবই বাজে।
বিএসইসির টাস্কফোর্স নিয়ে ডিবিএ নেতারা বলেন, যাদের নিয়ে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, তারা বাস্তবে প্রকৃত অর্থে অভিজ্ঞতাহীন। এরা আবার করেছে ফোকাস গ্রুপ। যারা ব্রোকার কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াই মতামত দিয়েছে। অথচ তাদের যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ।
তারা বলেন, সমন্বয়হীন আয়কর দুনিয়ার কোথাও নাই। মুনাফা করলে সরকার আয়কর পাওয়ার অধিকারী। আবার লোকসান করলে আয়কর না দেওয়া ব্যবসায়ীর অধিকার। কিন্তু ১৫ বছর ধরে লোকসান করেও আয়কর দিয়ে আসছে ব্রোকাররা। এটা এক প্রকার জুলুম।
বক্তারা আরো বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেট দৈন্যদশা চলছে। ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারী থেকে ১২ লাখে নেমেছে। সক্রিয় বিও অ্যাকাউন্ট ৫ লাখও নেই। অনেকে বলেন, বাজারে ভলিউম বাড়ে না, ভালো কোম্পানি না থাকলে ভলিউম বাড়বে না। গত ১০ বছরে গ্রোথ কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসে নাই। যে আইপিওগুলো এসেছে সবই দুর্বল কোম্পানির। আজ বাজারে টার্নওভার নাই, ভলিউম নাই, সব জায়গায় রিফর্ম দরকার আছে। তবে সবার আগে বাজারে টার্নওভার লাগবে, ৪০০-৫০০ কোটি টাকা টার্নওভারে বাজার ঘুরপাক খাচ্ছে এটা দিয়ে বাজার চলবে না।
ঢাকা/এনটি/এনএইচ