রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ এবং জুলাই গণহত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে।

শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‌‌‌‌‘‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে বাংলার রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করার জন্য একটি কুচক্রী মহল গভীর ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এটি জুলাই বিপ্লবে শহীদ হওয়া ছাত্রদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার সামিল।’’

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে আরো বলেন, ‘‘নতুন করে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। বাংলার মাটিতে গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রসমাজ গণহত্যাকারী দলটিকে রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসন মেনে নেবে না।’’

মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রংপুর মহানগরের সদস্য সচিব রহমত আলী বলেন, ‘‘আমরা ছাত্রসমাজ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, বাংলার মাটিতে গণহত্যাকারীদের কোনো জায়গা নেই। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে এবং যারা তাদের পুনর্বাসনের ষড়যন্ত্র করছে, তাদের চক্রান্ত রুখতে আমরা রাজপথে আছি, থাকব।’’

এ সময় আরও উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাত্র সমন্বয়ক শামসুর রহমান সুমন, আশিকুর রহমান আশিক, জীবনসহ অন্যান্যরা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা গণহত্যাকারী দল হিসেবে দ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানান। একইসঙ্গে দাবি আদায় না হলে আগামীতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।

আমিরুল//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণহত য

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রীপুরে ২৫ শিক্ষক আসামি, নাম প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন 

গণঅভ্যুত্থানের পর গাজীপুরের শ্রীপুরে ২৫ শিক্ষকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। এসব মামলাকে মিথ্যা দাবি করে সেগুলো থেকে তাদের নাম প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকরা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পল্লী বিদ্যুৎ মোড় এলাকায় মানববন্ধন করেছেন শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির নেতারা।

জানা যায়, কোনো কোনো শিক্ষক রয়েছেন আত্মগোপনে, কেউ আবার বাড়ি ছেড়ে যাপন করছেন ফেরারি জীবন। হত্যা মামলায় আসামি হয়েও এদের মধ্যে কেউ কেউ গ্রেপ্তার আতঙ্ক নিয়েই শ্রেণিকক্ষে পাঠ দান করে চলছেন। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় ১০টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। পল্লী বিদ্যুৎ মোড় এলাকায় গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৯ জনের পরিবার ৯টি মামলা দায়ের করেন। এতে আসামি করা হয়েছে কমপক্ষে ২ হাজার মানুষকে। অন্যদিকে ওই ঘটনায় আব্দুল আলীম শেখ নামে বিজিবি’র এক সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় ১৯ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ সেক্টর সদর দপ্তরের জেসিও নায়েব সুবেদার সোহেল রানা একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আসামি করা হয় অজ্ঞাত হাজার হাজার মানুষকে। 

শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি হাজী ছোট কলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান সজল অভিযোগ করে বলেন, ওই দিন পল্লী বিদ্যুৎ মোড় এলাকায় সংঘর্ষে নিহত পরিবারগুলোর দায়ের করা পৃথক ৪টি মামলায় আসামি করা হয়েছে উপজেলার ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২ শিক্ষক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ জন সহকারী শিক্ষক রয়েছেন। মামলায় আসামি করা শিক্ষকরা ওই ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। মামলাগুলোর বাদীরাও চিনেন না তাদেরকে। নামও জানেন না। তবুও ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে একটি কুচক্রী মহল তাদেরকে মামলায় জড়িয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ।

তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে মানুষ গড়ার এ সব কারিগরদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশকে ব্যাহত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অভ্যুত্থানে এক ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় আসামি করা হয়েছে মাওনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান সিরাজকে। তিনি বলেন, অসুস্থ হয়ে আমি প্রায় ৬ মাস শয্যাশায়ী ছিলাম। অভ্যুত্থানের সময় আমি একা চলতেই পারিনি। অন্যের সহযোগিতা নিয়ে তবুও স্কুলে গিয়ে দাপ্তরিক কাজ অব্যাহত রাখি। ৫ আগস্ট আমার কয়েকজন সহকর্মী আমাকে জোর করে নিয়ে যায় আমার এক ছাত্রীর বাড়িতে। সেখানে সকল শিক্ষকের নিমন্ত্রণ ছিল। ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। অথচ শত্রুতা বশত আমার নামও হত্যা মামলায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার আতঙ্ক নিয়ে আমি এখনও স্কুলে যাই। 

রাজেন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আসকর মাস্টারকেও আসামি করা হয়েছে অন্য একটি হত্যা মামলায়। সমকালকে তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আমার বাড়ি প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে। ৫ আগস্ট আমি সারা দিনই বাড়িতে ছিলাম। ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না। অথচ আমাকে হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। কেউ না কেউ ষড়যন্ত্র করে আমাকে আসামির তালিকায় দিয়েছেন। বাদী আমাকে চিনেন না। নামও জানেন না। 

অন্য একটি মামলার আসামি করা হয়েছে স্যরস এডুকেশন সেন্টারের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলামকে। তিনি বলেন, ‘পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ের ঘটনার সময় আমি এলাকাতেই ছিলাম না। অথচ আমার নাম আসামির তালিকায়। মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে এখন আমি ঘর ছাড়া।

মানববন্ধন শেষে বক্তারা বলেন, একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। মিথ্যা মামলায় আসামি করে ২৫ জন শিক্ষকের সম্মানহানী করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে মামলাগুলো থেকে শিক্ষকদের নাম প্রত্যাহারের দাবি তুলেন শিক্ষক নেতারা। 

সংগঠনের সভাপতি আবদুল হান্নান স্বজলের সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নাজমুলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকবৃন্দ।  

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, মামলাগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে সম্পৃক্ততা না পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া মামলার বাদী যাদেরকে আসামি করে এজাহার জমা দিয়েছেন তারাই আসামি হিসেবে রয়েছেন। এখানে পুলিশের কিছু করার ছিল না। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাঘায় দুর্নীতি-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে জামায়াতের মানববন্ধন, বিএনপির হামলা
  • প্রয়োজনে আবারও জুলাই বিপ্লব হবে, তবুও আ. লীগের পুনর্বাসন মানবো না
  • শ্রীপুরে ২৫ শিক্ষক আসামি, নাম প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন 
  • গণ-অভ্যুত্থানের পর শ্রীপুরে ২৪ শিক্ষকের নামে হত্যা মামলা, প্রত্যাহার চেয়ে মানববন্ধন
  • ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বরিশালে ছাত্রশিবিরের মানববন্ধন
  • নারী নির্যাতন মহামারি আকার ধারণ করেছে
  • গাজায় হামলার প্রতিবাদে ইবি ও কুবিতে বিক্ষোভ
  • নবাবগঞ্জ বিএনপির নিখোঁজ সভাপতির সন্ধান দাবিতে মানববন্ধন
  • নারীর প্রতি সহিংসতা ভয়াবহতায় রুপ নিয়েছে: মহিলা পরিষদ