ঈদ উপলক্ষে ২০০ মেগাপিক্সেলের নতুন স্মার্টফোন আনল শাওমি
Published: 21st, March 2025 GMT
বাংলাদেশে ২০০ মেগাপিক্সেলের এআই ক্যামেরাযুক্ত ‘রেডমি নোট ১৪ প্রো’ মডেলের নতুন স্মার্টফোন এনেছে শাওমি বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত ‘ঈদ উইথ মি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে রেডমি নোট ১৪ প্রোসহ রেডমি এ৫ মডেলের নতুন দুটি স্মার্টফোন উন্মোচন করেন শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বলেন, নতুন ফোন দুটিতে অত্যাধুনিক সব সুবিধা থাকায় এই ঈদে আরও ভালোভাবে নিজেদের আনন্দময় মুহূর্তগুলো ধারণ করতে পারবেন শাওমিপ্রেমীরা। শাওমি সব সময় গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী উচ্চ মানসম্পন্ন ফোন তৈরি করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার উন্নত ক্যামেরাপ্রযুক্তি, ইমার্সিভ ডিসপ্লে ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি-সুবিধার রেডমি নোট ১৪ প্রো ও রেডমি এ৫ মডেলের ফোন দুটি উন্মোচন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন২৫ বছর পর নতুন রূপে এল নকিয়া ৩২১০১২ মার্চ ২০২৫অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ৬ দশমিক ৬৭ ইঞ্চি অ্যামোলেড কার্ভড পর্দার রেডমি নোট ১৪ প্রো মডেলের ফোনটির পেছনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ২০০ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরাসহ সামনে ৩২ মেগাপিক্সেলের শক্তিশালী সেলফি ক্যামেরা রয়েছে। ফলে ফোনটির মাধ্যমে সহজেই কাছে বা দূরের উন্নত রেজল্যুশনের ছবি তোলা যায়।
মিডিয়াটেকের হেলিও জি-১০০ আলট্রা প্রসেসরে চলা ফোনটির পর্দার রিফ্রেশ রেট ১২০ হার্টজ হওয়ায় স্বচ্ছন্দে গেম খেলার পাশাপাশি ভিডিও দেখা যায়। ৫ হাজার ৫০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি-সুবিধার ফোনটিতে ৪৫ ওয়াটের টার্বো চার্জিং প্রযুক্তিও রয়েছে। ফলে দীর্ঘ সময় ব্যবহারের পাশাপাশি দ্রুত চার্জ করা সম্ভব। ফোনটিতে শক্তিশালী কর্নিং গরিলা গ্লাস থাকায় সহজে পর্দায় দাগ পড়ে না। শুধু তা-ই নয়, ভিজলে নষ্ট হয় না, ধুলাও জমে না ফোনটিতে। ৮ গিগাবাইট র্যাম ও ২৫৬ গিগাবাইট ধারণক্ষমতার ফোনটির দাম ধরা হয়েছে ২৯ হাজার ৯৯৯ টাকা।
আরও পড়ুনপাতলা স্মার্টফোন তৈরির দৌড়ে অ্যাপল ও স্যামসাংকে পেছনে ফেলল যে প্রতিষ্ঠান০৬ মার্চ ২০২৫নতুন স্মার্টফোন হাতে জিয়াউদ্দিন চৌধুরী (বাঁয়ে).উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ট ১৪ প র র নত ন
এছাড়াও পড়ুন:
আর্থ-সামাজিক আবেদন ছিল চৈত্র সংক্রান্তি আর পহেলা বৈশাখে
বাংলা নববর্ষ বরণের আর নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে চৈত্র সংক্রান্তি পালিত হতো গ্রাম-বাংলায়। আর্থ-সামাজিক আবেদন আর প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরা ছিল সেই সব দিন। চৈত্র সংক্রান্তির সেসব অনুষ্ঠান এখন অনেকটাই ম্লাণ। প্রাধান্য পেয়েছে পহেলা বৈশাখ। আমরা দেখেছি চৈত্র সংক্রান্তি সামাজিক অনুষ্ঠান হিসেবে সবার কাছে সমাদৃত ছিল আর অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সবার কাছে প্রাধান্য পেত পহেলা বৈশাখ।
বাংলা বর্ষকে বিদায় জানানোর জন্য গ্রাম বাংলায় নানা আয়োজন হতো। গ্রামে মানুষের কাছে অন্যতম আকর্ষণ চড়ক ঘোরানো। জীবন্ত মানুষকে বর্ষিতে গাঁথা হতো। তারপর বাঁশের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঘোরানো হতো। তাকে আবার আগের দিন না খাইয়ে রাখা হতো। সে আবার ওই ঘূর্ণায়মান অবস্থায় একটি কবুতর দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে, সেটাকে নিচে ফেলে দিত। তারপরে পাঠা বলি হতো, কোনো কোনো জায়গায় মহিষ বলি হতো। বিভিন্ন গ্রামীণ মেলা হতো। বিশেষ করে চড়ক উৎসব যেখানে হতো, সেখানে। চৈত্র সংক্রান্তিতে বিশেষ বিশেষ জায়গা পূজাও হতো আবার মেলাও হতো। ওইসব মেলায় গৃহস্থলির জিনিসপত্র পাওয়া যেত। এই চড়ক উৎসবের আয়োজন করতো হিন্দুরা কিন্তু দৃশ্য উপভোগ করতে সবাই। আবার মেলার আয়োজন করতো হিন্দুরা কিন্তু গৃহস্থলির জিনিসপত্র—হাঁড়ি, পাতিল, কুলা, ডালা, সের এসব কেনার জন্য মুসলিমদেরও সরব উপস্থিতি থাকতো মেলায়। এখন যেমন পহেলা বৈশাখে পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ খাওয়া; এই রীতি তখন ছিল না। তখন চৈত্র সংক্রান্তিকেই মূলত একটা পার্বণ হিসেবে সমাদৃত হতো। মেলাকেন্দ্রিক লাঠিখেলা ঘিরে অসংখ্য মানুষের জমায়েত হতো।
বিশেষ আকর্ষণ ছিল শিব-পার্বতী। একজন শিব সাজতো আরেকজন পার্বতী সাজতো। মেলাটার নাম ছিল শিব-গাজনের মেলা। শিব আর গাজনের ভক্ত নন্দি, ভৃঙ্গী, ভূত-প্রেত, দৈত্যদানব; এদেরও আবার প্রতিমূর্তি সাজতো অনেকে। তারপর শিব-পার্বতীর সঙ্গে নেচে চলতো। এরা নেচে নেচে বিভিন্ন বাড়ি বাড়ি যেত। এছাড়াও হতো নীল পূজা, গম্ভীরা পূজা, শিবের গাজন, শাকান্ন।
চৈত্র সংক্রান্তিতে বিশেষ বিশেষ স্থানে শিরনীর আয়োজন হতো। ল্যাটকা খিচুড়ি, আখের গুঁড়ের ক্ষীর রান্না হতো। কলাপাতায় পরিবেশন করা হতো। মাঠে, স্কুলে কিংবা ক্লাবে এই সব আয়োজন হতো। সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়া হতো। চৈত্র সংক্রান্তিতে বৈশাখ বরণের একটা প্রস্তুতিও লক্ষ্য করা যেত। ঘর বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হতো। বাড়ির বউ-ঝিরা কাঁচা ঘর লেপে চকচকে করতো। আবার গ্রাম বা মফস্বলের ছোট বড় দোকানগুলো সাজানো হতো। কারণ পরের দিন হালখাতা। হালখাতা উপলক্ষ্যে বাড়ির পুরুষেরা পণ্য বেচা বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পার করতো। কারণ প্রত্যেকেরই একটা চেষ্টা থাকতো দোকানের বাকি শোধ করার। পুরো টাকা শোধ করতে না পারলেও যতোটা সম্ভব শোধ করতো তারা। হালখাতা উপলক্ষ্যে দোকানগুলোতে নতুন লাল টালিখাতায় দেনা-পাওনার হিসাব লেখা শুরু হতো। পহেলা বৈশাখে দোকানদাররা সাধারণত বাকি বিক্রি করতো না। তারা বলতো, বছরের প্রথম দিনে বাকি দেবেন না। হালখাতা উপলক্ষ্যে বাড়ির ছোট সদস্যরাও আনন্দিত হতো। তারা বড়দের হাত ধরে হালখাতা খেতে যেত। রসগোল্লা, পুরি, জিলাপি পেয়ে খুব খুশি হয়ে বাড়ি ফিরতো। বৈশাখে গ্রাম বাংলার অর্থনীতিতে যোগ হতো নতুন গতি। তবে সবশেষে হালখাতা একটি সামাজিক অনুষ্ঠানও। এই অনুষ্ঠান কেন্দ্র করে মানুষে মানুষে সম্পর্ক আর দৃঢ় হতো। সত্যিকার অর্থেই প্রাণ-প্রাচুর্য ছিল সেই সামাজিক সৌহার্দে।
ঢাকা/লিপি