পটুয়াখালীর মহিপুরে মাফিয়া বেগম (১৬) নামের এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের পাঞ্জুপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তের নাম মেহেদী হাসান (২২)।

নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রায় তিন মাস আগে পারিবারিকভাবে একই গ্রামের মেহেদী হাসানের সঙ্গে মাফিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মেহেদী মাফিয়াকে নির্যাতন করে আসছিল।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মাফিয়ার ছোট বোন মারিয়া বোনের শ্বশুরবাড়ি আসে। এ সময় মেহেদী মাফিয়াকে মারধর করছিল। বিষয়টি দেখেতে পেয়ে মারিয়া বাড়িতে গিয়ে সবাইকে জানায়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে মেহেদী তার শ্বশুরকে ফোন দিয়ে বলে, মাফিয়া গলায় দড়ি দিয়েছে।

দ্রুত মাফিয়ার মা হাফিজা বেগম ও বাবা হারিছ তাদের বাড়িতে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে কুয়াকাটা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। সেখান থেকে কলাপাড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, মাফিয়ার পরিবার এটিকে হত্যাকাণ্ড অভিযোগ করলেও মেহেদীর পরিবারের দাবি, আত্মহত্যা করেছে মাফিয়া।

মহিপুর থানার ওসি (তদন্ত) অনিমেষ বলেন, ‘‘এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি।’’

ঢাকা/ইমরান/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল

মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।

গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।

এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।

মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।

মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়

সম্পর্কিত নিবন্ধ